জার্মান সংসদে হামলার চেষ্টা, ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
৩০ আগস্ট ২০২০১৯৯৯ সাল থেকে জার্মান সংসদের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগের অধিবেশন বসে রাইশটাগে৷ অসাধারণ স্থাপত্যশৈলীর কারণে বার্লিনের এই ভবনের খ্যাতি গোটা বিশ্বজুড়েই৷ সেই সঙ্গে এটিকে আধুনিক জার্মানির গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবেও বিবেচনা করা হয়ে থাকে৷ শনিবার করোনায় আরোপিত কড়াকড়ির বিরুদ্ধে বার্লিনে আয়োজিত র্যালি থেকে কয়েকশো বিক্ষোভকারী ভবনটিতে ঢোকার চেষ্টা করেন৷ এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরকে বাধা দেয় এবং গ্রেপ্তারও করে অনেককে৷
এই ঘটনায় বিষ্মিত এবং হতবাক হয়েছেন জার্মানির সরকারের মন্ত্রীরা৷ তীব্র প্রতিবাদ এবং নিন্দা জানিয়েছেন তারা৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার বলেছেন, ‘‘রাইশটাগ ভবন আমাদের সংসদ কক্ষ এবং সেই সঙ্গে আমাদের উদার গণতন্ত্রের প্রতীকী কেন্দ্র৷’’ সংবাদপত্র বিল্ড আম সোনটাগকে রোববার দেয়া সাক্ষাৎকার তিনি বিক্ষোভাকারীদের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘উগ্রপন্থিরা নিজেদের স্বার্থে যেভাবে এর অপমান করেছে তা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়৷’’
এই ঘটনায় জড়িতদের অনেকের পোশাকে এবং হাতে রাইশবুর্গার আন্দোলনের প্রতীক ছিল৷ এর সমর্থকরা উগ্র-ডানপন্থি হিসেবে পরিচিত এবং আধুনিক জার্মানির বৈধতাকেই চ্যালেঞ্জ করে৷
শনিবারের বার্লিনের প্রতিবাদ র্যালিতে প্রায় ৩৮ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ আন্দোলনকারীরা যেসব প্রতীক ব্যবহার করেছেন তার সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস টুইট করেছেন৷ লিখেছেন, ‘‘সংসদের সামনে জার্মান রাইশ এর পতাকা লজ্জাজনক৷’’ অন্যদিক অর্থমন্ত্রী ওলাফ শলৎস লিখেছেন, ‘‘রাইশবুর্গারদের নাৎসি প্রতীক ও পতাকা আর সাম্রাজ্যবাদী জার্মানির কোন স্থান নেই জার্মান সংসদে৷’’
এই ঘটনার জন্য জার্মানির দুই উগ্র ডানপন্থি দল এএফডি এবং এনপিডিকে দুষছেন গ্রিন পার্টির সংসদ সদস্য কনস্টান্টিন ফন নৎস৷ রাইশটাগে হানা দেয়ার জন্য তারা বিক্ষোভকারীদের উদ্বুদ্ধ করেছে বলে মনে করেন তিনি৷ নৎস অবশ্য বলেন, ‘‘ঘটনাটি বিরক্তিকর এবং লজ্জাজনক৷’’
এদিকে, শনিবারের র্যালি থেকে মোট তিনশো জনকে গ্রেপ্তারের খবর নিশ্চিত করেছেন বার্লিন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেয়াস গাইসেল৷ এদের মধ্যে দুইশো জনকে আটক করা হয় রুশ দূতাবাসের সামনে থেকে৷ সেখানে তিন হাজারের মতো রাইশবুর্গার সমর্থক এবং উগ্র ডানপন্থিরা জড়ো হয়ে পুলিশের দিকে পাথর ও বোতল ছুড়তে থাকেন৷
এফএস/এআই (ডিপিএ, রয়টার্স)