1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘তারা চাইলে হলগুলোর ভাড়া সম্পূর্ণ ফ্রি করে দেবো’

২ অক্টোবর ২০২০

সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সীমিত পরিসরে শুরু হলেও থাকছে শঙ্কা৷ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে ছড়িয়ে পড়তে পারে সংক্রমণ৷ সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলে সংস্কৃতি কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ৷

https://p.dw.com/p/3jLK4
ছবি: Privat

ডয়চে ভেলে : করোনার কারণে তো সবকিছু বন্ধ ছিল৷ এখন কি সাংস্কৃতিক অঙ্গন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে?

কে এম খালিদ : দেখুন এই মহামারি তো শেষ হয়নি এখনো৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা দেশের স্বাস্থ্য বিভাগও বলছে, দ্বিতীয় ওয়েব শুরু হতে যাচ্ছে৷ এই অবস্থায় এখন ফেরা কঠিন৷ তারপরও দেশে যেহেতু সকল কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে, তাই আমরাও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছি৷ তবে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে যতটুকু করা যায়৷

সিনেমা হল খোলার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে?

সিনেমা হলগুলো খোলার সিদ্ধান্ত তো আমরা নেই না৷ তথ্য মন্ত্রণালয় নেয়৷ তারপরও আমরা যতটুকু জেনেছি তারা খোলার সিদ্ধান্ত দিয়েছে৷ তবে দিন-তারিখ আমি জানি না৷

সাংস্কৃতিক অঙ্গনের স্বাভাবিকতা ফেরাতে সরকার কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?

দেখুন, কোভিড নিয়ন্ত্রণে যদি ভ্যাকসিন বের না হয়, তাহলে তো স্বাভাবিক হওয়া খুব কঠিন৷ কারণ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড মানেই জনসমাগম৷ আর জনসমাগম মানেই কোভিডকে আমন্ত্রণ করা৷ ফলে ভ্যাকসিন বের না হওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করা আসলেই কষ্টসাধ্য৷

সিনেমা হল খুললেও নতুন সিনেমা কি এই সময়ে তৈরি হয়েছে?

কোভিডের মধ্যে কোনো নতুন সিনেমা হয়নি৷ তবে দেখেছি, কিছু সিনেমার শ্যুটিং শুরু হয়েছে৷

‘প্রায় ১২ হাজার শিল্পীকে আর্থিক অনুদান দিয়েছি’

সিনেমা হলে দর্শকদের জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে?

সবকিছুই স্বাস্থ্যবিধি মেনে করা হবে৷ এর বাইরে তো সুযোগ নেই৷ আর যেহেতু বন্ধ ঘরে ছবি দেখতে হবে, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করতে হবে এখানে তো আরো কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে৷

মঞ্চ নাটকগুলো কি আবার শুরু হয়েছে?

হ্যাঁ, মঞ্চ নাটকও শুরু হয়েছে৷

করোনার সময় নাটক-সিনেমা বন্ধ থাকলেও অনেকেই ফান ভিডিও তৈরিতে ব্যস্ত ছিলেন৷ এসব কি সুস্থ্ বিনোদনের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে?

এই সময়টাতে তো সবাই ঘরে ছিলেন৷ আসলে সুস্থ বিনোদন তো সব সময়ই সুস্থ৷ আর যদি সেটা সুস্থ না হয়, তাহলে সেটা তো আমাদের সবার জন্য বেদনাদায়ক৷

এখন নতুন করে ওয়েব সিরিজ আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে৷ এটা নিয়ে সরকারের ভাবনা কী?

আপনি তো জানেন, কিছু ওয়েব সিরিজ নিয়ে ভীষণভাবে আপত্তি উঠেছে৷ এই ধরনের অশ্লীল দৃশ্য সম্বলিত ওয়েব সিরিজগুলোর আমরা সবসময় নিন্দা জানাই৷ শুনেছি কিছু কিছু নির্মাতা তাদের কাজগুলো সরিয়ে নিয়েছে৷

নতুন যেগুলো হচ্ছে, সেগুলোর ব্যাপারে আপনাদের কোনো নির্দেশনা আছে?

এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ ও চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি আমরা৷ এগুলো নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি৷

এখন অনেক জনপ্রিয় অভিনেতাকেও ছোট্ট একটি ক্লিপ তৈরি করে সামাজিক মাধ্যমে ছাড়তে দেখা যাচ্ছে...

(করোনার সময়ে) এর বাইরে তো কোনো সুযোগ ছিল না৷ আমরাও তো ঘরে বসে জুমে মিটিং করেছি৷ ওয়েবিনার করেছি৷ ছোট ছোট সভা করেছি৷ এমনকি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও করেছি৷ সবকিছুই তো আমরাও ভার্চুয়ালি করেছি৷ এর বাইরে তো কিছু করার সুযোগ ছিল না৷

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থকেই মূল উপার্জন মনে করছেন তারা৷ এতে কি মূলধারার বিনোদন ক্ষতিগ্রস্থ হবে?

ইতিমধ্যেই তো ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেছে৷ হয়তো সময় লাগবে৷ কিন্তু কোভিড-উত্তর সবকিছু আমরা আগের ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবো বলেই আশা করছি৷

করোনার মধ্যে অনেক শিল্পী অসহায় অবস্থায় পড়েছেন৷ সরকার কি তাদের কোনো আর্থিক সহযোগিতা করেছে?

আমরা সারা বাংলাদেশের প্রায় ১২ হাজার শিল্পীকে আর্থিক অনুদান দিয়েছি৷ পরিমাণ হয়তো খুব বেশি নয়, কিন্তু অর্থের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এটাকে তাদের এক ধরনের স্বীকৃতি বলেই আমি মনে করি৷

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কী ধরনের সুবিধা দিয়েছেন?

সংগঠনগুলো যেন কার্যক্রম চালাতে পারে, সে কারণে আমরা তারা যে হলে কাজ করে, সেই হলগুলোর ভাড়া অর্ধেক তো করবোই৷ তারা চাইলে সম্পূর্ণ ফ্রি-ও করে দেবো, যাতে তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারেন৷

অনেক সিনেমা হলেও আমরা দেখেছি, করোনার সময় কর্মচারীদের বেতন হয়নি৷ তাদের জন্য কি আপনারা কিছু করেছেন?

এটা আসলে তথ্য মন্ত্রণালয়ই বলতে পারবে, তারা কোনো সহযোগিতা করেছে কিনা৷

সাংস্কৃতিক অঙ্গনের যে প্রাতিষ্ঠানিক জায়গা আছে, সেখানে কতটুকু সহযোগিতা করেছেন?

আমাদের যে শিল্পকলা একাডেমি আছে, সেখানে আমরা কাজ করা শুরু করবো৷ পাশাপাশি প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর আমরা খুলে দিয়েছি, জাদুঘর খুলে দিয়েছি, যদিও সীমিত আকারে খুলেছি৷ এগুলোতে দর্শনার্থী যেতে পারবেন, কিন্তু সীমিত আকারে৷ 

মানসম্মত নাটক বা সিনেমা তৈরিতে সরকারি কোনো পদক্ষেপ আছে?

আপনারা তো জানেন, সেই কাজটা আমরা সবসময়ই করি৷ সিনেমার কথা আমি বলতে পারবো না৷ এটা তথ্য মন্ত্রণালয় বলতে পারবে৷ তারপরও আমি জানি, তারা সিনেমায় অনেক ভর্তুকি দিয়ে থাকে৷ অনেক সময় পুরো সিনেমার খরচও সরকার অনুদান হিসেবে দিয়ে থাকে৷

ভালো নাটক তৈরিতে আপনাদের ভূমিকা কী?

টিভি নাটক আমার সঙ্গে সম্পৃক্ত না৷ মঞ্চ নাটকের কথা আমি বলতে পারি৷ আমি তাদের ভর্তুকি দিচ্ছি এবং আরো ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷

মঞ্চ নাটকের শিল্পীরা কি আপনাদের কাছে কোনো দাবি জানিয়েছেন?  

না, তেমন কোনো দাবি করেনি৷ তাদের দাবি একটাই, ‘‘আমরা শুরু করতে চাই৷’’ সে কারণেই তো আমরা সীমিত আকারে খুলে দিয়েছি সবকিছু৷

স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা সেটা আপনারা কিভাবে মনিটরিং করছেন?

এটা যখন অনুমতি দেওয়া হয় তখন আমরা বলে দেই৷ এবং যেখানে অনুষ্ঠান হয় সেখানে কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়৷ যেখানে হল আছে, সেখানেই তো আমাদের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে৷ তারা কিন্তু এগুলো দেখেন৷ দর্শকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসছেন৷ এমনকি যেসব শিল্পী অংশ নিচ্ছেন তারাও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন৷

ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি সমীর কুমার দে৷
সমীর কুমার দে ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি৷
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য