‘জোরপূর্বক বিবাহ’ রোধে কাজ করবে কমনওয়েলথ
৩১ অক্টোবর ২০১১বাল্য এবং জোরপূর্বক বিবাহ রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে একমত হয়েছে কমনওয়েলথভূক্ত দেশগুলো৷ এক বিবৃতিতে ৫৪ জাতির এই গোষ্ঠী জানিয়েছে, অল্প বয়সে এবং জোরপূর্বক বিবাহ রোধে প্রয়োজনীয় যে কোন পদক্ষেপকে উৎসাহিত করা হবে৷
কমনওয়েলথ এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই একসময় ইংরেজ কলোনিভূক্ত ছিল৷ এই গোষ্ঠী জানিয়েছে, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নীতি কার্যকরে কাজ করবে এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো৷
শিশু অধিকার বিষয়ক সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া কমনওয়েলথের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে৷ এর ফলে লাখ লাখ মেয়েকে জোরপূর্বক বিয়ের হাত থেকে রক্ষা করা সহজ হবে বলেও জানায় সংস্থাটি৷
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল এর কর্মকর্তা ইয়ান উইসহার্ট এই প্রসঙ্গে বলেন, বাল্য এবং জোরপূর্বক বিবাহ বন্ধের দিকে নজর দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত কমনওয়েলথভুক্ত সরকার এবং সমাজের প্রতি একটি পরিষ্কার ইঙ্গিত প্রদান করছে৷ সেটি হচ্ছে বাল্য এবং জোরপূর্বক বিয়ে, যা কিনা অনেক সময়ই মেয়েদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেওয়া হয়, সেগুলো আর সহ্য করা হবে না৷
ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার পার্থে কমনওয়েলথ রাষ্ট্র প্রধানদের সম্মেলনের উদ্বোধন করেন৷ এসময় তিনি মেয়ে এবং নারীদেরকে তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের যথাযথ সুযোগ করে দিতে রাষ্ট্র প্রধানদের প্রতি আহ্বান জানান৷
মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, অল্পবয়সি মেয়েদেরকে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার হার কমনওয়েলথ দেশগুলোতে বেশি৷ জোরপূর্বক বিয়ে চালু আছে এমন ২০টি দেশের মধ্যে ১২টি কমনওয়েলথভূক্ত৷ প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চলের কিছু দেশে ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সিদের বিয়ে দিতে আইনত কোন বাধা নেই৷
বাংলাদেশে ১৫ বছর বয়স পার হওয়ার আগেই ৩২ শতাংশ মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়৷ প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সিয়েরা লিওন, ক্যামেরুন, মোজাম্বিক এবং ভারতে বাল্যবিবাহের হার অনেক বেশি৷
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কমনওয়েলথ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন৷ সম্মেলনে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় আরও বেশি আর্থিক সহযোগিতার জন্য উন্নত বিশ্বের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানিয়েছেন৷ কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের বৈঠকের সমাপনী অধিবেশনে এ আহ্বান জানান শেখ হাসিনা৷ তিনি বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে কম দায়ী হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ জলবায়ুর পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি শিকার হওয়া দেশগুলোর একটি৷
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের জানান, শেখ হাসিনা ও কমনওয়েলথ নেতৃবৃন্দ জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ অভিবাসনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন৷ জলবায়ুর পরিবর্তনের ঝুঁকি সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন হাসিনা৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম