দিল্লিতে নার্সিং হোমে ঢুকে ডাক্তারকে গুলি করে হত্যা
৩ অক্টোবর ২০২৪ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লির জইতপুরে নিমা হাসপাতালে। আগের রাতে ওই হাসপাতালে এসে এক কিশোর তার পায়ের আঘাতের চিকিৎসা করিয়েছিল। সে ও তার বন্ধু আবার ওই হাসপাতালে গত রাতে আসে। তারা বলে ওই আঘাতের জায়গায় আবার ড্রেসিং করাতে চায়। ড্রেসিং করে দেয়ার পর তারা বলে, চিকিৎসকের সঙ্গে প্রেসক্রিপশন নিয়ে কথা বলবে।
তারা ইউনানি মেডিনিসের চিকিৎসক জাভেদ আখতারের চেম্বারে ঢোকে। কয়েক মিনিটের মধ্যে নার্সিং কর্মী গজালা পারভিন এবং মহম্মদ কামিল গুলির আওয়াজ শুনতে পান। তারা ডাক্তারের কেবিনে ঢুকে দেখেন তার মাথায় গুলি করা হয়েছে। চারপাশ রক্তে ভেসে যাচ্ছে।
হাসপাতালের কর্মীরা জানিয়েছেন, দুই কিশোরের বয়স ১৬-১৭ বছরের মতো। পুলিশ জানিয়েছে, তারা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। সেখান থেকে দুই কিশোরের পরিচয় পাওয়ার চেষ্টা করছে। আগের রাতে দুই কিশোর এসে একবার সবকিছু দেখে গিয়ে খুনের পরিকল্পনা করেছিল বলেই পুলিশ মনে করছে।
আরজি করের দুই মাসের মধ্যে
কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার দুই মাসের মধ্যে দিল্লিতে এইভাবে চিকিৎসক খুন হলেন। আবার ডাক্তারদের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এলো।
আরজি করের ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্ট নিজে থেকে মামলা হাতে নেয় এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা যাবে, তা নিয়ে সুপারিশ করার জন্য টাস্ক ফোর্স গঠন করে। তারা রিপোর্ট দেয়ার আগেই দিল্লিতে ডাক্তারকে খুন করা হলো। পশ্চিমবঙ্গেও অন্তত দুইটি হাসপাতালে চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে।
বোঝা যাচ্ছে, শুধু কলকাতা নয়, রাজধানী দিল্লিতেও চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়েছে।
চিকিৎসক সংগঠনের প্রশ্ন
দিল্লিরফেডারেশন অফ রেসিডেন্টস ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন প্রশ্ন তুলেছে, কেন ডাক্তাররাই হাসপাতালে সবচেয়ে সহজ টার্গেট হবেন?
সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ''সম্ভবত আগে থেকে পরিকল্পনা করে এই হত্যা করা হয়েছে। কোনোরকম উসকানি ছাড়াই এই হত্যা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা ভারতের রাজধানী শহরে ডাক্তারদের কাজের জায়গায় কী হচ্ছে, তা দেখিয়ে দিচ্ছে। এটা কি দিল্লির আইন ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতির পরিচায়ক নয়? কেন হাসপাতালে ডাক্তাররা সহজ টার্গেট হবেন? কে জবাব দেবে?'' দিল্লির এলজি, চিফ মেডিক্যাল অফিসার, মুখ্যমন্ত্রী আতিশি, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল সবাইকেই ট্যাগ করেছে ডাক্তারদের এই সংগঠন।
দিল্লিতে পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং ও আইন-শৃঙ্খলার পুরো দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের।
দিল্লি সরকারের মন্ত্রী ও আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজও সামাজিক মাধ্যমে বলেছেন, ''দিল্লি অপরাধেরও রাজধানীতে পরিণত হয়েছে। গ্যাংস্টাররা অবাধে ঘুরছে, টাকা আদায় করছে, গুলি চালাচ্ছে এবং রোজ কাউকে না কাউকে হত্যা করা হচ্ছে। দিল্লির জন্য ন্যূনতম কাজটাও এলজি করতে পারছেন না।''
জিএইচ/এসিবি(পিটিআই, এএনআই)