টিসিবির কার্ড না পাওয়ায় ক্ষোভ
২০ মার্চ ২০২২কয়েকটি এলাকায় অভিযোগ পাওয়া গেছে যে টিসিবির কার্ড কীভাবে পাওয়া যায় তারা তা জানেন না৷
দেশের বিভিন্ন এলকায় টিসিবির পণ্য বিক্রয়কেন্দ্রে কার্ড নেই এমন মানুষও ভিড় করেছেন৷ কিন্তু কার্ড না থাকায় তারা পণ্য না নিয়ে ফেরত গেছেন, যদিও সরকারের নীতিমালায় বলা হয়েছে কার্ডধারীদের দেয়ার পর যদি পণ্য থাকে তাহলে যাদের কার্ড নেই তারাও পাবেন৷
কার্ড না পাওয়া এবং কার্ড না থাকায় পণ্য না পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে৷ ভুক্তভোগীরা জানান, তারা চেষ্টা করেও কার্ড জোগাড় করতে পারেননি৷ আর কার্ড কারা দেয় তারা তাও জানেন না৷ তারপরও লাইনে দাঁড়িয়েছেন৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা পণ্য না পেয়ে খালি হতে ফিরে গেছেন৷
এবার টিসিবির মাধ্যমে একটি পরিবারকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত দুইবার করে দুই লিটার সয়াবিন তেল, চিনি ও মসুর ডাল দুই কেজি এবং পেঁয়াজ সর্বনিম্ন দুই কেজি কেনার সুযোগ দেয়া হচ্ছে৷ তাদের কাছে সয়াবিন তেল ১১০ টাকা লিটার, মসুর ডাল প্রতি কেজি ৬৫ টাকা, চিনি ৫৫ টাকা, পেঁয়াজ কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে, যা বাজার দরের চেয়ে কম৷ বিশেষ করে সয়াবিন তেল এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৬৮ টাকা প্রতি লিটার৷
ঢাকায় এই কর্মসূচি আগেই শুরু হয়েছে৷ গত ৬ মার্চ থেকে ঢাকা শহরে মোট ১৮৫টি ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি শুরু হয়৷ ঢাকা শহরে ১২ লাখ পরিবারের কাছে এই পণ্য দেয়া হচ্ছে৷ ঢাকার বাইরে পাচ্ছে ৮৮ লাখ পরিবার৷
ঢাকার বাইরে করোনার সময় যারা প্রণোদনা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দুই হাজার ৫০০ টাকা পেয়েছেন, তারাসহ নিম্নবিত্ত আরো ৬১ লাখ ৫০ হাজার পরিবারকে কার্ড দেয়া হয়েছে বলে টিসিবি জানিয়েছে৷
টিসিবির ডিলার অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি জুয়েল আহমেদ বলেন, ‘‘ঢাকা শহরে কোনো কার্ড দেয়া হয়নি৷ আগের মতই আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে বিক্রি করা হচ্ছে৷ রবিবার থেকে পণ্য ও স্পট বাড়ানো হয়েছে৷ ঢাকা শহরে রবিবার ১০০টি স্পটে পণ্য বিক্রি করা হয়েছে৷ প্রতিটি ট্রাকে সয়াবিন তেল ৫০০ লিটার, চিনি ও ডাল ৫০০ কেজি করে এবং পেঁয়াজ ৬০০ কেজি করে বিক্রি করা হচ্ছে৷ সোমবার থেকে এক হাজার কেজি ছোলা যুক্ত হবে৷’’
তিনি বলেন, ঢাকা ও বরিশাল শহরে ৩০ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন আর এর বাইরে দুই দিন বিক্রি করা হবে৷
এদিকে বরিশালে সব এলাকায় একসঙ্গে নয়, ওয়ার্ড ভাগ করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে৷ টিসিবির কার্ড বরিশাল শহরে না দেয়া হলেও পণ্য কিনতে ন্যাশনাল আইডি কার্ড লাগছে৷ ওয়ার্ড ভাগ করে দেয়ায় বিশৃঙ্খলা হচ্ছে৷ সবাই ওই ওয়ার্ডগুলোতে ভিড় করছেন৷ কিন্তু ওয়ার্ডের ভোটার না হওয়ায় অনেককে ফিরে যেতে হচ্ছে৷ রবিবার মোট চারটি ওয়ার্ডে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়৷ মোট ওয়ার্ড ৩০টি৷
দেশের অনেক এলাকায় এখনো কার্ড বিতরণ সম্পন্ন হয়নি বলে জানাগেছে৷ টিসিবির পণ্যও পৌঁছায়নি৷ নোয়াখালী সদরের ডিলার মোকাররম হোসেন বলেন, ‘‘আজকে (রবিবার) আমি টিসিবির পণ্য পাইনি, তাই বিক্রি করতে পারিনি৷ আর এখনো কার্ড বিতরণ বাকি আছে৷ কার্ড কিছু বাড়ানো হয়েছে, তাই দেরি হচ্ছে৷''
তিনি আরো জানান, ‘‘যেসব এলাকায় স্যাররা বিক্রি উদ্বোধন করেছেন সেখানে কার্ড দেয়া হয়েছে এবং পণ্য বিক্রি করা হয়েছে৷'' তার কথা, ‘‘ওইসব এলাকায় কার্ডের বাইরেও অনেকে পণ্য কিনতে এসে ফিরে যান৷''
এদিকে গাজীপুরসহ দেশের কিছু এলাকায় টিসিবির পণ্য ডিলারদের বাদ দিয়ে মেম্বার, চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদের কাছে দেয়া হয়েছে৷ তাতে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানা গেছে৷
টিসিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সোমবার থেকে চারটি পণ্যের পাশাপাশি ৫০ টাকা কেজি দরে জনপ্রতি চার কেজি করে ছোলা বিক্রি করা হবে৷ আর রমজানের শুরুতেই খেজুর যুক্ত হবে বলে জানা গেছে৷
টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির জানান, ‘‘দেশের এক কোটি পরিবার ১০ দিনের মধ্যে দুইবার পণ্য কিনতে পারবেন৷ তাই একদিনে যেসব এলাকায় টিসিবির পণ্য বিক্রি হবে তা নয়৷ ভাগ ভাগ করে বিক্রি করা হচ্ছে৷ যারা কার্ড পেয়েছেন তারা সবাই পণ্য পাবেন৷''
তিনি দাবি করেন, ‘‘ঢাকায় অনেক ভাসমান মানুষ থাকায় কার্ড করা সম্ভব নয়৷ বরিশালেও কার্ড হবে না৷ তবে বরিশালে এনআইডি বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি আমাদের জানান নাই৷ এনআইডি লাগার কথা না৷''