দাবানলের গ্রাসে তুরস্কের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, গ্রিসও সংকটে
৫ আগস্ট ২০২১দক্ষিণ-পশ্চিম তুরস্কের মিলাসের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র দাবানলের গ্রাসে। কর্মীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাইড্রোজেন কুলিং ট্যাঙ্ক আগেই খালি করে দেয়া হয়েছিল। সংবাদসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিতর আগুন ঢুকে পড়ায় দমকল, পুলিশ ও অন্য সরকারি কর্মীরা পালিয়েছেন।
শহরের মেয়র তোকাট জানিয়েছেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিতরে আগুন লেগে গেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান যখন টেলিভিশনে ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখনই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র খালি করে দেয়া হয়। এর্দোয়ান তখন বলেন, ''তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুড়ে যেতে পারে। প্রবল হাওয়া বইছে। না হলে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যেত।''
এর্দোয়ানের বক্তব্য
এর্দোয়ান বলেছেন, ''দাবানল নিয়ে রাজনীতি করার কোনো অবকাশ নেই। করোনার মতোই বিশ্বজুড়ে দাবানল হচ্ছে।''
তবে বিরোধীরা এর্দোয়ানের প্রবল সমালোচনা করছেন। তারা বলছেন, প্রথম থেকে এর্দোয়ান দাবানলকে কোনো দুরুত্ব দেননি। তাই এখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেছে। বিদেশি সাহায্য নেয়ার ক্ষেত্রেও তিনি তৎপরতা দেখাননি। গত সপ্তাহে সরকার জানায়, তাদের কাছে দাবানলের মোকাবিলা করার মতো যথেষ্ট সংখ্যক প্লেন ও হেলিকপ্টার নেই। এরপর ইইউ দুইটি প্লেন ও একটি হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে। কিন্তু এর্দোয়ান গ্রিস ও ইসরায়েলের কাছ থেকে কোনো সাহায্য নিতে চাননি।
মঙ্গলবারই জানিয়ে দেয়া হয়েছে, দাবানলের সরাসরি সম্প্রচার ও মানুষের পালানোর দৃশ্য টিভি-তে দেখানো যাবে না।
গ্রিসের অবস্থা
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের পাশেই এসে পড়েছে দাবানল। কয়েক হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এথেন্স ভরে গিয়েছিল ধোঁয়ায়। বুধবারও শহরে ধোঁয়া ছিল। যাদের শ্বাসকষ্ট আছে, তাদের বাড়ির ভিতর থাকতে বলা হয়েছে। শহরে বায়ুদূষণের মাত্রা মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে।
সারারাত ধরে আগুন নেভানোর কাজ করে গেছেন প্রশিক্ষিত কর্মীরা। আগুনে ৯০টি বাড়ি, ২৭টি বাণিজ্যিক সংস্থা, এবং ৮০টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিটিজেনস প্রোটেকশন মন্ত্রী জানিয়েছেন, কেউ গুরুতর কোনো আঘাত পাননি।
কিন্তু শহরের প্রান্তে থাকা আবাসিক এলাকায় আগুন লেগে যাওয়ায় চাঞ্চল্য দেখা দেয়। তারপরই সেখান থেকে মানুষদের সরিয়ে নেয়া হয়। অনেকে গাড়ি নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে চলে যান। এমনই একজন সাংবাদিকদের বলেন, নারকীয় পরিস্থিতি।
গ্রিসজুড়ে একশর বেশি দাবানল জ্বলছে। তাপমাত্রা প্রচণ্ড বেড়ে গেছে। প্রবল হাওয়া দিচ্ছে। এথেন্স থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরের দ্বীপও আগুনের গ্রাসে। সেখানে অন্তত ১৫০টি বাড়ি পুড়ে গেছে। বুধবার সারা দেশ জুড়ে দাবানল সম্পর্কিত সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ইটালিতেও দাবানল
ইটালির তাপমাত্রাও বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে সেখানেও দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানকার অবস্থা তুরস্ক ও গ্রিসের মতো অতটা ভয়ংকর না হলেও প্রচুর সংখ্যায় দাবানল জ্বলছে।
ইসরায়েলের জঙ্গলেও দাবানল জ্বলছে। বিমান ব্যবহার করে দাবানল নেভানোর কাজ চলছে।
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)