জার্মানিতে অভিবাসন
৮ ডিসেম্বর ২০১২বহুকাল ধরেই জার্মানি নিজেকে অভিবাসনের দেশ হিসেবে মেনে নেয় নি৷ বিদেশিদের আনা হয়েছে, তারা এসেছে, কাজ করেছে৷ বৈধ ও অবৈধ আশ্রয়প্রার্থী হিসেবেও অনেকে এ দেশে থেকে গেছে৷ কিন্তু সমাজে তাদের সমন্বয়ের লক্ষ্যে বহুকাল কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি৷ এরপর এল দেশের প্রথম অভিবাসন আইন৷ তার পর জার্মান ভাষা শিক্ষা থেকে শুরু করে বিদেশি কর্মী ও তাদের পরিবারের থাকা ও কাজের অনুমতি ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে অনেক অগ্রগতি ঘটে চলেছে৷
বিদেশিদের কল্যাণে জার্মানির এই সব উদ্যোগের প্রশংসা করেছে সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা ওইসিডি৷ প্যারিসে গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বেশ কিছু তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে, যার মাধ্যমে একটা স্পষ্ট চিত্র উঠে এসেছে৷ যেমন অতীতে জার্মানিতে বিদেশিদের মধ্যে বেকারত্বের যে উচ্চ হার ছিল, তা অনেকটা কমে এসেছে৷ ২০০০ সালে যেখানে মাত্র ৫৭ শতাংশ বিদেশি কর্মরত ছিলেন, ২০১০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ শতাংশে৷ জার্মানিতে উচ্চশিক্ষিত অভিবাসীদের প্রবেশও বেড়েছে৷ আজ যারা জার্মানিতে বসবাস করতে আসছেন, তাদের বেশিরভাগের ঝুলিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি রয়েছে৷ গত এক দশকে এই হার ১২ শতাংশ বেড়েছে৷
রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শিল্পোন্নত দেশগুলিতে সাধারণত উচ্চশিক্ষিত বিদেশিরাই কাজের সুযোগ বেশি পেয়ে থাকে৷ বিশেষ করে অভিবাসী পরিবারের দ্বিতীয় প্রজন্মের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি৷ কিন্তু জার্মানিতে এক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷ বিশেষ করে স্পেনের মতো আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত দেশগুলিতে বেকারদের মধ্যে বিদেশিদের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত৷
জার্মানির বিদেশি বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী মারিয়া ব্যোমার এই রিপোর্ট সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন৷ তাঁর মতে, সমাজে বিদেশিদের আরও সম্পৃক্ত করতে সরকারের নীতি সঠিক পথেই এগোচ্ছে৷ বিশেষ করে শুরু থেকেই জার্মান ভাষা শিক্ষার উপর জোর দিয়ে সুফল মিলেছে বলে তিনি মনে করেন৷ বিদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ প্রজন্মের ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের বিষয়েও সরকার বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছে৷
ওইসিডি রিপোর্ট অনুযায়ী ইউরোপের অনেক দেশে বিদেশিদের পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে৷ যেমন গ্রিসে বিদেশিরা সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের অভিযোগ করছে৷ এই তালিকায় অস্ট্রিয়া দ্বিতীয় স্থানে৷ শুধু ক্ষুদ্র দেশ লুক্সেমবুর্গ'এ বিদেশিরা সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন৷
এসবি/ডিজি (কেএনএ)