জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আবার আসরে অ্যামেরিকা
২৫ জানুয়ারি ২০২১হোয়াইট হাউসে পালাবদলের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার প্রশ্নে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ প্যারিস চু্ক্তিতে আবার যোগ দেবার পাশাপাশি আরো নতুন উদ্যোগে শামিল হতে প্রস্তুত বাইডেন প্রশাসন৷ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিশেষ দূত ও প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি অ্যামেরিকার এই নতুন ভূমিকার নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ সোমবার তিনি বিশ্বের রাজনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য জগতের ২০ জনেরও বেশি শীর্ষ নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন৷ নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম শহরে ক্লাইমেট অ্যাডাপটেশন সামিটে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে নতুন মার্কিন প্রশাসনের ভূমিকা তুলে ধরবেন তিনি৷
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, চীনের উপ প্রধানমন্ত্রী হান জেং-সহ একাধিক নেতা এই জলবায়ু সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন৷ তবে বর্তমান করোনা সংকটের কারণে অনলাইন পদ্ধতিতে ২৪ ঘণ্টার এই সম্মেলন আয়োজিত হচ্ছে৷
তাত্ত্বিক আলোচনার বদলে সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব মোকাবিলার বাস্তবসম্মত প্রস্তুতি মূল লক্ষ্য৷ ২০৩০ সালের মধ্যে এই সব পদক্ষেপ রূপায়নের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হবে৷ সম্মেলনের শেষে খরা, বন্যা, উচ্চ তাপমাত্রা, সমুদ্রস্তরের বেড়ে চলা উচ্চতার মতো সমস্যা সামলাতে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুমোদন করতে চায় নেদারল্যান্ডসের সরকার৷ এমন বিপর্যয়ের ফলে খাদ্য সংকটের মতো সমস্যা সামলানোর উদ্যোগও সম্মেলনে গুরুত্ব পাচ্ছে৷ সেই ‘অ্যাডাপ্টেশন অ্যাকশন অ্যাজেন্ডা' বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাজে লাগবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব বান কি মুন এই সম্মেলনের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন৷ গত সপ্তাহে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখনো পর্যন্ত মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে যথেষ্ট উদ্যোগ নেয় নি৷ ২০২১ সালে বিশ্বনেতারা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একাধিক মাইলফলক সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন৷ গোটা বিশ্বের প্রায় ৩,০০০ বিজ্ঞানী বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কুপ্রভাব সামলাতে বিশ্বনেতাদের প্রতি সুরক্ষামূলক পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন৷
নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে বলেন, তাঁর দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সমুদ্রপৃষ্ঠের নীচে অবস্থিত৷ কয়েক শতাব্দীর সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তাঁর দেশ বাকিদের পানি দূরে রাখার উদ্যোগে সহায়তা করতে পারে৷
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বাংলাদেশ, মিশর, মালাউই, নেদারল্যান্ডস, সেন্ট লুসিয়া ও জাতিসংঘকে নিয়ে এক অ্যাডাপটেশন অ্যাকশন কোয়ালিশন ঘোষণা করতে চলেছেন৷ তাঁর দফতর এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানিয়ে বলেছে, যে এর মাধ্যমে সেই সব এলাকার সমাজকে সহায়তা করা হবে, যেগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি হুমকির মুখে পড়েছে৷ নতুন এই গোষ্ঠী জাতিসংঘের ডাকে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গীকারগুলিকে কার্যক্ষেত্রে রূপায়ন করতে সহায়তা করবে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)