টুজি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারিতে চিদাম্বরমের বিতর্কিত ভূমিকা
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১টু-জি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারিতে এবার যুক্ত হলো নতুন মুখ৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা সাবেক অর্থমন্ত্রী পি.চিদাম্বরম৷ যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৮ সালে তিনি অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন টু-জি স্পেকট্রাম নীলাম না করে সস্তা দামে বন্টন করা হয়৷ তৎকালীন অর্থমন্ত্রী চিদাম্বরম তাতে আপত্তি করেননি৷ করলে ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা সরকারের লোকসান হতো না৷
এখন প্রশ্ন - চিদাম্বরমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ এতোদিন পর উঠলো কেন? আসলে এই অভিযোগ ওঠে অর্থমন্ত্রণালয়ের একটি বিতর্কিত চিঠি প্রকাশিত হবার পর৷ আর চিঠিটি লেখা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীকে৷ তাতে বলা হয়, ২০০৮ সালে টু-জি স্পেকট্রাম বন্টনের দাম ২০০১ সালের দামে দিতে চিদাম্বরম আপত্তি করেননি৷ তিনি ইচ্ছা করলে স্পেকট্রাম বন্টন নিয়ে অনিয়ম রুখতে পারতেন৷ তথ্য জানার অধিকার আইনে সেই চিঠি হাতে আসে জনতা পার্টির সভাপতি সুব্রামনিয়াম স্বামীর৷ তিনি সেটি সুপ্রীম কোর্টে পেশ করে চিদাম্বরমের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো সিবিআই তদন্তের আর্জি জানান৷
এই নিয়ে শুরু হয় প্রণব মুখোপাধ্যায় বনাম চিদাম্বরম দ্বৈরথ৷ কংগ্রেস জোট সরকারে দেখা দেয় বিভাজন৷ বিরোধী বিজেপি ও অন্য বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রীর ওপর চিদাম্বরমের ইস্তফার দাবিতে চাপ সৃষ্টি কোরে চলেছে৷ শরিক দল ডিএমকে'ও চিদাম্বরমের ইস্তফার পক্ষে৷ কারণ ডিএমক'এর দুই মন্ত্রী এ.রাজা এবং দয়ানিধি মারানকে ইস্তফা দিতে হয় একই কারণে৷ তাহলে একযাত্রায় পৃথক ফল কেন? এই অবস্থায় চিদাম্বরমের রাজনৈতিক ভাগ্য অনিশ্চিত৷ সবাই তাই তাকিয়ে আছে সুপ্রীম কোর্টের রায়ের দিকে৷ যার শুনানি চলছে৷ শীর্ষ আদালতের রায যদি সরকারের বিরুদ্ধে যায় এবং চিদাম্বরম ইস্তফা দেন, তাহলে বলা বাহুল্য নানা কেলেঙ্কারিতে জেরবার মনমোহন সিং সরকারের সঙ্কট গভীরতর হবে৷
পাশাপাশি সরকার ও কংগ্রেসের মধ্যে সঙ্কট এড়ানোর কৌশল নির্ধারণে কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে৷ গতকাল কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং চিদাম্বরম৷ প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং আজ ফিরেছেন আমেরিকা থেকে৷ তাঁর উপস্থিতিতেই স্থির হবে দল ও সরকারের কর্মকৌশল৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ