একবিংশ শতাব্দীতেও বাল্যবিবাহ বন্ধ হয় নি
৭ আগস্ট ২০১১প্রথমে কয়েকটা কঠিন তথ্য দেওয়া যাক৷ এই গ্রহে প্রতি তিন সেকেন্ডে একটি করে বালিকাকে, কোন কোন ক্ষেত্রে তারা হয়তো দুধের শিশু, জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ এই মেয়েরা বড় হওয়ার পর শতকরা ১০০ ভাগ ক্ষেত্রে চরম দারিদ্র আর বঞ্চনার জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়৷ অপরিণত বয়সে সন্তানধারণ করতে গিয়ে স্বাস্থ্যের চরম অবনতির শিকার হয় তাদের মধ্যে অনেকেই৷ প্রতি বছর দশ মিলিয়ন মেয়ে এই পৃথিবীতে এমন অত্যাচারের শিকার হচ্ছে৷
এই তথ্যগুলির পর জানানো যাক, বিশ্বের কোন কোন মহাদেশে এ ধরণের বাল্যবিবাহের সমস্যা সবচেয়ে বেশি৷ নিউ ইয়র্কের একটি সমাজসেবী সংগঠন, নাম যাদের প্ল্যান ইউ কে, সেই সংগঠনের প্রধান মারি স্ল্যানটন জানাচ্ছেন, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং আমাদের দক্ষিণ এশিয়া, এই তিনটি এলাকাতেই চলছে এই বাল্যবিবাহের রমরমা৷ প্রতি তিন সেকেন্ডে একটি করে মেয়েকে, যাদের অনেকের বয়স আঠারোর ঢের নীচে, বিয়ে দেওয়া হচ্ছে এইসব জায়গায়৷ প্রায় সবক্ষেত্রেই বিয়ে করছে যে পুরুষটি তার বয়স সেই মেয়েটির চেয়ে অনেক বেশি৷ ধর্ম তো আছেই, অর্থের জন্য অনেক সময়ে এইসব মেয়েদের বিক্রিও করে দেওয়া হয়৷ বিয়েটা হয় স্রেফ নামেমাত্র, আইনকে ফাঁকি দিতে৷
প্ল্যান ইউ কে সংগঠনটি বিশ্বের বহু জায়গাতে এই ধরণের অনাচারের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে৷ মারি যেমন জানাচ্ছেন, গোটা বিশ্বের সার্বিক উন্নয়নের গতিকে এই বাল্যবিবাহের কুপ্রথা স্তিমিত করে দিচ্ছে ব্যাপকহারে৷ উন্নয়নশীল দেশগুলি যে সমস্যার আরও বেশি করে শিকার৷
তাই প্রয়োজন আরও বেশি সচেতনতার৷ সভ্যতাকে যেমন একদিকে সম্মুখে নিয়ে যেতে গেলে যে কুপ্রথাগুলি দূর করা প্রয়োজন৷ প্ল্যান ইউকে-র তাই আর্জি, সচেতন হওয়া আর করাটা সকলেরই দরকার৷ সবার আগে নিজের ঘরে৷ প্রবাদই তো বলছে, চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম!
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন