জাতিসংঘ ও জার্মানি
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩আজকের জার্মানি স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন তথা গোটা বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে পরিচিত৷ কিন্তু চিরকাল এমনটা ছিল না৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে আংশিক স্বাধীনতা ভোগ করছে বিভক্ত দুই রাষ্ট্র৷
জাতিসংঘে জার্মানির গুরুত্ব আজ অপরিসীম৷ মহাসচিব বান কি-মুন বলেন, জার্মানি জাতিসংঘের সবচেয়ে সক্রিয় সমর্থনকারী সদস্যদের অন্যতম৷ মানবিক সাহায্য, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম, সংকট প্রতিরোধের মতো ক্ষেত্রে জার্মানির সাফল্য বার বার স্বীকৃতি পেয়েছে৷ চাঁদার অঙ্কের বিচারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের পর জার্মানি তৃতীয় স্থানে রয়েছে৷ এর বাইরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর অভিযানেও আলাদা করে অর্থ দেয় জার্মানি৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে মনে করেন, এর ফলে জার্মানির প্রভাব-প্রতিপত্তিও বেড়েছে৷ শুধু কথায় নয়, কাজ করে দেখাতে পারলে যে কোনো দেশের প্রতি সমীহ বাড়ে বৈকি৷
আর্থিক সহায়তার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও জাতিসংঘের অনেক কাজে জার্মানদের ভূমিকা নগণ্য৷ মাত্র ৩১৫ জন জার্মান সৈন্য ও পুলিশ জাতিসংঘের শান্তি মিশনে সক্রিয় রয়েছেন৷ বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া ও উরুগুয়ের মতো দেশের তুলনায় এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে জার্মানি৷ শুধু কসোভো ও আফগানিস্তানে জার্মান নিরাপত্তা বাহিনীর যথেষ্ট তৎপরতা রয়েছে৷
জাতিসংঘের কাঠামোর মধ্যে যথেষ্ট গুরুত্ব অর্জন করা সত্ত্বেও সাধারণ সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে জার্মানির প্রভাব বাকিদের মতোই সীমিত৷ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসনের স্বপ্ন এখনো পূরণ হয়নি৷ এর জন্য প্রয়োজন জাতিসংঘের কাঠামোর আমূল সংস্কার, যা বহুকাল ধরে মুলতুবি রাখা হয়েছে৷ সমালোচকদের মতে, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান কাঠামোর কোনো সঙ্গতি নেই৷ অদূর ভবিষ্যতেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ৷