1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গণভবনে জোটের ভাগ্যলিখন

৪ ডিসেম্বর ২০২৩

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের শরিকেরা আসন ভাগাভাগির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন৷

https://p.dw.com/p/4Zkgr
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের শরিকেরা আসন ভাগাভাগির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন৷ছবি: PID Bangladesh government

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যাই বলুক না কেন দলের সভাপতি ও জোট নেতা শেখ হাসিনা তাদের প্রতি সুবিচার করবেন বলেই তাদের বিশ্বাস৷ আর সেই সিদ্ধান্ত হতে পারে সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে ১৪ দলের নেতাদের বৈঠকে৷

অবশ্য তাদের আশঙ্কা, বিএনপি ও তাদের সমমনা অনেকে নির্বাচন বর্জন করায় অনেক দলকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনে আনা হয়েছে৷ তাদের জন্যও আওয়ামী লীগকে ছাড় দিতে হবে৷ জাতীয় পার্টির সঙ্গে মহাজোট কার্যকর না থাকলেও তারাও আসন সমঝোতা চায়৷ সবমিলিয়ে ১৪ দলের শরিকদের আশা কতটা পুরণ হবে সেটা ঠিক ধারণা করা যাচ্ছে না৷

আওয়ামী লীগ এবার ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮ আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছে৷ নারায়ণগঞ্জ-৫ ও কুষ্টিয়া-২ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি৷ কুষ্টিয়া-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সাধারণ সম্পাদক হাসানুল হক ইনু৷ অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির এ কে এম সেলিম ওসমান৷ তিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি শামীম ওসমানের ভাই৷

১৪ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে হাসানুল হক ইনুর আসন ছাড়া আর সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ৷ আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার পরই তাই কথা ওঠে জোটের শরিকদের কী হবে? আওয়ামী লীগের কাছে কি ১৪ দলীয় জোটের গুরুত্ব কমে গেল?

জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা ও জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতারসহ জোট শরিকদের আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে৷ তবে জোটের যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন যে তারা জোটগতভাবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবেন৷ ফলে আসন সমঝোতা হলে তারা নৌকা প্রতীক পাবেন৷

একাদশ জাতীয় সংসদে ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির তিনজন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) তিনজন, জাতীয় পার্টির (জেপি) একজন এবং তরীকত ফেডারেশনের একজন সংসদ সদস্য আছেন৷

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বচনে ১৪ দলীয় জোট ও মহাজোটকে (বিকল্প ধারা, জাতীয় পার্টি) ছেড়ে দেওয়া ৩১টি আসনে নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ৷ ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের কথা এবার যেহেতু বিএনপি নির্বাচনে নেই তাই তারা আরো বেশি আসন পাওয়ার দাবিদার৷

জোটের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা আওয়ামী লীগের কাছে ৩০টির বেশি আসন চাইবে৷ কারণ বিএনপির বর্জনের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা ১৩টি আসনে পাস করেছিলো৷ এরইমধ্যে প্রার্থীদের তালিকা পাঠানো হয়েছে আওয়ামী লীগের কাছে৷

কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ের মধ্যেই গত ২৫ নভেম্বর ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা এখনও ঠিক করিনি শরিকদের আসলে আমাদের প্রয়োজন আছে কিনা৷ জোটের বিপরীতে জোট, আমাদের প্রতিপক্ষ যদি বড় জোট করতো, তাহলে তার বিপরীতে আমাদের জোট হতো৷ তাছাড়া আমরা কেন অহেতুক জোট করতে যাবো? প্রয়োজন না থাকলে তো জোট করব না৷ আর জোট করব যাদের নিয়ে, তাদের তো মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে৷’’

‘আসন বণ্টন মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে করলে বিভ্রান্তি কম হতো’

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘তিনি যা বলেছেন বলুন৷ কিন্তু জোটনেত্রী তো এর আগে আমাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন, রাজনৈতিক কারণেই ১৪ দলের ঐক্য রাখতে হবে৷ তা না হলে ভোটের পরে আবার রাজনৈতিক সমস্যা শুরু হবে৷ সেটা মেকাবেলা করার আগেই ভোটের আগে এবং পরে জোট লাগবে৷ তবে জোটের সঙ্গে আসন বণ্টন মনোনয়ন পত্র দাখিলের আগে করলে বিভ্রান্তি কম হতো৷ নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত থাকতেন৷ আমরা এটা আগেও বলেছিলাম৷ যা হোক প্রধানমন্ত্রী বৈঠক ডেকেছেন আসন বণ্টন হয়ে যাবে৷ সেটা ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগেই হবে৷ কারণ তারপর তো আর সুযোগ থাকবে না৷’’

তার কথা, ‘‘গণভবনের বৈঠকে মূলত রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা হবে৷ চলমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করে কীভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু করা যায়৷ নির্বাচনের পরেও ঝামেলা হতে পারে তা কীভাবে মোকাবেলা করা হবে৷ আর আসন ভাগাভাগি এভাবে ওপেন বৈঠকে হয় না৷’’

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া আসলে কোনো আশা নিয়ে বৈঠকে যাচ্ছেন না৷ তিনি বলেন, ‘‘আগেও আমাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি৷ এবার দেয়া হবে কী না জানি না৷ এটা তো প্রধানমন্ত্রীর হাতে৷ তিনি যদি মনোনয়ন দেন তো ভালো৷’’

বিএনপি না আসায় বেশ কিছু দলকে নির্বাচনে আনা হয়েছে: নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী

তার কথা, ‘‘নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনা আছে৷ প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা তো আর আমরা জানি না৷ তিনি কীভাবে শরিকদের দেবেন৷ তার কি পরিকল্পনা সেটা তিনিই জানেন৷’’

তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ‘‘আমিসহ আরো যারা জোট থেকে এমপি হয়েছেন তারা প্রায় সবাই জোটের মনোনয়ন পাবেন বলে মনে হচ্ছে৷ এরমধ্যে আমি , রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু-এই চারজনকে ঠিক রেখে তারপর আরো মনোনয়ন দেয়া হবে৷’’

তার কথা, ‘‘এবার কিছু সমস্যা আছে৷ বিএনপি না আসায় বেশ কিছু দলকে নির্বাচনে আনা হয়েছে৷ তারা সবাই এখন জোট করতে চায়৷ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করতে চায়৷’’

তিনি বলেন, ‘‘বৈঠকে রাজনৈতিক বিষয়েই মূলত কথা হবে৷ নির্বাচনের আগে ও পরের পরিস্থতি কীভাবে মোকাবেলা করা হবে৷ আন্তর্জাতিক চাপ নির্বাচনের পরে বাড়লে আমরা কীভাবে মোকাবেলা করব৷ আর আসন ভাগাভাগির জন্য আমাদের তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছি৷ এখন প্রধানমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দেবেন৷ সেখানে ১৪ দলের সমন্বয়ক থাকবেন৷ আমরাও থাকব৷ আলোচনা করে আমরা ঠিক করে নেব৷’’

১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ১৪ দলের নেতাদের উদ্দেশে প্রথমে বক্তব্য দেবেন৷ এরপর ওনারা ওনাদের চাওয়া পাওয়ার কথা বলবেন৷ তারপর প্রধানমন্ত্রী নিজেই কাকে কোন আসন দেবেন জানিয়ে দেবেন৷’’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,"কোনো কমিটি নয়, প্রধানমন্ত্রী যাকে দেয়ার জোটের মনোনয়ন দিয়ে দেবেন৷”

এর আগে জোট নেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনা সর্বশেষ বৈঠক করেন গত ১৯ জুলাই৷

১৪ দলীয় জেটের শরিকদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ছাড়াও আছে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), সাম্যবাদী দল, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাপ, গণআজাদী লীগ, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, বাসদ, তরিকত ফেডারেশন, জেপি৷

বিএনপিকে কারাগারে রেখে আওয়ামী লীগের নির্বাচন?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য