দানিশকে পিটিয়ে মেরেছে তালেবান
৩০ জুলাই ২০২১ক্রসফায়ারে মৃত্যু হয়নি পুলিৎজার জয়ী সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকির। তালেবান তাকে আটক করে পিটিয়ে মেরেছে। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ করেছে অ্যামেরিকার একটি পত্রিকা। লেখকের দাবি, ভারত সরকারের সূত্রের কাছ থেকে দানিশের মৃতদেহের একাধিক ছবি পেয়েছেন তিনি। যেখানে দেখা যাচ্ছে, দানিশের মাথায় অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন আছে। তার গোটা শরীর বুলেট দিয়ে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছে।
পুলিৎজার জয়ী ভারতীয় সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি আফগানিস্তান গিয়েছিলেন আফগান ফৌজের সঙ্গে তালেবানের লড়াইয়ের ছবি তুলতে। রয়টার্সের প্রধান ফোটোগ্রাফার দানিশ এর আগেও একাধিকবার আফগানিস্তান গেছেন। তালেবানের ছবি তুলেছেন। আফগান বাহিনী যখন খবর পায় যে, তালেবান বাহিনী কান্দাহারে পাকিস্তান সীমানা দখল করে নিয়েছে, তখন আফগান ফৌজের কনভয়ে দানিশ উঠে পড়েন। তাদের সঙ্গেই সীমান্তের কাছে পৌঁছে যান তিনি।
মার্কিন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সীমান্ত থেকে কয়েকশ মিটার দূরে আফগান বাহিনীর উপর প্রথম আক্রমণ চালায় তালেবান। আফগান বাহিনীর কনভয় দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। আফগান কম্যান্ডারের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান দানিশ। তিনজন আফগান সেনার সঙ্গে তিনি অন্য দিকে ছিটকে যান। তার শরীরে স্প্লিনটারের আঘাত লাগে। সেনা জওয়ানরা তাকে স্থানীয় একটি মসজিদে নিয়ে যান। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
দানিশ এবং আফগান ফৌজের তিন সেনা যে মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন, সে খবর পৌঁছে যায় তালেবানের কাছ। তালেবানের একটি দল মসজিদ আক্রমণ করে। ভিতরে ঢুকে তারা দানিশকে আটক করে। তার পরিচয় জানতে পারে। এরপর তাকে নিয়ে চলে যাওয়া হয়। রিপোর্টের দাবি, দানিশের মৃত্যুর পর যে ছবি পাওয়া গেছে, তাতে স্পষ্ট, হত্যা করার আগে তার মাথার কাছে একাধিক আঘাত করা হয়েছে। তারপর বুলেট দিয়ে তাকে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছে। কোল্যাটারাল মৃত্যুতে এ ধরনের আঘাত থাকতে পারে না।
দানিশের মৃত্যু নিয়ে অবশ্য ভারত এখনো সরকারি ভাবে কোনো তথ্য দেয়নি। তবে একটি ভারতীয় মিডিয়াও গত সপ্তাহে দানিশের মৃত্যু নিয়ে একই দাবি করেছিল।
মৃত্যুর পরে আফগান সরকারের সহায়তায় দানিশের মৃতদেহ দিল্লিতে উড়িয়ে আনা হয়েছিল। রাজধানীর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ায় তাকে কবর দেওয়া হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলি দাবি তুলেছে, দানিশের মৃত্যুর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যে ভাবে তাকে মারা হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক যুদ্ধ আইনের বিরোধী। কোনো সাংবাদিককে এভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে হত্যা করা যায় না।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)