প্রতিদিন দু’টো নতুন ফাউন্ডেশন!
১৭ মে ২০১৩সবচেয়ে বড় ফ্যাকড়াটি হলো, এখন যা চলেছে৷ অর্থাৎ সর্বত্র জামানতের উপর প্রাপ্য সুদের পরিমাণ কমে গেছে৷ অথচ দাতার টাকা জামানত রেখে তার সুদেই তো ফাউন্ডেশন চলে৷ অবশ্য বড় বড় ফাউন্ডেশনগুলো শুধু ব্যাংক অথবা সরকারি বন্ডেই টাকা রাখে না, তারা শেয়ার কেনে, এমনকি তাদের সম্পত্তির মধ্যে আস্ত জঙ্গলও পাওয়া যাবে৷ এটা চলে আসছে মধ্যযুগ থেকে, যখন মানুষজন বাড়ি কি বনজঙ্গল দান করে যেতেন৷
জার্মানিতে আজ ১৯ হাজারের বেশি ফাউন্ডেশন আছে৷ সেই সঙ্গে যোগ হচ্ছে প্রতিদিন আরো দু'টি বা তিনটি – অর্থাৎ বছর বছর ফাউন্ডেশনের সংখ্যা বাড়ছে ৬৬০টা করে৷ অবশ্য এই ফাউন্ডেশনগুলোর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ছোট ফাউন্ডেশনের পর্যায়ে পড়ে: তাদের পুঁজি দশলাখ ইউরোর বেশি নয়৷ অপরদিকে বড় ফাউন্ডেশনগুলির দশ কোটি ইউরোর বেশি পুঁজি থাকতে পারে৷
‘একটা বুনিয়াদি অনুভূতি'
জার্মানিতে যে কেন ক্রমেই আরো বেশি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা হচ্ছে, তার কোনো সহজ উত্তর নেই৷ তবে এটুকু বলা যায় যে, পুঁজিবাদী সমাজে যেমন একক ব্যক্তির বিপুল পরিমাণ সম্পদ আহরণের সুযোগ আছে, সেরকম তার সমাজকে কিছুটা ফেরৎ দেওয়ার তাগিদও আছে, এ বছরের শ্রেষ্ঠ দাতা পুরস্কারের প্রাপক উডো ফ্যান মেটেরেন যাকে বলেছেন ‘‘কৃতজ্ঞতার একটা বুনিয়াদি অনুভূতি''৷
ডুসেলডর্ফের এই শিল্পপতি ১৯৮০ সালে তাঁর ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন, যা বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, পরিবেশ সংরক্ষণ, যুব বিনিময় ইত্যাদি ক্ষেত্রে বহু প্রকল্পে সাহায্য করেছে৷ অপরদিকে, বিভিন্ন রোগ নিয়ে গবেষণা ও রোগাক্রান্তদের সাহায্যের জন্যও ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়ে থাকে৷ জার্মান ফাউন্ডেশনগুলির ফেডারাল সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর হান্স ফ্লাইশ বলেছেন,‘‘সমাজের সর্বাধুনিক চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলার জন্য ক্রমেই আরো বেশি এবং আরো তাড়াতাড়ি ফাউন্ডেশন গড়ে উঠছে৷''
‘মিশন ইনভেস্টিং'
মনে রাখা দরকার, এই ফাউন্ডেশনগুলিকে জার্মানে বলা হয় ‘‘রেশ্টফেহিশ'', অর্থাৎ এগুলি আইনত এবং আইনযোগ্য প্রতিষ্ঠান৷ এর সঙ্গে বহু ট্রাস্ট আছে, যেগুলি প্রতিষ্ঠা করা অপেক্ষাকৃত সহজ৷ ট্রাস্টের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য পরিবর্তন করাও সহজ৷ কাজেই যে সব দাতার দাতব্য সম্পত্তির পরিমাণ খুব বেশি নয়, তারা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার বদলে ট্রাস্ট গঠন করতেই পছন্দ করেন৷
ফাউন্ডেশনগুলির কাজের একটি দিক হলো পুঁজি বিনিয়োগ৷ সমাজকল্যাণের কাজ সেখান থেকেই শুরু হতে পারে৷ যে কারণে জার্মানির বিভিন্ন ফাউন্ডেশন আজকাল জেনেশুনে বিশেষ বিশেষ প্রকল্পে পুঁজি বিনিয়োগ করছে, যেমন জার্মানিতে একটি সৌরশক্ত প্রকল্প, কিংবা ভারতে ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প, কি ফ্রাংকফুর্টে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন প্রকল্প৷ এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘‘মিশন ইনভেস্টিং'' বা ‘কল্যাণমূলক বিনিয়োগ'৷ তবে তা এখনও ফাউন্ডেশনগুলির মোট বিনিয়োগের একটা সামান্য অংশ৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ)