ভারত-চীন সম্পর্ক
৩ সেপ্টেম্বর ২০১২চীনের রাজনৈতিক নেতৃত্বের পালাবদল, দক্ষিণ চীন সমুদ্র নিয়ে বিরোধ এবং দিল্লি-বেইজিং সীমান্ত বিরোধ এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন ইত্যাদির প্রেক্ষাপটে ভারতের সঙ্গে আস্থার ঘাটতি পূরণে চীন যে আগ্রহী, সেই বার্তা নিয়েই ভারত সফরে এসেছেন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিয়াং গুয়ালিং৷ সঙ্গে এসেছেন ২৩ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল, যার মধ্যে আছেন ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন তিব্বত এলাকার গণমুক্তি ফৌজের কমান্ডার৷ তবে জানা গেছে সীমান্ত বিরোধ তাঁর আলোচ্যসূচিতে নেই৷
তবে ভারত-চীন সীমান্ত সংঘর্ষের ৫০ বছর পূর্তির আবহে, এই সফরের প্রাথমিক লক্ষ্য দু'দেশের মধ্যে সামরিক সফর বিনিময় এবং পারস্পরিক ফৌজি আদান প্রদান৷ উল্লেখ করা যেতে পারে, সম্প্রতি বেজিং-এ ভারতীয় রাষ্ট্রদূত এবং সামরিক প্রতিনিধিদলকে তিব্বতে লাসা সফরের অনুমতি দেয় চীন৷
আসার পথে তিনি যাত্রা বিরতি করেন শ্রীলঙ্কায়৷ অর্থনৈতিক অবকাঠামো এবং সামরিক নির্মাণের দ্বারা পাকিস্তান থেকে মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা হয়ে ভারতকে চারদিক থেকে ঘিরে রাখার যে কৌশল নীতি অবলম্বন করে চলেছে চীন, তাতে ভারত স্বভাবতই চিন্তিত৷ সে কথায় আমল না দিয়ে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, চীন দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সামরিক সহযোগিতায় বিশ্বাসী৷
এই প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক অনিন্দ্য মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘চীন ভারতকে ঘিরে ফেললো বা ভারত চীনকে ঘিরে ফেললো এই ধরণের কথাবার্তা তো হতেই পারে৷ নিজস্ব প্রতিরক্ষার স্বার্থে বিভিন্ন দেশ তাদের স্ট্র্যাটিজি তৈরি করবে৷''
ভারত-চীন দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা বাণিজ্য দ্রুত বাড়ছে৷ কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতে ঘনিষ্ঠতায় চীন চিন্তিত হলেও অধ্যাপক মজুমদার মনে করেন বিশ্বের আর্থিক পরিস্থিতি কোনভাবেই ক্ষুণ্ণ হতে দেবেনা উভয় দেশ৷ ‘‘একটা সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখবে, যেখানে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সম্প্রসারণের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার মত আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ নেয়া হলে সেটাই হবে বিচক্ষণতার কাজ৷''
চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী সফরের প্রতিবাদে তিব্বত ইস্যুতে বিক্ষোভ দেখায় ভারতে বসবাসরত তিব্বতিরা৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন