1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চারদিন পর ভোট, জানেন না ভোটার

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপনির্বাচন৷ কিন্তু ওই এলাকার অনেক ভোটার তা জানেনই না৷ আর যারা জানেন তাদের মধ্যেও নির্বাচন নিয়ে নেই তেমন আগ্রহ৷

https://p.dw.com/p/3DxjP
Bangladesch Dhaka Wahlen
ছবি: DW/A. Islam

মিরপুর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে৷ সেখানকার বাসিন্দা ফখরুল ইসলাম৷ ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উপনির্বাচন কবে? ‘‘ভোটের তারিখ আমি জানিনা৷ তবে শুনেছি ভোট হবে,'' জবাব দেন ফখরুল৷ ‘‘কোনো প্রার্থী আমাদের এলাকায় ভোট চাইতে আসেননি৷ আর আমাদের এলাকায় কোনো মিছিল মিটিংও এখন পর্যন্ত আমার চোখে পড়েনি৷''

শক্ত বিরোধী দল না থাকায় এই ভোট নিয়ে আগ্রহ কম বলে মনে করেন তিনি৷ ‘‘নির্বাচনে যেহেতু বিরোধী দল বিএনপি নেই তাই কোনো লড়াই হচ্ছেনা৷ ফলে প্রার্থীদেরও তৎপরতা নেই৷ ভোটারদেরও আগ্রহ নেই,'' বলেন তিনি৷

‘ভোটের তারিখ আমি জানিনা’

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আরেক বাসিন্দা রেজাউল করিম পাটোয়ারী৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘২৮ ফেব্রুয়ারি আমাদের এলাকার সরকারি বেসরকারি অফিস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে৷ আমি এই নোটিশ পাওয়ার পর জানতে পেরেছি ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন৷ অনেকেই এভাবে জেনেছেন৷ আর সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে আমি কোনো আগ্রহ দেখছিনা৷ কিছু পোস্টার চোখে পড়েছে এই যা৷ কোনো মিছিল বা মিটিং আমার চোখে পড়েনি৷''

নগরবাসীর আরো কয়েকজনের সাথে উত্তর সিটির নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে গেলে ২৮ তারিখ নির্বাচন শুনে তারা যেন আকাশ থেকে পড়েন৷ তারা বলেন, ‘‘নির্বাচন হবে শুনেছি, তবে ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন! সেটাতো জানিনা৷''

২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে মেয়র পদ শূন্য হয়৷ নির্বাচন কমিশন গত বছরের ২৬ জানুয়ারি মেয়র পদে উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছিল৷ কিন্ত তার আগেই ঐ বছরের ১৪ জানুয়ারি মেয়র পদে উপনির্বাচন ছয় মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট৷

গত ১৬ জানুয়ারি হাইকোর্ট জানায়, ডিএনসিসি উপনির্বাচনে আর কোনো বাধা নেই৷ এরপর নির্বাচন কমিশন ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের দিন ঠিক করে৷

‘ভোটের ব্যাপারে মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে’

প্রথমবার উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল৷ কিন্তু ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়৷ ২৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি ও বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট৷

দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে এবার মোট মেয়র প্রার্থী ৫ জন৷ আওয়ামী লীগ থেকে আতিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি থেকে শাফিন আহমেদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি থেকে আনিসুর রহমান দেওয়ান, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির শাহীন খান ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রহিম৷

প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির শাহীন খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি তো ব্যাপকভাবে নির্বাচনী প্রচার করছি৷ বিশাল গাড়িবহর নিয়ে আজকেও (শনিবার) র‌্যালি করেছি৷ কিন্তু মানুষের নির্বাচন নিয়ে কোনো আগ্রহ দেখতে পাচ্ছিনা৷''

কেন আগ্রহ নেই জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর ভোটের ব্যাপারে মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে৷ তাদের মন খারাপ৷ ওদের কথা হলো, রাতেই ভোট হয়ে যায়, প্রার্থীকে ভোট দিয়ে কী লাভ?''

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘আমার মনে হয় না মানুষ ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে যাবে৷ ফাইভ পার্সেন্টও যাবে বলে আমার মনে হয়না৷''

জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাফিন আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অন্যরা কি করছেন তা আমি বলতে পারবো না৷ তবে আমি আমার নির্বাচনি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি পুরোদমে৷ আমরা শেষ দিন পর্যন্ত নির্বাচনে থাকব৷''

‘শেষ দিন পর্যন্ত নির্বাচনে থাকব’

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘আমার মত একজন প্রার্থী থাকায় মানুষ ভোট নিয়ে আগ্রহ পাচ্ছে৷ আমি ভিন্ন ধারার (ব্যান্ড সঙ্গীত শিল্পী)৷ রাজলনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষ নই৷ আমি যখন পথে নামি তখন মানুষ আমাকে নিয়ে আগ্রহ দেখায়৷''

এদিকে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম অল্প বিস্তর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ তবে সংবাদ মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না বলে তার জনসংযোগ দপ্তর থেকে জানানো হয়৷ আর তাঁকে সরাসরি ফোন করলে তিনি প্রচার সভায় থাকায় কথা বলতে পারেননি৷

২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ২৮টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদেও নির্বাচন হবে৷ উত্তরের ১৪টি এবং দক্ষিণের ১৪টি ওয়ার্ড৷ সীমানা জটিলতার কারণে আগে ওই ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচন হয়নি৷ ঐ ওয়ার্ডগুলোতে অবশ্য কাউন্সিলার পদে প্রচার প্রচারণা জমজমাট বলেই জানা গেছে৷

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মোট ভোটার সংখ্যা ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৪৷ তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ২৪ হাজার ৭০১ জন৷ আর নারী ভোটার ১১ লাখ ২০ হাজার ৬৭৩ জন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য