বিচার নিয়ে ‘বিভ্রান্তি’
২ জুন ২০১৪এদিকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত সোমবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বর্তমান আইনমন্ত্রীর কথায় জামায়াতের বিচার নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে৷ সরকারের উচিত এর ব্যাখ্যা দেয়া৷''
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে আগেই৷ এরইমধ্যে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে৷ আর প্রসিকিউশন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের কাজ করছে৷
তবে গত সপ্তাহে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, ‘‘প্রচলিত ট্রাইব্যুনাল আইনে জামায়াতের বিচার সম্ভব নয়৷''
তাঁর মতে, ‘‘এখানে সংগঠনের বিচারে শাস্তির বিধান নেই৷ আর উচ্চ আদালতে জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে যে মামলা চলছে নতুন করে জামায়াতের বিচার হলে তাতে প্রভাব পড়তে পারে৷'' তিনি জামায়াতের বিচারের জন্য সময়টিকেও উপযুক্ত মনে করেন না৷
কিন্তু সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ রবিবার বলেন, ‘‘ট্রাইব্যুনাল আইন যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচারের জন্য যথেষ্ট৷ এখানে শাস্তির বিধান বিচারকদের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷'' বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার, তাই এটাকে তিনি ট্রাইব্যুনালের ওপরই ছেড়ে দিতে বলেন৷
অন্যদিকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদই সঠিক কথা বলেছেন৷ ট্রাইব্যুনাল আইনেই জামায়াতের বিচার সম্ভব৷'' তিনি বলেন, ‘‘আইনে ব্যক্তি এবং সংগঠন উভয়ের আলাদাভাবে বিচারের বিধান আছে৷ ব্যক্তির শাস্তির পরিমাণ আইনে উল্লেখ থাকলেও সংগঠনের কি শাস্তি হবে তা বিচারকের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান আইনমন্ত্রীর কথায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে৷ কারণ উচ্চ আদালতে জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে যে মামলা চলছে তার সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের কোনো সম্পর্ক নেই৷ জামায়াতের গঠনতন্ত্র সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় হাইকোর্ট নিবন্ধন বাতিল করেছে৷ এখন এর বিরুদ্ধে জামায়াত আপিল করেছে৷ কিন্তু তাই বলে মানবতাবিরোধী অপরাধতো মাফ হয়ে যায় না৷'' রানা দাসগুপ্ত আরো বলেন, ‘‘অন্য আইনে যাই থাকুক না কেন ট্রাইব্যুনালের আইনই প্রাধান্য পাবে৷ আর প্রচলিত ফৌজদারি আইনেও জামায়াতের অপরাধ বিচারযোগ্য৷''
তিনি বলেন, ‘‘আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কথায় জামায়াতের বিচার নিয়ে জনমনে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে সরকারের উচিত এই বিভ্রান্তি দূর করা৷ আর আইনমন্ত্রীর মতো সরকারও যদি মনে করে জামায়াতের বিচারের জন্য এটা উপযুক্ত সময় নয়, তারও ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন৷''
এদিকে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার গণজাগরণ মঞ্চের আইন মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশ পন্ড করে দিয়েছে৷