গাজায় অস্ত্রবিরতির জোরালো উদ্যোগ সত্ত্বেও সংশয়
১ মে ২০২৪সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসকে দমন করতে গাজায় ইসরায়েলের অভিযানকে ঘিরে দেশেবিদেশে বিতর্কের শেষ নেই৷ প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু সেখান থেকে হামাসকে নির্মূল করতে যাবতীয় পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর৷ সেনা অভিযানের চাপে হামাসের নেতারা রাফা শহরে আত্মগোপন করে আছেন বলে ইসরায়েল মনে করছে৷ কিন্তু সেখানে সামরিক অভিযান চালালে স্থানীয় বাসিন্দা ও গাজার বাকি অংশ থেকে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১২ লাখ শরণার্থীর জীবন বিপন্ন হবে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ নেতানিয়াহুকে সতর্ক করে দিচ্ছে৷ ইসরায়েলি পণবন্দিদের মুক্তির বদলে অস্ত্রবিরতি সংক্রান্ত বোঝাপড়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে আসছে৷
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেশ রাফাহ শহরে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন৷ তিনি ইসরায়েলের উপর প্রভাব রাখতে পারে এমন সব দেশের উদ্দেশ্যে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে এমন অভিযান বন্ধ করার চেষ্টার আবেদন জানিয়েছেন৷ জাতিসংঘের সাহায্যকারী সংস্থার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, রাফা শহরে স্থলবাহিনীর অভিযান হলে সেই ট্র্যাজিডি বর্ণনা করার শব্দ থাকবে না৷
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ইসরায়েলসহ কয়েকটি আঞ্চলিক দেশ সফর করে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন৷ ‘টাইমস অফ ইসরায়েল' সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী বুধবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলের সরকার হামাসের অস্ত্রবিরতির প্রস্তাবের জবাব দিতে চলেছে৷ ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল' সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী কয়েকটি আঞ্চলিক দেশের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে মার্কিন প্রশাসন এক সার্বিক শান্তি প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করেছে৷ এর আওতায় দুটি ধাপে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে একাধিক ইসরায়েলি পণবন্দিদের মুক্তি দেবে হামাস৷ এ ছাড়া দশ সপ্তাহের এক অস্ত্রবিরতিও কার্যকর হওয়ার কথা৷ ব্লিংকেন ইসরায়েলের এমন ‘উদার' মনোভাবের প্রশংসা করেছেন এবং হামাসের উদ্দেশ্যে সেই প্রস্তাব মেনে নেওয়ার ডাক দিয়েছেন৷ তিনি বুধবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে গাজায় আরো ত্রাণ পাঠানোর বিষয়েও আলোচনা করছেন৷
বন্দি বিনিময় ও অস্ত্রবিরতি সংক্রান্ত প্রস্তাব সত্ত্বেও মঙ্গলবার ইসরায়েলপ্রধানমন্ত্রী রাফা শহরে সামরিক অভিযানের ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ তাঁর দফতরের এক বিবৃতি অনুযায়ী, সেখানে হামাসের শেষ ঘাঁটি থেকে গেছে৷ তাই সব লক্ষ্য পূরণের আগে যুদ্ধ বন্ধ করার প্রশ্নই ওঠে না৷ বোঝাপড়া হোক বা না হোক, রাফা থেকে হামাসের ব্যাটেলিয়ন নিশ্চিহ্ন করা হবে৷ মূলত জোট সরকারের কট্টর জাতীয়তাবাদী শরিকদের চাপে নেতানিয়াহু সেই অভিযানের প্রস্তুতি চালাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ এমনকি সেই পদক্ষেপ না নিলে তাঁর জোট সরকার ভেঙে যেতে পারে বলেও কয়েকজন মন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মত্রিচ হামাসের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করে চলেছেন৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এপি)