তত্ত্বাবধায়কের দাবি জোরদার করবে বিএনপি
৮ জুলাই ২০১৩দেশের চার সিটি কর্পোরেশন রাজশাহী, সিলেট, খুলনা এবং বরিশালে পরাজিত হওয়ার পর শাসক দল গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে তাদের ‘ইমেজ' পুনরুদ্ধারের ‘মিশন' হিসেবে নিয়েছিল৷ কারণ সেখানে ভোটার সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি, যা আগের চার সিটি কর্পোরেশনের সমান৷ তাই তারা সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল৷
একেতো গাজীপুরকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তারপর ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের পাঁচটি আসনেই বিজয়ী হয়েছিল আওয়ামী লীগ৷ নবগঠিত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার সাবেক দুটি পৌরসভা এবং ছয়টি ইউনিয়নও আওয়ামী লীগেরে দখলে দীর্ঘদিন ধরে৷ আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান এর আগে ১৭ বছর ধরে পৌর চেয়ারম্যান ছিলেন৷ এই নির্বাচনে জিততে ৫৭টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের ৫৭ জন সংসদ সদস্য সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করেছেন৷ বসিয়ে দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে৷ আর শেষ পর্যন্ত এরশাদের সমর্থনও নেয়া হয়েছে৷
কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হয়নি৷ আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান বিএনপির প্রার্থী এম এ মান্নানের কাছে এক লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন৷ যোগাযোগমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেন, এই ফলাফলে এটা অবশ্যই প্রমাণিত হয় যে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দূরত্ব বেড়েছে৷ তাই এই পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধান করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে আনবে আওয়ামী লীগ৷ কারণ এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের আত্মশুদ্ধির প্রয়োজন আছে৷
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমন্বয়কারী আফম মোজাম্মেল হক এমপি ডয়চে ভেলেকে বলেন, তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ছিল৷ হেফাজতে ইসলামসহ নানা বিষয় নিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছে ৷ যার জবাব তারা ঠিকমতো দিতে পারেননি৷ অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা অবহেলিত৷ তাই সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছে৷ যার ফলাফল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পরাজয়৷
ওদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, চারটি সিটির পর গাজীপুরেও শাসক দলের হার প্রমাণ করে দেশের মানুষ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে৷ সরকারকে তারা ‘না' বলে দিয়েছে৷ ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হলেও সরকারের চরম ভরাডুবি হবে৷ তাই তাদের এখন স্বেচ্ছায় চলে গিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেয়া উচিত৷ দেশের মানুষ এটাই চায়৷ সরকার তা না মানলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই দাবি আদায় করা হবে৷
এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সমর্থন দেয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী অপেক্ষাকৃত কম ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন৷ এরশাদ সমর্থন না দিলে এই ব্যবধান আরো বেশি হতো৷