1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীনে এক সন্তান নীতি কতটা কার্যকর?

২০ জুলাই ২০১৮

জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ঠেকাতে ১৯৭৯ সালে এক সন্তান নীতি চালু করে চীন৷ ২০১৬ সালে এসে অনুমতি দেয়া হয় দুই সন্তান নেয়ার৷ কিন্তু জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের এই পদ্ধতি কতটা কার্যকর হয়েছে?

https://p.dw.com/p/31ngL
China Familie mit Baby in Nanjing
ছবি: picture-alliance/dpa/Yu Ping

প্রায় চার দশক পর দুই সন্তান নীতি গ্রহণ করার পর ২০১৭ সালে দেশটিতে জন্মহার বেড়েছে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ৷ চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন বলছে, ২০২০ সাল নাগাদ শিশু জন্মের হার ১ দশমিক ৭ থেকে ২ কোটিতে পৌঁছাবে৷ ২০৫০ সাল নাগাদ ৩ কোটি তরুণ যোগ দেবে চীনের জনশক্তিতে৷

এক সন্তান নীতির ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঠেকানো গেলেও একই সাথে কমেছে তরুণ ও যুবকদের সংখ্যাও৷ অন্যদিকে চীনের জনশক্তিতে বেড়েছে বয়স্কদের সংখ্যা৷

তবে দুই সন্তান নীতি চীনের এই সমস্যার দ্রুতই কোনো সমাধান আনতে পারছে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ অস্ট্রেলিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক গবেষণা বলছে, এক সন্তান নীতির পরিবর্তনে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে মোটে বার্ষিক ০ দশমিক ৫ শতাংশ৷ বয়স্কনির্ভরতা বাড়বে খুব বেশি হলে ০ দশমিক ০৩ শতাংশ৷

সাফল্য, নাকি ব্যর্থতা?

অনেকেই এক সন্তান নীতিকে চীনের বয়স্কনির্ভরতার জন্য দায়ী করলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, গত তিন দশকে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি এই নীতি৷

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. ফ্যাং ওয়াং বলছেন, এই নীতির ফলে বাবা-মাকে সন্তানের পেছনে কম খরচ করতে হয়েছে, ফলে তাঁদের সঞ্চয় বেড়েছে৷ পাশাপাশি সন্তানের শিক্ষার পেছনে বাবা-মা খরচও বেশি করতে পেরেছেন, ফলে মানসম্মত শিক্ষাও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে৷

ওয়াং ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই প্রজন্মের বেশিরভাগই উচ্চশিক্ষিত এবং তাঁরা অর্তনীতিতে বেশ কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছে৷''

তবে আছে এর বিপরীত দিকও৷ এক সন্তান নীতির ফলে প্রচুর পরিবার বাস্তবে সন্তানহীন হয়ে পড়েছে৷ বৃদ্ধ বয়সে দেখভাল করার মতোও কেউ থাকছে না৷ ফলে চীনের যে পারিবারিক ঐতিহ্য, তা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে৷

ওয়াং বলছেন, ‘‘এক সন্তান নীতির ফলে চীন স্বল্পমেয়াদি লাভ পেয়েছে, কিন্তু এটা অনেকটা পুকুর সেচে মাছ সংগ্রহের মতো৷ পানি না থাকলে এক সময় মাছই মিলবে না৷''

এক সন্তান নীতি বাস্তবায়নে উঠেছে মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগও৷ দেশজুড়ে বলপূর্বক এই নীতি কার্যকর করা হয়৷ গত শতকের আশির দশকে এই নীতি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে অনেক নারীকে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করা হয়েছে, অনেককে বরণ করতে হয়েছে বন্ধ্যাত্ব৷

মানুষকে শুধুই সংখ্যা হিসেবে বিবেচনা করার এ পদ্ধতির নীতিগত বিরোধিতা করছেন গবেষকরাও৷ তাঁরা বলছেন, ১৯৭০ সালে দক্ষিণ কোরিয়া এবং ১৯৮০-তে ভারত জন্ম নিয়ন্ত্রণে জোর দিলেও কেউই ‘এক সন্তান নীতি' বাস্তবায়নের কথা চিন্তাও করেননি৷

স্বল্পমেয়াদি লাভের বদলে পরিবার, দেশ এবং সমাজে এর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, তাতে এই নীতি কোনো দেশের জন্যই অনুসরণীয় হওয়া উচিত না বলেও মত গবেষকদের৷

উইলিয়াম ইয়াং (তাইপে থেকে)/এডিকে

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান