ওষুধ উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭সোমবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন৷ এ সব প্রতিষ্ঠানের ওষুধ মান সম্পন্ন নয় বলে তা জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে বলে এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷
একই সঙ্গে আদালত স্বাস্থ্যসচিব, শিল্পসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন৷ রুলে এই ২৮ কোম্পানির ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধে তাদের নিস্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে৷ মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ'-এর পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ-এর দায়ের করা রিট আবেদনে হাইকোর্ট এই নির্দেশ দেন৷
যে ২৮টি কোম্পানির ওষুধ উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেগুলো হলো: অ্যামিকো ফার্মাসিউটিক্যালস, এজটেক ফার্মাসিউটিক্যালস, বেঙ্গল টেকনো ফার্মা, বেনহাম ফার্মাসিউটিক্যাল, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, ডিসেন্ট ফার্মা, ডা. টিমস ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্লোবেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্রিনল্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস, ইনোভা ফার্মাসিউটিক্যালস, ম্যাক্স ড্রাগস, ম্যাডিমেট ল্যাবরেটরিজ, মর্ডার্ন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, মিসটিক ফার্মাসিউটিক্যালস, ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিজ, অর্গানিক হেলথ কেয়ার লিমিটেড, ওয়েস্টার ফার্মা, প্রিমিয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস, সীমা ফার্মাসিউটিক্যালস, হোয়াইট হর্স ফার্মাসিউটিক্যালস, মমতাজ ফার্মাসিউটিক্যালস, ইউনিক ফার্মাসিউটিক্যালস, ইউনাইটেড কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস, এফএনএফ ফার্মাসিউটিক্যালস এবং টেকনো ড্রাগস লিমিটেড ইউনিট-১, ইউনিট-২, ইউনিট-৩৷
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘২০১০ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটি ওষুধের মান যাচাইয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে৷ ওই কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী এর আগে আরো ৩৪টি ওষুধ কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল এবং ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করা হয়৷ এবার আমাদের আবেদনে ২৮টি প্রতিষ্ঠানকে পেনিসিলিন, হরমোন, ক্যানসার প্রতিরোধক ওষুধ উৎপাদন ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেয় হয়েছে৷ তাদের এ সংক্রান্ত লাইসেন্সও বাতিল করা হয়েছে৷''
তিনি জানান, ‘‘এই ব্যবস্থা নিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে জবাব ও প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের৷ পুলিশের আইজি এবং র্যাব মহাপরিচালককে তাদের সহায়তা করতে বলেছেন আদালত৷''
মনজিল মোরসেদ আরো জানান, ‘‘এই ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুসরণ করছে না৷ লাইসেন্সের শর্ত অনুযায়ী যা বাধ্যতামূল৷ আর তা না মানায় উৎপাদিত ওষুধ মানসম্পন্ন হয় না এবং যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর৷''
তিনি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি ওষুধের চাহিদা তৈরি হচ্ছে৷ তাই নিম্নমানের প্রতিষ্ঠান চলতে দিলে দেশের বাইরে বাংলাদেশের ওষুধের যে বাজার তৈরি হয়েছে তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷''
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এ সব ওষুধ জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করেছে বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এখনো পাওয়া যায়নি৷ তবে নিম্ন মানের ওষুধ জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করবে এটাই স্বাভাবিক৷ আর অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তারা বুঝতে না পারায় অভিযোগ করছেন না৷''
প্রসঙ্গত, এ নিয়ে বাংলাদেশে বাংলাদেশে মোট ৬২টি কোম্পানির ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হলো৷ এর আগে নিষদ্ধ করা হয় ৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে৷
বিষয়টি নিয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷