আল-আকসা মসজিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
জেরুসালেমের পুরনো অংশে অবস্থিত আল-আকসা কমপ্লেক্স মুসলমানদের কাছে তৃতীয় পবিত্র একটি স্থান৷ আর কমপ্লেক্সটি যেখানে অবস্থিত সেটি ইহুদিদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র স্থান৷
মুসলমান ও ইহুদিদের কাছে পবিত্র
জেরুসালেমের পুরনো অংশে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের কাছে মক্কা ও মদিনার পর তৃতীয় পবিত্রতম স্থান৷ আর মসজিদটি যেখানে অবস্থিত সেটি ইহুদিদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র স্থান৷
কোথায় অবস্থিত?
জেরুসালেমের পুরনো অংশে অবস্থিত এক পাহাড়ে আল-আকসা কমপ্লেক্স অবস্থিত৷ সেখানেই মসজিদটি আছে৷ ইহুদিরা ঐ পাহাড়কে টেম্পল মাউন্ট বলে৷ আর মুসলমানদের কাছে এটি পরিচিত আল-হারাম আল-শরিফ নামে৷ ছবিতে সোনালি গম্বুজের স্থাপনার ডানপাশে গাছগাছালির পর যে স্থাপনা দেখা যাচ্ছে সেটি আল-আকসা মসজিদ৷ অনেকে সোনালি গম্বুজের স্থাপনাটিকে আল-আকসা মসজিদ মনে করেন৷ কিন্তু এটি আসলে কুব্বাতুস সাখরা (ডোম অফ দ্য রক)৷
মসজিদটি মুসলমানদের কাছে কেন পবিত্র
২০১৯ সালে প্রথম আলোতে এক প্রবন্ধে বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব ও আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজমের সহকারী অধ্যাপক শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী লিখেছিলেন, মুহাম্মদ (সা.) মিরাজ গমনের সময় আল-আকসা মসজিদে সব নবী-রাসুলের ইমামতি করে নামাজ আদায় করেছিলেন৷ এছাড়া ঐ এলাকা অসংখ্য নবী-রাসুলের স্মৃতিবিজড়িত এবং এর আশপাশে অনেক নবী-রাসুলের সমাধি রয়েছে৷ মসজিদটি অষ্টম শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল৷
ইহুদিদের কাছে পবিত্র হওয়ার কারণ
আল-আকসা কমপ্লেক্সের পাশে থাকা ‘ওয়েস্টার্ন ওয়াল’ ইহুদিদের কাছে পবিত্র একটি স্থান৷ আর যে পাহাড়ে আল-আকসা কমপ্লেক্স অবস্থিত সেটি ইহুদিদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র স্থান৷ ইহুদিদের বিশ্বাস, তিন হাজার বছর আগে বাইবেলের চরিত্র রাজা সলোমোন সেখানে একটি মন্দির নির্মাণ করেছিলেন৷ পরে দ্বিতীয় মন্দিরটি রোমানরা ৭০ সালে ধ্বংস করে দিয়েছিল৷
নিয়ন্ত্রণ কার হাতে?
১৯৬৭ সালে ছয়দিনের যুদ্ধের পর ইসরায়েল কমপ্লেক্স এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাকি পূর্ব জেরুসালেম ও পশ্চিম তীরের সঙ্গে যুক্ত অংশের সঙ্গে জুড়ে দেয়৷ তবে এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি৷ বর্তমানে ‘জেরুসালেম ওয়াকফ’ সংগঠনের মাধ্যমে জর্ডান আল-আকসা কমপ্লেক্সটি পরিচালনা করছে৷ কারণ জর্ডানের শাসক হাশেমাইট পরিবার জেরুসালেমের মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের পবিত্র স্থানগুলোর রক্ষক৷
প্রার্থনার অনুমতি শুধু মুসলমানদের
আল-আকসা কমপ্লেক্স পরিচালনায় দীর্ঘদিন ধরে যে নিয়ম বজায় আছে, সেটি অনুযায়ী অমুসলিমরা কমপ্লেক্সটি পরিদর্শন করতে পারেন, কিন্তু মসজিদ কমপ্লেক্সে প্রার্থনা করার অনুমতি একমাত্র মুসলমানদের৷ কিন্তু ইহুদি দর্শনার্থীদের মধ্যে নিয়ম না মেনে সেখানে প্রায় প্রকাশ্যে প্রার্থনা করার সংখ্যা বাড়ছে৷
বিভিন্ন সময়ে সংঘাত
আল-আকসা কমপ্লেক্সে মুসলমানদের প্রবেশে ইসরায়েলের বাধার কারণে বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ ও সংঘাত হয়েছে৷ ২০০০ সালে ইসরায়েলের তৎকালীন বিরোধী নেতা অ্যারিয়েল শ্যারন কয়েকজন ইসরায়েলি সাংসদকে নিয়ে টেম্পল মাউন্ট/আল-হারাম আল-শরিফ কমপ্লেক্সে প্রবেশ করেছিলেন৷ ফিলিস্তিনিরা এর প্রতিবাদ করলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছিল (ছবি)৷ পরে সেটি ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় গণবিক্ষোভে (এটি আল-আকসা ইন্তিফাদা নামেও পরিচিত) রূপ নিয়েছিল৷