সাফল্য ও আশঙ্কার কথা
১০ মে ২০১৪এর কারণ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ওষুধের পেটেন্ট কিনতে বাংলাদেশকে রয়্যালটি দিতে হবে৷ এখন যেটা দিতে হয় না৷ ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই সুবিধাটা পাবে বাংলাদেশ৷ ফলে এরপর থেকে ওষুধ উৎপাদনের খরচ যাবে বেড়ে, যার প্রভাব পড়বে ওষুধের দামের ওপর৷ অর্থাৎ এখন যে মূল্যে ওষুধ কেনা যাচ্ছে আগামীতে সেটা সম্ভব নাও হতে পারে৷ তখন ওষুধের মূল্য এমন অবস্থায় যেতে পারে যে, সব মানুষের পক্ষে হয়ত সব ওষুধ কেনা সম্ভব হবে না, এমনটাই ধারণা বিশেষজ্ঞদের৷
বর্তমান অবস্থা
কালের কণ্ঠে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশের নিজস্ব কোনো ওষুধ নেই৷ অর্থাৎ বাংলাদেশ উদ্ভাবন বা আবিষ্কার করেছে, বাংলাদেশের পেটেন্ট রাইটস করা আছে – এমন একটি ওষুধও নেই৷''
কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতামত সমৃদ্ধ ঐ প্রতিবেদন বলছে, একটি ওষুধ উদ্ভাবন বা ফর্মুলা আবিষ্কারের জন্য সার্বিক গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে অনেক অর্থ ও সময় প্রয়োজন৷ তাই সরকার কিংবা বেসরকারি ওষুধ উৎপাদনকারীরা এ ব্যাপারে আগ্রহী হন না৷
এদিকে, ওষুধ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তি কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন, ‘‘কেবল বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর কোথাও নতুন ওষুধ আবিষ্কার বা উদ্ভাবন নেই৷ ইউরোপের ব্রিটেন, সুইজারল্যান্ড ও জার্মানি এবং অ্যামেরিকাতেই প্রায় সব ওষুধ আবিষ্কার হয়েছে৷''
ঝুলে আছে ওষুধ শিল্প পার্ক
অন্য দেশ থেকে ‘পেটেন্ট' নিয়ে এসে বাংলাদেশে যে ওষুধ উৎপাদিত হচ্ছে তার কাঁচামালটাও আসছে বিদেশ থেকে৷ গত মাসে প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশের ওষুধের কাঁচামালের প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর৷ প্রয়োজনের মাত্র ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কাঁচামাল তৈরি হচ্ছে স্থানীয়ভাবে, বাকি প্রায় ৭০ শতাংশ আসছে বিদেশ থেকে৷ ...সম্প্রতি এক সেমিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশ যদি উৎপাদিত ওষুধের সঙ্গে ওষুধের কাঁচামালও উৎপাদন করতে পারে, তবে প্রায় সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৫৪ হাজার কোটি টাকা) বা তারও বেশি ওষুধ রপ্তানি করা সম্ভব৷''
ওষুধের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল যেন বাংলাদেশেই উৎপাদন সম্ভব হয় সে লক্ষ্যে ২০০৮ সালের মে মাসে একটি ওষুধ শিল্প পার্ক গড়ে তোলার প্রকল্প অনুমোদন করা হয়৷ পোশাকি ভাষায় এই পার্কের নাম ‘অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যালস ইনগ্রিডিয়েন্ট' বা এপিআই পার্ক৷
কিন্তু প্রায় ছয় বছর হতে চললো এখনো প্রকল্পের মূল কাজ শুরুই করা যায়নি৷ মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার পশ্চিম বাউশিয়া ও লক্ষ্মীপুর মৌজায় প্রায় ২০০ একর জায়গায় এই ওষুধ শিল্প পার্ক নির্মিত হওয়ার কথা৷ এই পার্কে থাকবে ৪২টি ওষুধশিল্প প্লট৷ সেখানে প্রায় ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হওয়ার কথা৷