জলবায়ু তহবিল সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে: মুক্তা
২০ জানুয়ারি ২০১২তহবিল গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয় ২০০৮ সালে৷ এরপর বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগী দেশের সঙ্গে আলোচনা করে তহবিলটি তৈরি করা হয়৷ এর আওতায় এখন পর্যন্ত ১২৫ মিলিয়ন ডলার, মানে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় এক হাজার ৫০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন জিয়াউল হক মুক্তা৷ তিনি ব্রিটেন ভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা অক্সফ্যামের এশিয়া অঞ্চলের ‘রিজিওনাল পলিসি কোঅর্ডিনেটর' হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন৷ জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন আলোচনায় দীর্ঘদিন ধরে তিনি অংশ নিয়ে আসছেন৷
মুক্তা বলেন, ‘‘এই তহবিলে এখন পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন, সুইডেন আর ডেনমার্ক থেকে অর্থ এসেছে৷ এর বাইরে অস্ট্রেলিয়া আরও ১৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১২৬ কোটি টাকা দেয়ার অঙ্গীকার করেছে৷''
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তহবিল গঠনের আগেই ২০০৯ সালে একটি অ্যাকশন পরিকল্পনা তৈরি করে সরকার৷ তহবিল থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে৷
ইতিমধ্যে কিছু কাজও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ৷ তহবিলের টাকা দিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলে সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণের কাজ চলছে বলে কিছুদিন আগে তিনি জানিয়েছেন৷
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মুক্তা বলছেন, ১২৫ মিলিয়ন ডলারের ৯০ শতাংশ খরচ করবে সরকার৷ আর বাকি ১০ শতাংশ দেয়া হবে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনকে৷ এপ্রিল থেকে তাদের কাজ শুরুর কথা রয়েছে৷ কোন্ সংস্থাকে কোন্ প্রকল্পের জন্য কত টাকা দেয়া হবে সেই প্রক্রিয়া এখন চলছে বলে জানান অক্সফ্যামের ঐ কর্মকর্তা৷
মুক্তা বলেন, সরকারি পর্যায়ে এখন পর্যন্ত তিনটি প্রকল্পের কথা জানা যায় - যেগুলো বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ এর একটি করবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ, আরেকটি পুনর্বাসন বিভাগ এবং শেষেরটির দায়িত্বে থাকবে বন বিভাগ৷
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দক্ষতা অর্জনের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে, এবং এজন্য জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, এফএও'র কাছে প্রযুক্তিগত সহায়তা চাওয়া হয়েছে৷ এফএও এ কাজের জন্য প্রায় ৩৪ শতাংশ টাকা চেয়েছে৷ মুক্তা বলছেন, এটা দু:খজনক৷ কারণ কৃষি বিভাগের বর্তমান কর্মকর্তারাই প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজটি করতে পারতেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এফএও যাদের দিয়ে কাজ করাবে তাঁদের অনেকেই বাংলাদেশের কৃষি বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা৷ ফলে বর্তমান কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ দেয়ার মতো দক্ষ নন, সেটা মনে হয় ঠিক নয়৷''
তবে তহবিলের অর্থ খরচে যেন দুর্নীতি না হয় পরিবেশ মন্ত্রণালয় সব সময় সেদিকে নজর রাখছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশমন্ত্রী৷
মুক্তা বলেন, তহবিল ব্যবস্থাপনার সঙ্গে বিশ্বব্যাংক জড়িত রয়েছে৷ তাদেরকে আর্থিক প্রক্রিয়াগত একটা দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তবে টাকাগুলোর দায়দায়িত্ব ও রাজনৈতিক কর্তৃত্ব বাংলাদেশ সরকারের কাছেই থাকবে৷
রেজিলিয়েন্স ফাণ্ডে টাকার পরিমাণ বাড়াতে চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার৷ এই লক্ষ্যে বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সম্প্রতি আলোচনায় বসেছিলেন পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদ৷ এছাড়া গত নভেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় একটি জলবায়ু সম্মেলন৷ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন উপস্থিত ছিলেন সেখানে৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক