ট্রাম্পকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইউরোপের জয়গান
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়ন তথা ন্যাটোর বিরুদ্ধে ক্ষমতাকালের শুরু থেকেই তোপ দেগে চলেছেন৷ ফলে অ্যামেরিকার সঙ্গে এই দুই রাষ্ট্রজোটের সম্পর্ক ধীরে ধীরে শীতল হয়ে পড়ছে৷ এবার একের পর একমার্কিন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মৈত্রী ও বন্ধুত্বের বার্তা নিয়ে ইউরোপে আসছেন৷ গত সপ্তাহান্তে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আশার আলো দেখিয়ে বলেছিলেন, ট্রাম্প-পরবর্তী যুগে দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠবে৷
এবার মার্কিন সংসদের নিম্ন কক্ষের স্পিকার ও ডেমোক্র্যাটিক দলের নেতা ন্যান্সি পেলোসি-র মুখেও একই সুর শোনা গেল৷ মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনিও ট্রান্স-অ্যাটলান্টিক কৌশলগত সম্পর্কের পক্ষে সওয়াল করেন৷ তারপর উভয় দলের সংসদ সদস্যদের এক প্রতিনিধিদল নিয়ে ব্রাসেলস সফরে এসে পেলোসি অ্যাটলান্টিকের দুই প্রান্তের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী সুসম্পর্কের প্রতি সমর্থন জানালেন৷ তাঁর মতে, ট্রাম্পের সমালোচনা সত্ত্বেও অ্যামেরিকা ইউরোপের সঙ্গে সুসম্পর্কে বিশ্বাস করে৷ সোমবার ও মঙ্গলবার উচ্চ পর্যায়ের এই প্রতিনিধিদল ইইউ ও ন্যাটো সদর দফতর পরিদর্শন করেন৷ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে পেলোসি দুই পক্ষের মধ্যে সুসম্পর্কের বার্তা দেন৷ তিনি বলেন, বিশেষ করে বর্তমান সংকটপূ্র্ণ সময়ে এই সহযোগিতার গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে৷
উল্লেখ্য, গত নভেম্বর মাসে কংগ্রেসের নির্বাচনের পর বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দল হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে৷ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি-র নেতৃত্বে পদে পদে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংঘাত দেখা যাচ্ছে৷ মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর তৈরির মতো বিতর্কিত উদ্যোগকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্রশাসন ও সংসদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইও প্রকট হয়ে উঠছে৷ বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দলের উদ্যোগে সম্প্রতি মার্কিন সংসদে ন্যাটোর প্রতি সমর্থন জানিয়ে একটি আইনও অনুমোদন করা হয়েছে৷ রিপাবলিকান দলের বেশিরভাগ সদস্যের সমর্থন পাওয়ায় এই প্রস্তাবের পক্ষে ৩৫৭ ভোট, বিপক্ষে মাত্র ২২ ভোট পড়ে৷ ফলে ট্রাম্প প্রশাসনকে কোণঠাসা করে সংসদ গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রেও প্রতীকী ক্ষমতা দেখাচ্ছে৷ ট্রাম্প-এর ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট' নীতিকে উপেক্ষা করে সংসদ সদস্যরা আবার সহযোগীদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক চাইছেন৷
মার্কিন সংসদের পক্ষ থেকে এমন উদ্যোগ ও প্রতিনিধিদলের সফর সম্পর্কে ব্রাসেলসে অত্যন্ত ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে৷ ইইউ-র পররাষ্ট্র নীতির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেডেরিকা মোগেরিনি ও ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার মার্কিন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন৷ তাঁদের মতে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বহুপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক আইনভিত্তিক কাঠামো অত্যন্ত জরুরি৷
এসবি/জেডএইচ (এএফপি, ডিপিএ)