ক্রীড়াঙ্গনে নারী-পুরুষ বৈষম্য: ‘অজুহাতেই’ স্বস্তি বাংলাদেশের
২৮ অক্টোবর ২০২২দূরের নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে প্রতিবেশী ভারতও রয়েছে সেই তালিকায়৷ কিন্তু বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন এখনো নারীকে অল্পে সন্তুষ্ট রাখার কৌশলেই যেন তৃপ্ত৷
সাকিব আল হাসান কিংবা জামাল ভূঁইয়াকে নিয়ে কম মাতামাতি হয় না৷ দুজনেই যার যার জায়গা থেকে দর্শকদের বিনোদিত করে যাচ্ছেন৷ কিন্তু তাদের সব সাফল্যই বলতে গেলে কোনো দেশের বিপক্ষে জয় কিংবা ব্যক্তিগত অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ৷ দেশের হয়ে দলীয় ‘বড়’ কোনো সাফল্য নেই বললেই চলে৷ আরো পরিষ্কার করে বললে এখন পর্যন্ত মহাদেশীয় কোনো ট্রফি জেতেননি কেউই!
ক্রিকেটে সাকিব আর ফুটবলে জামাল ট্রফি জিততে না পারলেও মেয়েরা কিন্তু দারুণ সফল৷ ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপ জেতা, কিংবা সাফ ফুটবলে ট্রফি জেতা কিন্তু মেয়েদেরই কৃতিত্ব৷ অথচ সাফল্যে কিছু ক্ষেত্রে বেশ এগিয়ে গেলেও পুরুষদের তুলনায় আর্থিক সুবিধাদির বেলায় মেয়েরা এখনো অনেকটা পিছিয়ে৷
দেশে দৃশ্যত সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটের কথাই ধরুন৷ এ-প্লাস গ্রেডে থেকে একজন ক্রিকেটার টেস্ট ও ওয়ানডে খেলে মাসে পান সাড়ে ৮ লাখ টাকা৷ কারো কারো বেতন আরো বেশি৷ এছাড়া এ-গ্রেডে টেস্ট ও ওয়ানডেতে খেলে একজন খেলোয়াড় পান সাড়ে ৬ লাখ টাকা ৷ আর সবশেষ ডি-গ্রেডে তিন সংস্করণে পান তিন লাখ টাকা করে৷ বাংলাদেশের মেয়েরা টেস্ট খেলছেন না৷ তবে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলছেন৷ কিন্তু বেতনের দিক থেকে পুরুষদের কাছাকাছিও তারা নেই৷ এ-গ্রেডভুক্ত মেয়েরা মাসে বেতন পাচ্ছেন ৮০ হাজার টাকা৷ সবশেষ ডি-গ্রেডে বেতন ধরা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা ৷ নারী ও পুরুষদের মধ্যে বেতনের পার্থক্য প্রায় ১২ গুণ!
শুধু বেতন নয় ম্যাচ ফি-তেও আছে বড় ব্যবধান৷
জাতীয় নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল৷ বৈষম্যের বিষয়ে নিগার শুরুতেই পাল্টা প্রশ্ন করলেন, ‘‘এটা তৈরি করছে কে? এটার মেকারটা কে আসলে? আগে থেকে দেখে আসছি আমাদের দেশে কিংবা দেশের বাইরে বলেন, কালচারটা এভাবে তৈরি হয়ে আছে৷ যদি কালচারটা অন্যভাবে হয়ে আসতো, তাহলে আজ এই অবস্থা দাড়াতো না৷ তাই মনে হয় সমস্যাটা কালচারে৷ পুরুষশাসিত সমাজ কিংবা পুরুষরা সমাজে ডমিনেট করে চলবে৷ এই বিষয়গুলো আগে থেকেই ‘গ্রো’ হয়ে আসছে৷ এই জন্য এমনটি হয়ে থাকে৷’’
বৈষম্য কমানো উচিত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নিগার সপাটে ব্যাট চালালেন যেন, ‘‘খেলা বলেন বা অন্য সেক্টরের কথা বলেন, নারীরা কিন্তু ধীরে ধীরে উঠে আসছে৷ ধারাবাহিকভাবে নিজেদের সফলতার পরিচয় দিয়ে আসছে৷ মেয়েরা যদি আরো সাপোর্ট পায়, এই ধরেন সমাজ, পরিবার বা দেশ থেকে, তাহলে নিজেদের মধ্যে যে সক্ষমতা আছে, তার থেকে আরো বেশি কাজ করার স্পৃহা তৈরি হবে৷ ভালো করবে৷’’
বৈষম্য কমিয়ে আনার দিকে জোর দিয়ে পাশাপাশি বাস্তবতা বুঝে মাটিতেই পা রাখছেন নিগার৷ সমান পারিশ্রমিক ও সুবিধাদির প্রসঙ্গে যেন তিনি পরিস্থিতি বুঝে মন্তব্য করলেন, ‘‘অর্থনৈতিক সুবিধা বা অন্য কিছুর কথা যদি বলেন, তা টোটালি নির্ভর করে আমাদের অবকাঠামোটা কেমন, সেটার ওপর৷ আমাদের ক্রিকেটের উদাহরণ যদি দেই, তাহলে নারীদের খেলাতে আপনি কয়টা স্পন্সর দেখতে পান? নেই বললেই চলে৷ সেই জায়গায় ছেলেদের বিপিএল কিংবা যে কোনো টুর্নামেন্ট যদি হয়, তাহলে স্পন্সরের সংখ্যা বেশি থাকে৷ এখান থেকে বুঝতে পারবেন ব্যবধানটা৷ এখন ক্রিকেট বোর্ড যদি আমাদের কিছু দিতে চায়, তাহলে ব্যক্তিগতভাবে দেবে না, যে কোনো স্পন্সরশিপের মাধ্যমে বা ফ্র্যাঞ্চাইজির মাধ্যমে হোক, তারা বেয়ার করে৷ তারা ব্যক্তিগতভাবে চাইলেও পারে না, কেননা, আমরা সেভাবে স্পন্সরশিপ পাই না৷ তবে গ্রো করার সুযোগ আছে৷ তা মিডিয়ার মাধ্যমে৷ নারীদের ক্রিকেটকে যত প্রমোট করবে ততই ভালো৷ এভাবে যে. মেয়েরা শুধু ছেলেদের পাশাপাশি নয়, মেয়েরাই ভালো করছে টোটাল স্পোর্টসে৷ মেয়েরা সম্মান নিয়ে আসছে সব জায়গায়, অনেক ক্ষেত্রে পুরষদের চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে৷’’
তবে নিগার মনে করেন ক্রীড়াঙ্গনে পুরুষদের চেয়ে নারীদের আত্মত্যাগ অনেক বেশি, ‘‘বাংলাদেশের জার্সি পরে আমরাও খেলি৷ সাকিব ভাইরাও খেলেন৷ আমরা একইভাবে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে থাকি৷ সবকিছুই কিন্তু এক লক্ষ্যকে সামনে রেখে৷ তারা হয়তো ম্যাচ বেশি খেলেন, আমরা কম খেলে থাকি৷ কষ্ট বা আত্মত্যাগ যা-ই বলেন না কেন সবকিছুই একই করে থাকি৷ তবে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের কষ্টটা একটু হলেও বেশি৷ এই ধরুন কেউ যদি বিবাহিত থাকে, তাহলে ওই বাসার পাশাপাশি তার স্বামীকে ম্যানেজ করে যেতে হচ্ছে৷ সন্তান থাকলে তাকেও৷ আমার মনে হয় আমাদের সেক্রিফাইসটাই বেশি৷’’
পুরুষ ও নারীদের বেতন-ভাতার এমন ব্যবধান আদৌ কমবে বা কাছাকাছি হবে কিনা, তা নিগার বলতে পারছেন না৷ তবে স্বপ্ন দেখছেন দিন বদলের, ‘‘প্রত্যাশা করি, একসময় হয়ত ঠিক হয়ে যাবে৷ তবে কবে হবে জানি না৷ আমরা দেখে যেতে পারবো কিনা জানি না৷ আমরা কাজ করে যাচ্ছি৷ সামনের দিকে যারা আসছে তারা যেন সুবিধাদি পায়৷’’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস এই বিষয়ে নানান ব্যাখ্যা উপস্থাপনা করেছেন৷ বলেছেন, ‘‘এটা তো অন্য দেশেও আছে৷ এটা নির্ভর করে কে কেমন আয় করে তার ওপর৷ ভারত বেশি আয় করে, তাই তারা বেশি দিতে পারে৷আমরাও বলছি না যে, সেরকম বড় ব্যবধান থাকবে৷ আমরাও চাই যে কমে আসুক, কমবে৷ তবে সমানভাবে দেখা হবে না, কারণ হলো, নারী ক্রিকেটকে আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত চেষ্টা করছি একটা লেভেলে নিয়ে আসার জন্য৷ আর এখন পর্যন্ত নারী ক্রিকেটকে আইসিসি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে দেখে৷ ওরা কিন্তু পুরোপুরি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের মধ্যে আছে৷ কিন্তু আমরা মনে করি, নারীদের ক্রিকেট আমাদের দেশে জনপ্রিয় হচ্ছে৷ আমরা ভালো খেলছি৷’’
ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের সুযোগ-সুবিধা ধীরে ধীরে বাড়ছে৷ তারপরও পুরুষদের কাছাকাছি যেতে অনেক বাকি৷ বৈষম্য কমানোর বিষয়ে দেশের ক্রিকেটের অভিজ্ঞ এই সংগঠকের ভাষ্য, ‘‘(নারীদের) এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি এটা কম বড় কথা নয়৷ বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডে উঠেছি৷ সুতরাং মেয়েরা উঠে আসছে৷ আমরাও চেষ্টা করছি৷ আগে থেকে ওদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে৷ হয়তো পুরুষদের মতো নারীদের একই লেভেলে আনতে পারবেন না৷ সুতরাং ব্যবধান থাকবে৷ তবে ব্যবধানটা ওইভাবে চোখে পড়ার মতো না থাকলেই হয়৷ তারাও যাতে সন্তুষ্ট থাকে, বোর্ডও সন্তুষ্ট থাকে- সেই ধরণের ব্যবস্থা থাকে৷ পুরুষ ও নারীদের খেলাতে বৈষম্য আছে৷ সব দেশে আছে৷ থাকবে৷ তবে আমরা মনে করি, আমাদের আয় অনুযায়ী ঠিক যেভাবে পুরুষরা যা পায়, তেমনই নারীরাও পাবে৷ যেন বৈষম্য কমে একটা লেভেলে আসে৷’’
প্রায় পুরো বিশ্ব জুড়েই পুরুষ ও নারী খেলোয়াড়দের বেতন-ভাতায় বড় ফারাক লক্ষ্য করা যায়৷ তবে ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ড ও ভারত কিন্তু দারুণ এক কাজ করেছে৷ নিউজিল্যান্ড প্রথম পুরুষ ও নারীদের সমান ম্যাচ ফি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দিয়েছে৷ নারী-পুরুষের পারিশ্রমিকে সাম্য এনেছে৷ গতকাল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই-ও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও ‘ধনী’ বোর্ডদের একটি৷ বোর্ড সভাপতি দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন তাদের কোষাগারে ৯০০ কোটি টাকা! অথচ একাধিক দেশে নারী-পুরুষ ক্রিকেটারদের মধ্যে বৈষম্য দূর করার প্রসঙ্গ তুলতেই জালাল ইউনুস বললেন, ‘‘তারা ওইভাবে চিন্তা করে দিয়েছে৷ আমরা ওই লেভেলে এখনো আসি নাই৷ তারা আমাদের চেয়ে ভালো খেলে থাকে৷ তারপরেও সেভাবে আমরা চিন্তা করছি না৷ আমরা চিন্তা করছি তারা (মেয়েরা) যেন সন্তুষ্ট থাকে এবং পজিশনাল ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে মেনটেইন করতে পারে৷ সেই দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত৷ কথা হচ্ছে- খেলা থেকে আয় হবে৷ সেটাতে তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হবে৷’’
পুরুষ ৮৫%, নারী ১৫%!
ক্রিকেটে তা-ও বেতন-ভাতা একটা লেভেলে আছে৷ ফুটবলের কথা চিন্তা করলে আপনার একটু খারাপই লাগবে৷ জামাল ভূঁইয়ারা প্রায় কোটি টাকা পারিশ্রমিক পেলেও সাবিনাদের সর্বোচ্চ আয় ১০ লাখ টাকা! সাফ জিতে দেশে আসা মেয়েরা এখন কোটি টাকার ওপরে বোনাসে ভাসছেন৷ অথচ তারা সাফ জিতে আয়োজকদের কাছ থেকে কোনো আর্থিক পুরস্কারই পাননি! স্পন্সর না থাকায় তাদেরকে কোনো পুরস্কার দেওয়া যায়নি৷ আর জাতীয় দলে খেলে মাত্র ২০০ ডলার করে পকেট মানি পেয়েছেন সবাই৷
আর বাফুফে থেকে সাবিনা-কৃষ্ণারা মাসিক বেতন পেয়ে থাকেন ৮ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে৷ আর শুধুমাত্র লিগ খেলে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা পেয়ে থাকেন একটি মাত্র দল থেকে৷ ১৫ থেকে ২০জন এই অর্থ পেলেও বাকিদের পারিশ্রমিক নামমাত্র৷
সাফ ফুটবলের ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে জোড়া গোল করা কৃষ্ণা রানী সরকার মনে করেন এই জায়গা থেকে দ্রুত উত্তরণ প্রয়োজন, ‘‘আমাদের অনেকের পরিবারই মেয়েদের আয়ের ওপর নির্ভরশীল৷ এখন আমরা যেই পর্যায়ে আছি, তার চেয়ে ভালো হলে ভালোভাবে চলতে পারবো৷ এখন আসলে বাংলাদেশের লিগে বসুন্ধরা কিংস ছাড়া অন্য কোনো দল নেই৷ নতুন দল যারা খেলতে আসছে, তাদের পক্ষে বড় অঙ্কের পারিশ্রমিক দিয়ে খেলোয়াড় নেওয়া সম্ভব না৷ যদি আবাহনী-মোহামেডানসহ অন্য বড় বড় দলগুলো আসতো, তাহলে ভালো হতো৷ সবাই আর্থিকভাবে লাভবান হতো৷ তখন খেলাও জমতো৷ মেয়েরা বেশি করে খেলায় অংশগ্রহণে আগ্রহী হতো৷ নতুন খেলোয়াড় উঠে আসতো৷ আসলে যত প্রচার হবে, মেয়েরা তত উৎসাহিত হবে৷’’
ফিফা কাউন্সিল ও বাফুফের সদস্য যিনি আবার নারী ফুটবলের দায়িত্বে, সেই মাহফুজা আক্তার কিরণ মনে করছেন এই ব্যবধান ঘুচতে বেশ সময় লাগবে৷ তার ভাষায়, ‘‘হয়ত বৈষম্য কমে আসবে একসময়৷ তবে সমস্যার সমাধান হবে না৷ এটা আসলে শুধু বাংলাদেশে নয়, এ সমস্যা পুরো বিশ্বেই রয়েছে৷ আপনি ইউরোপে যান- একই সমস্যা, ইউকেতে যান- একই সমস্যা৷ এটা সমাধান হতে অনেক সময় লাগবে৷ হয়ত হবে একসময় ৷ তবে কবে হবে জানি না৷’’
ফিফার অনুদানের প্রসঙ্গ টেনে কিরণ হতাশা নিয়েই বলেছেন, ‘‘যেহেতু পুরুষশাসিত সমাজ তাই কোনোদিন ব্যবধান কমবে কিনা সংশয় আছে৷ ফিফা সবসময় চেষ্টা করে বৈষম্য কমানোর৷ তবে ফিফা থেকে যে বরাদ্দ আসে তাতে ছেলেদের জন্য ৮৫ ও মেয়েদের জন্য ১৫ ভাগ অর্থ বরাদ্দ থাকে৷ তাহলে বুঝে নিন সবকিছু৷ এখন হয়ত আকাশ-পাতাল পার্থক্য আছে৷ এটা নিয়ে কাজ করছি সবাই৷ হয়ত ১০০ বছর বা ৫০ বছর পর কমবে বৈষম্য৷ তবে কখনোই সমান হবে না৷’’
ক্রিকেট-ফুটবলের বাইরে অন্য খেলাগুলোতেও বৈষম্য কম নয়৷ সার্ভিসেস সংস্থাতে যারা চাকুরি করেন, তাদের মধ্যে আর্থিক কাঠামোতে সেভাবে কোনো ব্যবধান না থাকলেও ঘরোয়া লিগ বা অন্য টুর্নামেন্টে তা রয়েই আছে৷ সাতবারের টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন সোনাম সুলতানা সোমা নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন, ‘‘পুরুষদের যেভাবে ট্রিট করা হয়, সেভাবে আমাদের করা হয় না৷ প্রাইজমানির বিষয় তো আছেই৷ দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে ছেলেরা বেশি অর্থ পায়, আমরা কম পাই৷ অথচ আমরা কিন্তু তাদের তুলনায় ম্যাচ কম খেলি না৷ এখন এগুলো দেখতে দেখতে খারাপটা সহ্য হয়ে গেছে৷ দিন শেষে আমরা সবাই খেলোয়াড়৷ এটা নিয়ে এখন আর ভাবি না৷ তবে নিজেদের মধ্যে খারাপ লাগাটা কাজ করে, কেননা, আমরা তো পুরুষদের তুলনায় কম পরিশ্রম করি না৷’’
জাতীয় ব্যাডমিন্টনে নারীদের সাতবারের চ্যাম্পিয়ন শাপলা আক্তারও বৈষম্য নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন, ‘‘ঘরোয়া খেলাতে আমরা যে পারিশ্রমিক পাই ছেলেরা তার চেয়ে বেশি পায়৷ ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের কিছুটা কম খেলতে হয়৷ তারপরেও তো আমাদের ছেলেদের সমান পরিশ্রম করতে হয়৷ আমরা যদি কর্মকর্তাদের বৈষম্য কমাতে বলি, তাহলে বলবে মেয়ে খেলোয়াড় তো কম৷ আরো বলে থাকে কজন মেয়ে ভালো খেলে? আমরা কিছু বললে তা ততটা আমলে নেওয়া হয় না৷’’