‘জার্মানিতে বিদেশিদের প্রতি ঘৃণা ও চরমপন্থার স্থান নেই’
২৪ ডিসেম্বর ২০১১প্রতি বছরের ২৫ ডিসেম্বর পালিত হয় খ্রিষ্টীয় ধর্মাবলম্বীদের ক্রিসমাস বা বড়দিন৷ জার্মান ভাষায় এই দিনটিকে বলা হয় ভাইনাখটেন৷ ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্ট্যান্ট মতাবলম্বী উভয়ের কাছেই এই দিনটি অত্যন্ত পবিত্র৷ খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসমতে, এই দিন পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছিলেন যিশু খ্রিষ্ট৷ তাই দিনটি এত পবিত্র তাদের কাছে৷ বলা বাহুল্য, পশ্চিমা দেশগুলোর মানুষদের কাছে জন্মদিন বরাবরই একটি বিশেষ দিন৷
বড়দিন উপলক্ষে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেথলেহেমে জড়ো হয়েছে হাজার হাজার মানুষ৷ তারা আজ মধ্যরাতে ক্রিসমাসের পদযাত্রায় অংশ নেবে৷ এদিকে ভ্যাটিক্যান সিটিতে নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা৷ দুই বছর আগে সেইন্ট ব্যাসিলিকায় ক্যাথলিক পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে এই দিনটিতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়৷
বড়দিন উপলক্ষে জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন৷ জার্মান প্রেসিডেন্টের বাসভবন শ্লস বেলেভ্যু থেকে দেওয়া এক ভাষণে তিনি দেশবাসী সহ সকলের সুখ সমৃদ্ধি কামনা করেছেন৷ তবে তাঁর এই বক্তব্যেও উঠে এসেছে সম্প্রতি ইউরোপের আর্থিক মন্দার প্রসঙ্গ৷ গত কয়েক মাস ধরে চলা ইউরো সংকটের ফলে জার্মান নাগরিকদের মধ্যে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে তার বিপরীতে আশার কথা শুনিয়েছেন ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, যে গত কয়েকটি মাস ধরে সরকার এবং বিরোধী দলগুলো ভীষণ চাপের মধ্যে নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ এই অনুভূতি থেকেই আমরা আমাদের ইউরোপীয় এবং অন্যান্য বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে সংকট উত্তরণের একটি পথ খুঁজে পাবো৷''
বড়দিনের বার্তায় পারস্পরিক অসহিষ্ণুতা বিশেষ করে বিদেশিদের প্রতি বৈষম্য না করার আহ্বান জানিয়েছেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট৷ কিছুদিন আগে নব্য নাৎসিদের হাতে বেশ কিছু বিদেশি নাগরিকের প্রাণহানির ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি৷ এই ধরণের ঘটনা সহ্য করা হবে না বলে স্পষ্ট করলেন প্রেসিডেন্ট ভুল্ফ, ‘‘আমাদের এই দেশে বিদেশিদের প্রতি ঘৃণা, সহিংসতা এবং রাজনৈতিক চরমপন্থার কোন জায়গা নেই৷ যারা এই ঘটনার শিকার হয়েছেন তাদের স্বজন এবং বন্ধুদের প্রতি আমরা সহানুভূতি এবং সম্মান জানাচ্ছি৷''
জার্মান প্রেসিডেন্ট বলেন, পারস্পরিক সহিষ্ণুতার চর্চাটি পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে৷ তাহলেই অপরকে গ্রহণ করার অভ্যাসটি আস্তে আস্তে গড়ে উঠবে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই