ইউরো এলাকা
১২ সেপ্টেম্বর ২০১২আদালতের রায়ের গুরুত্ব
জার্মানির সাংবিধানিক আদালতের রায়ের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ৫০,০০০ কোটি ইউরো অঙ্কের উদ্ধার তহবিল ইএসএম এবং বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ‘ফিসক্যাল' চুক্তির ভবিষ্যৎ৷ মনে রাখতে হবে, ইউরো এলাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ জার্মানি৷ তারা এই দুই কাঠামোয় অংশ না নিতে পারলে সেগুলি অর্থহীন হয়ে উঠবে৷ তবে সবার আশা, আদালত এ ক্ষেত্রে কোনো বাধার সৃষ্টি করবে না, শুধু প্রক্রিয়াগত কিছু প্রস্তাব, পরামর্শ বা নির্দেশ দেবে৷ এদিকে এই রায় স্থগিত করার উদ্যোগ সোমবার বাতিল করে দিয়েছে আদালত৷
সার্বিক অনিশ্চয়তার শেষ?
এই অবস্থায় বিভিন্ন পদক্ষেপ কার্যকর করার প্রক্রিয়ায় যে বিলম্ব ঘটছে, তার ফলে ইউরো এলাকার পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটছে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন৷ তবে এতকাল এ নিয়ে যে সংশয় ছিল, বিভিন্ন বাধা কাটার ফলে সেগুলি ক্রমশঃ দূর হচ্ছে৷ যেমন আগামী মাস, অর্থাৎ অক্টোবরের মধ্যেই ইউরো এলাকার উদ্ধার তহবিল ইএসএম চালু হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে ইইউ৷ লুক্সেমবুর্গে ৮ই অক্টোবর ইউরো এলাকার অর্থমন্ত্রীদের সম্মেলনে ইএসএম উদ্বোধন করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে৷
ফলে ইসিবি'র বন্ড কেনার সিদ্ধান্ত, ইএসএম – এই সব পদক্ষেপগুলি একসঙ্গে সংকট কাটাতে সাহায্য করবে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে৷ আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ ইউরো এলাকায় ব্যাংকিং ইউনিয়ন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা প্রথম পদক্ষেপের পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছেন৷
ইসিবি'র নীতি নিয়ে বিতর্ক
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইউরো এলাকার স্থিতিশীলতার স্বার্থে প্রয়োজনে বন্ড কেনার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশয় এখনো কাটেনি, যদিও তার মাত্রা বেশি নয়৷ যেমন জার্মানির সরকারি জোটের মধ্যে এ নিয়ে বেশ বিতর্ক ছিল৷ তবে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সোমবার সবার সম্মতি আদায় করেছেন৷ বন্ড কেনার জন্য অর্থের উর্দ্ধসীমা স্থির না করে অনির্দিষ্ট মাত্রায় বন্ড কেনার পথ খুলে দেওয়ায় জার্মানির বাজেটের উপর মারাত্মক চাপ পড়তে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল৷ ইসিবি বলেছে, ফাটকাবাজি রুখতেই কোনো নির্দিষ্ট অঙ্ক স্থির করা হয় নি৷
অন্যদিকে এই সহায়তা নিতে হলে বেশ কড়া শর্ত মানতে হবে, যা অনেক দেশের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠছে৷ যেমন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখই সোমবার বলেছেন, ‘বেলআউট' যদি নিতেই হয়, তার বদলে ব্যয় সংকোচ করতে বা অবসর ভাতা কমাতে তিনি প্রস্তুত নন৷ তবে বাজেট ঘাটতি কমাতে তিনি বদ্ধপরিকর৷ কিন্তু সংকটের গোটা দায় তিনি মাদ্রিদে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান হিসেবে কাঁধে তুলে নিতে চান না৷ রাজ্য সরকারগুলিকে ব্যয় কমানোর কড়া নির্দেশ দিয়েছেন রাখই৷
গ্রিসের পরিস্থিতি
গ্রিস'কেও শুক্রবারের মধ্যে বাজেট ঘাটতি আরও কমানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে হবে৷ যে করেই হোক আগামী ২ বছরে প্রায় ১,১৫০ কোটি ইউরো বাড়তি অর্থের সাশ্রয় করার জন্য চাপ রয়েছে গ্রিসের সরকারের উপরে৷ জার্মান অর্থমন্ত্রী গ্রিসের সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেছেন, সে দেশ গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি দেখিয়েছে৷ তবে পরবর্তী কিস্তির আর্থিক সহায়তা পেতে হলে গ্রিসকে তার প্রতিশ্রুতি পালন করতে হবে বলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি৷
এসবি / এসি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)