খোকার কথা শুনলেই ধর্ষণ কমবে
৬ অক্টোবর ২০২০কিন্তু এক ধরনের প্রশ্রয় আর বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং তার ওপর বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা দূর না হলে ধর্ষণ, নিপীড়ন কি কমবে? সে আশা করা যায়?
প্রশ্রয় কে বা কারা দেয়? কারা একেবারেই দেয় না? নোয়াখালীর বিভৎস ঘটনার পর থেকে অনেকগুলো ধর্ষণের খবরই তো এসেছে৷ কোথাও গৃহকর্মীকে ধর্ষণ, কোথাও স্কুলছাত্রী বা কোথাও মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের শিকার৷ কোথাও দলীয় পরিচয়ে আলাদা করা যাবে ধর্ষককে৷ কোথাও বড় করে দেখানো যেতে পারে পেশাগত পরিচয়৷ তবে সবক্ষেত্রে একটা পরিচয় ‘কমন'৷ তারা সবাই ধর্ষক৷ প্রচলিত আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা দরকার সবার৷
কিন্তু দল, স্কুল বা মাদ্রাসা, কিংবা সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলো থেকে কি ধর্ষকের শাস্তির জোর দাবি উঠেছে?কেন ওঠেনি? কেন ওঠে না?
তাহলে কি ক্ষমতার বলয়ে এবং সেই বলয়ের বাইরে যার যার অবস্থান থেকে ধর্ষক, নিপীড়ককে প্রকারান্তরে ‘ছাড়’ দেয়ার প্রচ্ছন্ন প্রবণতা খুব কাজ করে?
এসব প্রশ্নের জবাবেই রয়েছে ধর্ষণ এবং নারীর প্রতি সহিংসতাবিরোধী চলমান ক্ষোভ-বিক্ষোভ-প্রতিবাদের অনিবার্য পরিণতি৷
কাজী নজরুল ইসলামের ‘খোকার সাধ’ কবিতায় খোকার বড় সাধ হয়েছিল সকাল বেলার পাখি হয়ে সবার আগে, এমনকি সূয্যি মামাও জাগার আগে কুসুমবাগে জেগে ওঠার৷‘‘হয়নি সকাল ঘুমো এখন’’ বললে মা-কে সে বলতে চেয়েছিল,
‘‘হয়নি সকাল- তাই বলে কি সকাল হবে না ক?
আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে?
তোমার ছেলে উঠলে গো মা রাত পোহাবে তবে!’’
সবাই না ‘জাগলে’, দল-মত-পেশা-ধর্ম-নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই ধর্ষণ, নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে, সব ধর্ষক, নির্যাতনকারীর সাজা সমানভাবে সবাই চাইতে না পারলে কোনো পরিবর্তন কি আসবে কখনো?
গতবছর ৬ অক্টোবরের ছবিঘরটি দেখুন...