গাদ্দাফির খেলা প্রায় শেষ, জাতীয় ঐক্যের চেষ্টা চলছে
২৫ আগস্ট ২০১১মুয়াম্মার গাদ্দাফির গোপন ডেরার হদিশ পেয়ে তাকে ঘিরে ফেলা হয়েছে বলে যে খবর শোনা যাচ্ছে৷ তবে লিবিয়ার বিদ্রোহীদের এই ধরণের দাবি সম্পর্কে আগের তুলনায় অনেক সতর্ক হয়ে গেছে গোটা বিশ্ব৷ এর আগে গাদ্দাফির পুত্র সাইফকে আটকের দাবিও পরে ভুল প্রমাণিত হয়৷ যাই হোক, বিদ্রোহীদের একটি গোষ্ঠীর ধারণা, গাদ্দাফির ক্ষমতার প্রাণকেন্দ্র বাব আল আজিজিয়া কমপ্লেক্সের কাছে এক আবাসনের কোনো একটি ফ্ল্যাটে লুকিয়ে রয়েছেন গাদ্দাফি ও তাঁর পুত্ররা৷ তাদের এই অনুমানের কারণ অবশ্য জানা যায় নি৷ গাদ্দাফির অনুগত যোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের জোরালো সংঘর্ষ চলছে৷ মুহাম্মদ গোমা নামের এক বিদ্রোহী যোদ্ধা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘‘গাদ্দাফি সপরিবারে এক গর্তের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে৷ আজই আমরা এই যুদ্ধ শেষ করবো৷'' এদিকে প্যারিসে বিদ্রোহীদের প্রতিনিধি মনসুর সাঈফ আল নাসর জার্মানির ডিপিএ'কে বলেছেন, গাদ্দাফি ত্রিপোলি এলাকায় লুকিয়ে রয়েছেন বলে তাদের কাছে পাকা খবর আছে৷
ত্রিপোলির পরিস্থিতি
গোটা রাজধানী এখনো বিদ্রোহীদের দখলে আসে নি৷ এর মধ্যে বিদ্রোহী পরিষদের প্রধান আব্দেল জলিল বলেছেন, অহেতুক রক্তপাত এড়াতে তারা গাদ্দাফি বাহিনী নিয়ন্ত্রিত এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত৷ তিনি দেশের স্থিতিশীলতা নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন৷ দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, জাতীয় সম্পদ মানুষের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে৷ তিনি দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে বিপ্লবে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন৷
গাদ্দাফি-পরবর্তী পরিস্থিতি
গাদ্দাফি ও তার অনুগতদের পক্ষে যে আর ক্ষমতায় ফেরার কোনো সম্ভাবনা নেই, তা পুরোপুরি স্পষ্ট৷ কিন্তু এর বিকল্প কাঠামো এবং ক্ষমতায় আসার পর বিদ্রোহীদের আচরণ সম্পর্কে অনেক আগাম শঙ্কার কথা শোনা যাচ্ছে৷ বিদ্রোহীদের ঐক্য সম্পর্কে শুরু থেকেই সন্দেহ ছিল৷ এবিষয়ে সচেতন বিদ্রোহীরা অবশ্য বার বার যাবতীয় সংশয় কাটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে৷ তাদের শীর্ষ প্রতিনিধি মাহমুদ জিব্রিল এপ্রসঙ্গে আর্থিক স্থিতিশীলতাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন৷ বৃহস্পতিবার রোমে ইটালির প্রধানমন্ত্রী সিলভিয়ো বার্লুস্কোনির সঙ্গে আলোচনার পর তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব গাদ্দাফি-পরবর্তী লিবিয়াকে যথেষ্ট সাহায্য না দিলে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে৷ উল্লেখ্য, ইটালি সহ একাধিক দেশ ইতিমধ্যেই নিজেদের দেশে গাদ্দাফি প্রশাসনের বাজেয়াপ্ত অর্থের একাংশ অবিলম্বে বিদ্রোহীদের হাতে তুলে দেওয়ার কাজ করছে, যাতে তাদের গোটা দেশের হাল ধরতে বেশি সমস্যা না হয়৷ রোম প্রায় ৩৫ কোটি ইউরো হস্তান্তর করছে৷ রাশিয়া ও চীন জাতিসংঘের উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছে৷ বিশেষ করে দেশের পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের কেন্দ্রীয় ভূমিকার দাবি করেছে তারা৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক