1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জেনেটিক ত্রুটি এড়াতে আগাম ব্যবস্থা

ইয়ানিনা হারডার/এসবি১২ জুলাই ২০১৪

জিনবাহিত রোগের কারণে জন্মের আগে, জন্মের সময় বা জন্মের পরে অনেক শিশু মারাত্মক পরিণতির শিকার হয়৷ প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে এমন ত্রুটি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়৷ কিন্তু ভ্রূণ অবস্থাতেই ত্রুটিপূর্ণ জিন আলাদা করা সম্ভব৷

https://p.dw.com/p/1CabX
ছবি: Maksim Bukovski - Fotolia.com

ইমপ্লান্টেশনের আগে রোগনির্ণয়ের ক্ষেত্রে কঠিন জেনেটিক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব৷ এর জন্য ভ্রূণের জিন পরীক্ষা করতে হয়৷

জার্মানির ল্যুবেক শহরের বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ডাক্তাররা এই প্রথম এই প্রক্রিয়া প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন৷ বাবা-মায়ের জেনেটিক সমস্যা থাকলে এখনো পর্যন্ত শুধু মায়ের ডিম্বকোষ পরীক্ষা করা সম্ভব ছিল৷ ল্যুবেক শহরের বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের অধ্যাপক ড. গেয়র্গ গ্রিসিঙার বলেন, ‘‘পোলার বডি ডায়গনিস্টিকস নামের এই পদ্ধতির সমস্যা হলো, এ ক্ষেত্রে শুধু ডিম্বকোষ – অর্থাৎ শুধু মায়ের জেনেটিক অংশ পরীক্ষা করা যায়৷ কিন্তু বাবার দিকে কোনো ত্রুটি থাকলে তা ধরা পড়ে না৷ ফলে শুধু ডিম্বাশয় নয়, ভ্রূণের পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷''

জেনেটিক ত্রুটি এড়াতে আগাম ব্যবস্থা

কিন্তু জার্মানিতে ভ্রূণের উপর কোনোরকম পরীক্ষার ক্ষেত্রে কড়া আইন রয়েছে৷ ডিম্বকোষের ক্ষেত্রে যা অনেকটা শিথিল৷ ড. গ্রিসিঙার বলেন, ‘‘তথাকথিত ‘পোলার বডি' হলো ডিম্বাশয়ের কোষ বিভাজনের বর্জ্য পদার্থ৷ এই আস্তরণ খোলা হয়, তারপর ছোট ‘পোলার বডি' বার করে নেওয়া হয়৷ এই ‘পোলার বডি' ডিম্বকোষের জেনেটিক গঠনের প্রতিচ্ছবি৷ অর্থাৎ ডিম্বকোষের আর সেটির প্রয়োজন পড়ে না৷ তাই সেটি বার করে নিয়ে আমরা পরীক্ষা করবো এবং ডিম্বকোষের গঠন সম্পর্কে জানতে পারবো৷''

ভ্রূণ সুরক্ষা আইনে পরিবর্তনের কল্যাণে ড. গ্রিসিঙার ২০১৪ সালের মার্চ মাস থেকে ভ্রূণ পরীক্ষা করার অধিকার পেয়েছেন৷ বাবা-মায়ের জিনের কারণে শিশুর কঠিন রোগ অথবা জন্মের সময় বা তার আগে শিশুর মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশি হলে তবেই এটা করা যায়৷ একমাত্র কৃত্রিম ফার্টিলাইজেশন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেই এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা সম্ভব৷ ড. গ্রিসিঙার বলেন, ‘‘ইমপ্লান্টেশনের আগে রোগনির্ণয়ের বিশেষত্বই হলো এই, যে একদিকে কৃত্রিম প্রজনন করতে হবে৷ অর্থাৎ হরমোন চিকিৎসার পর মায়ের ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বকোষ বার করে নেওয়া হয়৷ তারপর মায়ের ডিম্বকোষ আর বাবার অণ্ডকোষ টেস্ট টিউবে কৃত্রিমভাবে প্রজনন করা হয়, যাতে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক মানব-ভ্রূণ সৃষ্টি হয়৷''

তৃতীয় দিনে ডাক্তাররা ভ্রূণ থেকে কয়েকটি কোষ বার করে নিয়ে বিশ্লেষণ করেন৷ ড. গ্রিসিঙার বলেন, ‘‘যেমনটা দেখা যাচ্ছে, লেজার দিয়ে এমনভাবে কাটা হচ্ছে, যাতে সাকশান পাইপেটের মধ্যে কোষগুলি সত্যি আলাদা করা যায়৷ অন্যটা ভ্রূণের বাকি অংশ৷''

এই প্রক্রিয়ার লক্ষ্য হলো, বিশেষ কিছু বিচ্ছিন্ন জিন আবিষ্কার করা, যে গুলি সিস্টিক ফাইব্রোসিস-এর মতো কঠিন রোগের জন্য দায়ী৷ অসুস্থ ভ্রূণ আলাদা করা হয় এবং সুস্থ ভ্রূণ নারীর জরায়ুতে স্থাপন করা হয়৷

কিন্তু এই পথ সহজ নয়৷ কারণ মূল চিকিৎসার আগে প্রতিটি জেনেটিক রোগের জন্য ডাক্তারদের আলাদা পরীক্ষার প্রক্রিয়া তৈরি করতে হয়৷ ড. গ্রিসিঙার বলেন, ‘‘অর্থাৎ কেস কঠিন হলে বিশেষ এই দম্পতির জন্য আলাদা টেস্ট তৈরি করতে হবে৷ এটা একটা প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ এবং এর জন্য চাই যথেষ্ট লোকবল৷ এর জন্য কয়েক মাস সময়ও লাগতে পারে৷''

ইংল্যান্ডের মতো দেশে গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশক থেকে এই প্রক্রিয়ার অনুমতি রয়েছে৷ অন্যদিকে জার্মানিতে বিষয়টি নিয়ে নৈতিক বিতর্ক চলছে৷ কারণ এক্ষেত্রে মানুষই জন্ম-মৃত্যু সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, অসুস্থ ভ্রুণ সরিয়ে দিচ্ছে৷ ড. গ্রিসিঙার বলেন, ‘‘কঠিন রোগ কাকে বলে, সেটাও একটা কঠিন প্রশ্ন৷ বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এই বিষয়ে একমত যে, কোনো তালিকার মাধ্যমে তা নির্ণয় করা চলে না৷ একটি রোগ কঠিন, অন্যটি নয় – এমনটা বলা যায় না৷ প্রতিটি ক্ষেত্রে বিচার-বিবেচনা করে সেটি স্থির করতে হয়৷''

ভবিষ্যতে নৈতিকতা বিষয়ক কমিশন প্রতিটি কেস পরীক্ষা করে দেখবে৷ একমাত্র তাদের সম্মতি পেলেই ডাক্তাররা ভ্রূণ নিয়ে কাজ করতে পারবেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য