জ্যাকসনের মৃত্যুর পেছনে থাকতে পারেন তাঁর ডাক্তার
২৪ জুলাই ২০০৯আধুনিক পপ সঙ্গীতের এই কিংবদন্তী পুরুষ ছিলেন এ যুগের সবচেয়ে সৃজনীশীল সিংগার-সংরাইটারদের মধ্যে একজন৷ কিন্তু, জ্যাকসনের ‘‘মুনওয়াক'' বা গানের ‘‘বীট''-এর মতো তাঁর জীবন বা জীবনযাত্রাও ছিল অভিনব, সমতাহীন এবং রহস্যে ঢাকা৷ এমনকি মৃত্যুর পরও সেই রহস্যময়তা কাটেনি মাইকেল জ্যাকসন নামটি থেকে৷
একমাস পরেও তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কোথায় হবে - তার সঠিক ঠিকানা পাওয়া যায় নি৷ সঠিকভাবে জানা যায় নি পপ গুরুর সম্পত্তির হিসেব বা তার মালিকানা স্বত্ত্ব৷ ২৫শে জুন বৃহস্পতিবার, সকালের রেওয়াজের পর বাসায় এসে হঠাৎ করেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন মাইকেল৷ খবর দেওয়া হয় হাসপাতালে৷ কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স বাসায় এসে পৌঁছোতে পৌঁছোতে, তাঁর হৃদযন্ত্রের ‘‘বীট'' কাজ করা বন্ধ করে দেয়৷ তাই পরে যখন মাইকেল জ্যাকসনকে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া-র রোনাল্ড রেগ্যান মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই ৫০ বছর বয়স্ক মাইকেলের৷ একে রহস্যময় না বলে কি উপায় আছে ?
সেদিন থেকেই তদন্ত চলছে৷ চলছে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব, তল্লাশি৷ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, পুলিশের কাছে এখন প্রাইম টার্গেট একজনই৷ জ্যাকসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ড. কনরাড মারে৷ তাই গত বুধবার ড. মারে-র উত্তর হিউস্টনের আর্মস্ট্রং মেডিক্যাল ক্লিনিকে তল্লাশি চালায় যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ তদারকি কর্তৃপক্ষ এবং লস এঞ্জেলেস পুলিশ৷ উপস্থিত এক আইন তদারকি কর্মকর্তা জানান, মাইকেলের মৃত্যুর আগে সেবন করা চেতনানাশক ডিপ্রাইভেনের খোঁজেই মূলত ঐ তল্লাশি চালানো হয়৷ শোনা যায়, সেই তল্লাশি পরোয়ানায় তল্লাশির পাশাপাশি তথ্য এবং মালামাল বাজেয়াপ্ত করারও অধিকার দেওয়া হয়েছিল৷ শুধু তাই নয়, জ্যাকসনের পুষ্টিবিদ ও নার্স চেরিলিন লি-র অফিসেও তল্লাশি চালায় পুলিশ৷ লি-র কাছ থেকে মাইকেল নাকি প্রায়ই ডিপ্রাইভেন আদায় করার চেষ্টা করতেন৷
সে যাই হোক, জ্যাকসনকে হত্যা করা হয়েছে - মার্কিন পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মচারীদের এরকমই ধারণা৷ তাছাড়া, মাইকেল জ্যাকসনের বোন লা টোয়াও বিশ্বাস করেন, যে হত্যা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলেন পাগলাটে এই শিল্পী৷ ড. মারে-র আইনজীবী এড শেরনফ অবশ্য বরাবরই বলে এসেছেন যে, ৫১ বছর বয়সী এই কার্ডিওলজিস্ট সম্পূর্ণ নির্দোষ৷ প্রসঙ্গত, জ্যাকসন পরিবারের সপ্তম সন্তান মাইকেলের মৃত্যুর পর পরই ড. কনরাড মারে-কে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ৷ তাতে কোন তথ্য পাওয়া না গেলেও, নেতিবাচক মিডিয়া কাভারেজের কারণে এখন সারাদিন দেহরক্ষী সঙ্গে নিয়ে চলতে হচ্ছে ড. মারে-র৷
তদন্ত চলছে৷ কিন্তু, পুরো ঘটনাটাই এখনও অস্পষ্ট৷ পুরো ব্যাপারটাই যেন একটা গ্রীক ট্যাজেডী!
প্রতিবেদক: দেবারতি গুহ
সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার