করোনা সামাল দিতে বুস্টার সামিটের দাবি
১ নভেম্বর ২০২১যে কোনো দেশেই করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবার উপক্রম হলে রাজনীতিকরা মরিয়া হয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন৷ জনসংখ্যার সিংহভাগ করোনা টিকা পাওয়া সত্ত্বেও শীতের মাসগুলিতে ইউরোপের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে৷ অবশিষ্ট মানুষকে টিকা দেওয়ার প্রচেষ্টা নানা বাধার সম্মুখীন হবার ফলে টিকাপ্রাপ্ত মানুষদের বুস্টার ডোজ দিয়ে মহামারির মোকাবিলার চেষ্টা করছে অনেক দেশ৷ এখনো সেই কাজে যথেষ্ট গতি না আসায় বাড়তি ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে৷ তাছাড়া শুধু বয়স্ক ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ইসরায়েলের মতো দেশের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে সবার জন্য সেই সুযোগ করে দেওয়া উচিত কিনা, সে বিষয়েও তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়েছে৷
জার্মানিতে বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ফেডারেল ও রাজ্য স্তরের কয়েকজন শীর্ষ নেতা ‘বুস্টার সামিট' আয়োজনের ডাক দিয়েছেন৷ বিদায়ী সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান, বাভেরিয়ার মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডার, এসপিডি দলের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কার্ল লাউটারবাখের মতো নেতারা সপ্তাহান্তে এ ক্ষেত্রে সার্বিক ও স্পষ্ট সিদ্ধান্তের ডাক দিয়েছেন৷ বিশেষ করে হাসপাতালের উপর চাপ বেড়ে চলায় তারা গভীর দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন৷ এ দিকে অবশিষ্ট মানুষকে করোনা টিকা দেবার উদ্যোগও অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে৷ বুস্টার ডোজ দেবার ক্ষেত্রে আরও গতি আনতে স্পান সদ্য বন্ধ হওয়া টিকাদান কেন্দ্রগুলি আবার খোলার প্রস্তাব দিয়েছেন৷ তিনি সবার আগে ৬০ বছরের বেশি বয়সের সব মানুষের জন্য এমন টিকার ব্যবস্থার পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ তবে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ সংক্রান্ত বর্তমান নীতি নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা যাচ্ছে৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী সব মানুষই ইচ্ছা করলে বুস্টার ডোজ নিতে পারেন৷
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান বলেন, করোনা ভাইরাসের চতুর্থ ঢেউ মোকাবিলার ক্ষেত্রে বুস্টার ডোজ কতটা কার্যকর হতে পারে, ইসরায়েলের অভিজ্ঞতা তা দেখিয়ে দিচ্ছে৷ অন্যান্য নেতারা জার্মানিতে এখনো পর্যন্ত দেওয়া বুস্টার ডোজ সংক্রান্ত তথ্য পরিসংখ্যান জানতে চেয়েছেন৷ ফেডারেল ও রাজ্য স্তরের মধ্যে আরও সমন্বয়ের উপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷ তাদের মতে, ক্ষমতা হস্তান্তরের চলমান প্রক্রিয়া সত্ত্বেও জার্মানি এমন কঠিন সময়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না৷ বিপর্যয় এড়াতে দ্রুত পদক্ষেপ নেবার উপর জোর দিচ্ছেন নেতারা৷
এই মুহূর্তে জার্মানিতে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণের গড় সাপ্তাহিক হার প্রায় ১৫৫ ছুঁতে চলেছে৷ হাসপাতালের ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটের ৮৮ শতাংশ বেড ভরে গেছে৷ টিকার সব প্রয়োজনীয় ডোজ পাওয়া মানুষের হার মাত্র ৬৭ শতাংশ৷ নভেম্বরের শুরুতেই এমন পরিস্থিতি দেখা দিলে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের পরিস্থিতি কী হবে, সে বিষয়ে নানা পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে৷ বিশেষ করে করোনা রোগীদের কারণে আইসিইউ ভরে গেলে অন্যান্য গুরুতর রোগে আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসা অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)