1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জামিন পাওয়ার পর যেভাবে প্রচার করছেন কেজরিওয়াল

১৭ মে ২০২৪

জামিন পেয়েই সারাদিন ধরে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন কেজরিওয়াল। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানায় প্রচার।

https://p.dw.com/p/4fxaB
জামিন পাওয়ার পর দিল্লিতে কংগ্রেস প্রার্থীদের নিয়ে কেজরিওয়ালের রোড শো।
কেজরিওয়ালের রোড শো। সঙ্গে তিন কংগ্রেস প্রার্থী কানহাইয়া কুমার, উদিত রাজ এবং জয়প্রকাশ আগরওয়াল। ছবি: Anushree Fadnavis/REUTERS

রাজনীতিতে খুবই দ্রুত পরিবর্তন হয়। এক বছর আগেও কেউ কি ভাবতে পেরেছিলেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কংগ্রেস প্রার্থীদের নিয়ে রোড শো করবেন? দিল্লিতে সেটাই করেছেন। ইন্ডিয়া টুডে-র রিপোর্ট বলছে,  একহাতে কংগ্রেস, অন্যহাতে আপ-এর প্রতীক নিয়ে তিনি হরিয়ানায় রোড শো করেছেন। এটাও কি ভাবা গেছিল?  যায়নি। এজন্যই বলে, রাজনীতিতে চিরস্থায়ী বন্ধু বা শত্রু বলে কিছু নেই। কেজরিওয়াল যখন জেলে ছিলেন, তখন কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোটের নেতারা দিল্লিতে বিশাল প্রতিবাদ সভা করেছেন। আর এখন কেজরিওয়াল কংগ্রেসের প্রার্থীদের জন্য প্রচার করছেন

শুধু তাই নয়, কেজরিওয়াল এখন শুধু  দিল্লি বা হরিয়ানায় প্রচার করছেন না। ইতিমধ্যে তিনি উত্তরপ্রদেশ ও পাঞ্জাবেও প্রচার করেছেন। আর সেই প্রচারে নেমে সরাসরি বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণ করছেন।

আপ নেতারা জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র,  বিহার থেকেও ইন্ডিযা জোটের নেতারা কেজরিওয়ালকে প্রচার করার অনুরোধ করেছেন। তিনি যাওয়ার চেষ্টা করবেন।

কী বলছেন কেজরিওয়াল?

জামিন পাওয়ার পর দিল্লিতে প্রথম রোড শো ও পরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ৭৫ বছর হয়ে গেলে বিজেপি নেতাদের রাজনীতি থেকে অবসর নিতে হবে। আডবাণী, জোশী, যশবন্ত সিনহারা সেইমতো অবসর নিয়েছেন।

দিল্লিতে রোড শো চলার সময় দুই হাত তুলে গাড়ির উপর দাঁড়িয়ে কেজরিওয়াল।
দিল্লিতে কেজরিওয়ালের রোড শো। সেখানে দেখা যাচ্ছে কংগ্রেসের পতাকা। ছবি: Anushree Fadnavis/REUTERS

কেজরিওয়ালের বক্তব্য, ''আগামী বছর সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ৭৫ বছর পূর্ণ হবে। তিনি যদি এখন আবার প্রধানমন্ত্রী হন, তাহলে তো তখন তাকে অবসর নিতে হবে। নিজের তৈরি করা নিয়ম তো তিনি ভাঙতে পারেন না। তখন অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী হবেন। আর ক্ষমতায় এলে যোগীকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেবেন মোদী।''

বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশে গিয়ে তিনি বলেছেন, ''বিজেপি ও এনডিএ জিতছে না। তারা ২৫০টি আসনও পাবে না। আর তারা চারশ আসন পেলে সংবিধান বদল করে প্রথমেই দলিত, আদিবাসী, অনগ্রসরদের জন্য সংরক্ষণ তুলে দেবে।''

হরিয়ানায় তিনি বলেছেন, হরিয়ানার ছেলে যাতে ভোটে প্রচার করতে না পারে, সেই চেষ্টা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিহারে তাকে ইনসুলিন দেয়া হয়নি সেই অভিযোগও করেছেন।

কেজরিওয়াল বলেন, ''আমি জেলে যাব কিনা, তা এখন আপনাদের হাতে। আমায় যদি জেলে পাঠাতে চান, তাহলে বিজেপি-কে ভোট দিন, না হলে আপ বা ইন্ডিয়া জোটের দলগুলিকে ভোট দিন।'' কেজরিওয়াল কৃষক, নারী কুস্তিগির এবং অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে সোচ্চার হন।

'সরাসরি কথা বলছেন'

প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''কেজরিওয়াল এমন বিষয় তুলছেন, বিজেপি যেগুলি উপেক্ষা করতে পারছে না। তারা জবাব দিতে বাধ্য হচ্ছে। সেই সঙ্গে কেজরিওয়াল এমন বিষয় বেছে নিচ্ছেন, যা সরাসরি ভোটদাতাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে।''

কোজরিওয়ালের রোড শোতে উপস্থিত ছিলেন ভগবন্ত মানও।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের সঙ্গে কেজরিওয়ালের রোড শো। ছবি: Anushree Fadnavis/REUTERS

শরদ বলেছেন, ''কেজরিওয়াল বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে সেই রাজ্যের প্রসঙ্গ তুলছেন। তিনি আদতে হরিয়ানার মানুষ। তাই সেখানে গিয়ে আবেগের তাস খেলেছেন। উত্তরপ্রদেশে সংরক্ষণ হলো খুব বড় বিষয়। তাই সেটা নিয়ে বিজেপি-কে আক্রমণ করেছেন। তিনি নির্দিষ্ট কিছু বিষয় তুলছেন। যা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে।''

আবেদন খারিজ

কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল ইডি। তারা বলেছিল, কেজরিওয়াল জামিনের শর্ত ভেঙেছেন। শর্ত ছিল, তিনি মামলা নিয়ে কোনো কথা বলবেন না। কেজরিওয়াল বলেছেন, মানুষ যদি চান, তিনি আর জেলে না থাকুন, তাহলে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোট দিন।

বিচারপতিরা বলেন, ''ওটা কেজরিওয়ালের ধারণা হতে পারে। রায়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ২ জুলাই কেজরিওয়ালকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। সেদিন তার জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।''

অমিত শাহর মন্তব্য

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, অনেকে মনে করেন, কেজরিওয়ালকে প্রচার করার জন্য জামিন দিয়ে তাকে স্পেশাল ট্রিটমেন্ট দেয়া হয়েছে। অমিত শাহ বলেছেন, ''আইনের ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের আছে। আমার মনে হয় এটা নর্মাল বা রুটিন রায় নয়। অনেকে মনে করছেন এটা স্পেশাল ট্রিটমেন্ট।''

কেজরিওয়ালের মন্তব্য নিয়ে অমিত শাহর বক্তব্য, ''এটা আদালত অবমাননা। কেজরিওয়াল বলতে চাইছেন, কেউ যদি জয়ী হয়, তাহলে সুপ্রিম কোর্ট অভিযোগ সত্ত্বেও তাকে জেলে পাঠাবে না।''

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইঞা বলেছেন, আদালতের রায় নিয়ে সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ হতেই পারে। তবে তারা মনে করেন, কেজরিওয়ালকে নিয়ে যে রায় দেয়া হয়েছে, তা কোনো বিশেষ রায় নয়, রুটিন রায় মাত্র।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এনডিটিভি)