আল-কায়েদা সদস্যের বিচার
৮ মে ২০১২এবার এক জার্মান-আফগান নাগরিকের বিচার চলছে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে৷
৩৭ বছর বয়সি জার্মান-আফগান নাগরিক আহমাদ ওয়ালি সিদ্দিকি৷ জার্মানিসহ এর আশেপাশের কিছু শহরে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে৷ ২০১০ সালের জুলাই মাসে মার্কিন সৈন্যরা আফগানিস্তান থেকে তাকে আটক করে৷ এরপর আটকাবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে সিদ্দিকি৷ সে জানিয়েছে, ইউরোপের কিছু শহরে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিল আল-কায়েদা৷ এ তথ্য জানার পরই জার্মানি সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছিল৷
জার্মান কর্তৃপক্ষের ভাষ্য মতে, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলার প্রশিক্ষণ নিতে ২০০৯ সালে জার্মানির বন্দর নগরী হামবুর্গ থেকে প্রায় এক ডজন চরমপন্থী মুসলমান তরুণ ঐ অঞ্চলে যায়৷ তাদেরই একজন এই সিদ্দিকি৷ এই দলটির অপর সদস্য জার্মান-সিরীয় নাগরিক রামি মাকানেসি৷ আল-কায়েদার সদস্য হওয়ার দায়ে গত বছর ফ্রাঙ্কফুর্টের এক আদালতে তার চার বছর নয় মাস কারাদণ্ড হয়েছে৷ মাকানেসিকে ২০১০ সালের জুন মাসে পাকিস্তানে আটক করা হয়েছিল৷ এরপর তাকে জার্মানির কাছে হস্তান্তর করা হয়৷
জার্মান শহর কোবলেন্সের আদালতে কৌঁসুলি ব্যার্ন্ড শ্টয়ডেল বলেন, এ ব্যাপারে কোন সন্দেহই নেই যে, সিদ্দিকি প্রথমে উজবেকিস্তানের ইসলামি আন্দোলনে যোগ দেয়৷ পরে সে আল-কায়েদার সদস্য হয়৷ এছাড়া সে ধর্মযুদ্ধ বা জিহাদে অংশ নিতে চেয়েছিল৷ তবে সিদ্দিকি আদালতকে বলেছে, পাকিস্তানে গিয়ে সে কিছু কম্পিউটার মেরামত করেছিল, বাস্কেটবল খেলতো এবং তার হাটুর সমস্যা সারিয়ে তোলে৷ অবশ্য সিদ্দিকির এমন কথার জবাবে ঊর্ধ্বতন কৌঁসুলি উলরিশ শুলথেস বলেন, ‘‘আল-কায়েদা মুমূর্ষুদের স্বাস্থ্যনিবাস নয়৷''
এছাড়া গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, সিদ্দিকি মুনির আল মোতাসাদেকের বন্ধু ছিল৷ এই মুনির এগারোই সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলায় সহযোগিতা করেছিল বলে ২০০৬ সালে জার্মান আদালতে অভিযুক্ত হয়৷ ঐ সন্ত্রাসী হামলায় চারটি জেট বিমানের মোট ২৪৬ জন বৈমানিক ও যাত্রী নিহত হয়েছিল৷ মুনির এবং সিদ্দিকি হামবুর্গের একটি মসজিদে প্রায়ই যেত বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর৷
কোবলেন্স আদালতে সিদ্দিকির বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ কৌঁসুলিদের দাবি, সিদ্দিকির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই (এপি)
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ