ক্রিকেট: বাংলাদেশের মেরামতের কাল
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১টেস্ট ক্রিকেটের মান নির্ণয়ের যে সাম্প্রতিক হিসাব কিতাব চলছে সেখানে আমাদের সংগ্রহ আপাতত শূন্য৷
ধারাভাষ্যকারদের ভাষায় এখনো আমরা হিসাবের খাতাটাই খুলতে পারিনি৷ আর আনকোরা অনভিজ্ঞ ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের কাছে দুই টেস্টের সিরিজের দুটিতে হারার সাথে সাথে দীর্ঘমেয়াদী ক্রিকেটের এই সংস্করণে আমাদের আদৌ কোনো মান আছে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে পড়েছে আমাদের ক্রিকেটপিয়াসী মন৷ অথচ এ সিরিজের আগে আগে প্রেক্ষাপটটা ছিল সাফল্য সম্ভাবনায় টইটুম্বুর৷ সিরিজের আগে তিন ম্যাচের একদিবসী সিরিজ গেছে, আমাদের পক্ষে বিশালাকার সব জয়ের দামামা বাজিয়ে৷ সফরকারীদের দুর্বলতার আবরণ উন্মোচিত ছিল সূর্যালোকে৷ ঘরের মাঠে আমাদের প্রাবল্য ছিল নানা মাত্রায় সুবিদিত৷ আশা ছিল স্বপক্ষীয় সুবিধাদি ও অন্যপক্ষের অসুবিধাদির আলোকে সিরিজটা আমরা সহজেই তুলে নেবো, ওয়নডেতে যেমন নিয়েছি৷ কিন্তু হলোনা৷ কেন হলোনা, এই নিয়ে আমরা মাথা ঘামাচ্ছি৷ মাথা ঘামানোর প্রথম পর্বে খেলাটি এবং খেলা পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট মহল নিজেদের মধ্যে এক ধরনের পারস্পরিক দায় চাপানোর একটা সংস্কৃতি গড়ে তুলেছেন বা তুলছেন৷ তবে এটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া৷ আশাহত ক্রিকেটামোদী জনসাধারণ ক্ষুব্ধ হৃদয়ে দেখতে চাইছে ঘটনাটা কী হলো বা কেন হচ্ছে৷ ভাবনার সারসংক্ষেপ এমন যে, সাদা বলে তো আমাদের কিছু কিছু হচ্ছে, কিন্তু লাল বলে একেবারে কিছুই হচ্ছে না কেন? সাদা বলে বিশ্বসেরা দলগুলো আমাদের হিসাব করে, পাত্তা দেয়, আর লাল বলে দুগ্ধপোষ্য আফগানিস্তান, বিকল্প দল নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ঘরের উঠোনে হারিয়ে দিয়ে যায়৷ এমন হলে আক্ষেপের, হতাশার একটি প্রবল শৈত্যপ্রবাহ আমাদের ক্রীড়াঙ্গনে বয়ে যাওয়া স্বাভাবিক৷ তাই যাচ্ছে৷
বলা হচ্ছে এবং আমরা যুক্তি মেনে বুঝতে পারছি যে, স্বল্প ও দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট নিয়ে আমাদের চর্চাগত বা ঐতিহ্য ও অভ্যাসবশত যে পার্থক্য, তারই প্রতিফলন আন্তর্জাতিক মঞ্চে দুই ধরনের খেলায় আমাদের অগ্রধাবনের ছবিতে৷ আরেকটু খোলাসা করে বললে বলতে হয় যে, সীমিত ওভারের খেলা ও টেস্ট ক্রিকেটের উৎসে আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের যে মনোনিবেশ ও আন্তরিকতাগত তফাৎ, তারই ফলাফল আমাদেরকে আন্তর্জাতিক হিসাবের খাতায় প্রত্যেক বিভাগে অবস্থান তৈরি করে দিয়েছে৷ আমরা অধিকতর প্রতিযোগী আবহে সীমিত ওভারের ক্রিকেটের চর্চা করি৷ ফলে এই চরিত্রের ক্রিকেটে কিছুটা মর্যাদার জায়গায় পৌঁছেছি৷ অগ্রসারির দলগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের ম্যাচ-জয়, সিরিজ-জয় আছে৷ বিশ্বকাপেও আমাদের দাগ কাটার মতো প্রদর্শন আছে৷ সম্প্রতি আমাদের যুবারা অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতে বিশ্বমঞ্চে আমাদের প্রবলতর সম্ভাবনার নগদ আকুতি জানিয়ে রেখেছে৷ এসবই আমাদের চর্চাগত ঐতিহ্য এবং প্রসারিত নিবেদনের ফল৷ আইসিসির সহযোগী সদস্য হিসেবে আমরা সেই ১৯৭৯ থেকে আইসিসি ট্রফি খেলেছি৷ ১৯৯৭-এ আইসিসি ট্রফি জয়ের পর থেকে খেলছি বিশ্বকাপ৷ সেই হিসেবে আমাদের ওয়ানডে খেলার বয়স চল্লিশ বছর৷ প্রকারান্তরে টেস্ট খেলার বয়স সেটার অর্ধেক৷ এই সময়ের পার্থক্য অভিজ্ঞতার একটি দিক নির্দেশ করে৷ তবে সেটা টেস্টে পিছিয়ে থাকার মূখ্য কারণ মোটেই নয়৷ সেটাকে মূখ্য কারণ বললে আফগানিস্তান একটি প্রশ্ন হয়ে সামনে এসে দাঁড়ায়৷ সে প্রশ্নের জবাব আপাতত দেয়া যাচ্ছে না৷
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে অপ্রত্যাশিতভাবে টেস্ট সিরিজ হারার পর আমাদের ক্রিকেট আলোচনায় টেস্ট ক্রিকেটের হতশ্রী অবস্থা নিয়ে দীর্ঘ বিরতির টনক নড়া আবার ফিরে এসেছে৷ ইতোপূর্বে টনক নড়া সময়গুলোতে আমরা মোটা দাগে যেসব কারণ নির্ণয় করে এসেছি, সেগুলো আবার নতুন আলোড়নে ফিরে আসছে৷ যেমন টেস্ট ক্রিকেট কম খেলা এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে দীর্ঘপরিসরের খেলাগুলোর পিছনে, আয়োজনে এবং খেলায়, পেশাদারিত্বের অভাব৷ প্রতিযোগী দলগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘনত্বের অভাব, প্রতিষ্ঠিত জাতীয় দলে ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণে অনীহা, ইত্যাদি ইত্যাদি৷ উইকেটের চারিত্রিক বৈচিত্র্য, পারিশ্রমিক এবং অঞ্চলে অঞ্চলে দলীয় চেতনার ঐতিহ্যনির্মাণের তাড়নাহীনতা বা প্রণোদনার অভাবসহ অন্যান্য প্রসঙ্গও মাঝে মাঝে আলোচিত হয়৷ অসুবিধাগুলো ডিঙ্গিয়ে আসার সম্ভাব্য সুরাহাও আলোচনায় আসে৷ কিন্তু অবসর হয় না সংশ্লিষ্ট কারো উদ্যোগী হয়ে সমস্যা নিরসনের৷ ফলে সমস্যাগুলো নিয়েই চলে টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে আমাদের খুঁড়িয়ে চলা৷
আমাদের বিশ বছরের টেস্ট জীবনে আহরণের ছবিটি বড়ই বিবর্ণ৷ অন্তর্জালে বোতাম টিপলেই ছবিটি পাওয়া যায় বলে পরিসংখ্যানের বিস্তৃতি দিয়ে সময় নষ্ট করছি না৷ এ পর্যন্ত যতগুলো টেস্ট আমরা খেলেছি তার দশমাংশ জিতেছি, ড্র করার পরিমান একই অংকে আর আশি শতাংশ পরাজয়ের খাতে৷ এই অন্ধকারের দিকে হেলানো চিত্র বলে দেয় আমরা এ খেলার শারীরিক, মানসিক এবং কারিগরি কৌশলের দিক দিয়ে প্রতিপক্ষের চাইতে বহুধাপ পিছিয়ে আছি৷ কেবলমাত্র ঐতিহ্যগত ব্যবধান বা পিছনের দীর্ঘসূত্রী ইতিহাসলব্ধ অভিজ্ঞতার ব্যবধানই কার্যকারণ নয়৷ ধারাবাহিক ব্যর্থতা কোনো প্রণোদনার উন্মেষ ঘটায় না৷
সাম্প্রতিক টেস্ট দুটোর কথাতেই আসি৷ চট্টগ্রাম ও ঢাকায় দুটো ম্যাচেই আমরা কোনো না কোনো সময়ে সম্ভাব্য জয়ের ইঙ্গিতবহ সময়ের মুখোমুখি হয়েছিলাম৷ কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারিনি৷ সিরিজ-পূর্ব সময়ে আমরা প্রবলতর বা শ্রেয়তর বিবেচিত ছিলাম৷ কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল সময়ের সদ্ব্যবহার প্রতিপক্ষ আমাদের চাইতে ভালো করেছে৷ মনোবল ও দলীয় সংহতির দাপুটে ব্যবহারে আমাদেরকে পরাভূত করেছে৷ আমাদের একটি ‘দরদী বাহানা’ হতে পারে সাকিবের ইনজুরি ও অনুপস্থিতি৷ কিন্তু দলীয় খেলায় একজনের দোহাই দেয়া লজ্জাস্কর এবং সেটাকে অন্যতম কারণ হিসেবে ধরেও যদি নেই, তবে বলবো সাকিব না থাকার যে সুযোগ, সেটা সফরকারীরা খুব ভালোভাবে ব্যবহার করেছে৷ যে-কোনো সুযোগ কাজে লাগানোটাই টেস্ট ক্রিকেটে সাফল্যের অন্যতম নিয়ামক, আমরা সেখানে পিছিয়ে ছিলাম৷ পরস্পরের উপর নির্ভরশীলতার বাইরে গিয়ে, অধিনায়ক ও তার কৌশলের উপর ষোলোআনা আস্থা না রেখে আমরা দৈবের উপর, উইকেটের সমর্থনের উপর বেশি নিভর্র করেছি এবং ঠকেছি৷ প্রতিপক্ষ দলীয় সংহতিতে প্রবলতর ছিল, ওরা জিতেছে৷ লড়াইয়ে পরিকল্পনা এবং প্রতি-পরিকল্পনা দীর্ঘমেয়াদী ক্রিকেটের প্রাধান্য বিস্তারের চাবিকাঠি৷ ওরা সে চাবিকাঠি যথাযথ প্রয়োগ করে জিতেছে৷ আমরা পারিনি৷ না পারার কারণ পরাজয়ের ধরনে প্রকাশ্যে এসেছে৷
ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম বা ডিআরএস আধুনিক ক্রিকেটের এক অপরিহার্য্ অংশ৷ এই সুযোগ ব্যবহারের তৎপরতায়ও আমরা এই সিরিজে পিছিয়ে ছিলাম, আমাদের ভুগতে হয়েছে৷ এসব ক্ষেত্র সংশ্লিষ্টজনার আত্মবিশ্বাস বা খেলানিবিষ্টতার অভাবকেই প্রকাশ্য করে৷ এটাকেও দলীয় সংহতির দুর্বলতাই বলবো৷
ওয়ানডে সিরিজে তামিম, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহদের ধারাবাহিকতার অভিজ্ঞ উপস্থিতি এবং দুই দলের সীমিত ওভারের খেলার উপর অর্জিত কারিগরি নিয়ন্ত্রণের ফারাক দলীয় কাঠামোগত অসঙ্গতি লুকাতে পেরেছিল বাংলাদেশ৷ টেস্টের পরিবর্তিত বাংলাদেশ সেই দলীয় চেতনা সাকিব, মাহমুদুল্লাহর অনুপস্থিতি এবং দল নিয়ন্ত্রণ বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অসফলতার কারণে কার্যকর করতে পারেনি৷ ফলে ফাটলগুলো ক্ষতিকর চেহারা নিয়ে মুখ ভাসায়, আমরা আশাহত হই৷ প্রতিপক্ষ এই সূত্রে তাদের লড়াকু উদ্যোগের সফল প্রয়োগে বাংলাদেশকে বিধ্বস্ত করে৷ আমাদের প্রধান অস্ত্রগুলো এককভাবে অথবা একে অপরের পরিপূরকভাবে কাজ করেনি, ওদের করেছে৷ আর সুসংহত পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী ইউনিট না হয়ে ওঠার জন্যে সিরিজটা টেস্ট ব্যর্থতার ধারাবাহিকতার মিছিলটাই দীর্ঘ করেছে৷ ব্যক্তি খেলোয়াড়দের প্রত্যাশাগত আচরণের ভালোমন্দ বিবেচনায় না গিয়ে সামগ্রিকভাবে কথাটা বলছি৷ সে-সব অনেক হয়েছে৷ আমরা একটু অন্যভাবেই নৈরাশ্যটাকে দেখি৷
খেলাটা তো দলীয়, দলকে নিয়েই কথা বলি৷ দলের ভালো-মন্দ প্রকৃত প্রস্তাবে এর আদলটা আরো বৃহত্তর পরিসরে সুপ্ত৷ দল গঠন প্রক্রিয়া, কারিগরি বা কৌশলগত নীতি নির্ধারণ, প্রশাসনিক শৃঙ্খলা এবং সর্বোপরি সংশ্লিষ্ট সকল মহলের পারষ্পরিক সংযোগের মসৃণতা ছাড়া সফল দল হয় না৷ সফল বলতে শুধু জেতার কথা হচ্ছে না, হারজিতের সীমানা ছাড়িয়ে দলের ভিতর সর্বাবস্থায় জেতার মেজাজটা উপস্থিত থাকার ব্যাপারটা সাফল্যের সাথে জড়িত৷ আমাদের টেস্টের শরীরে সেই চিহ্নটাই অনুপস্থিত৷ কেন অনুপস্থিত, সে খবরের খোঁজ, গবেষণা প্রয়োজন নেই৷ যে বৃহত্তর দলীয় সংহতির কথা বলেছিলাম, সেদিকে একটু চোখ ফেরালেই বিষয়টি বুঝতে পারি৷ সেখানে দেখি খেলোয়াড়ে, কারিগরি ও নীতি নির্ধারকে, নির্বাচকে যে যোগসূত্রের সাঁকো, সেটা নড়বড়ে, শিশুশিল্পীর আঁকা৷
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে সিরিজ হারের পরপরই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড প্রধান সাংবাদিকদের যে বয়ান দেন, তাতে উপরের কথাগুলোই উঠে এসেছে৷ তিনি দল নির্বাচনে প্রতিপক্ষের মুখোমুখি রণকৌশল নির্ধারণে তার নিয়ন্ত্রণহীনতার কথা বলেছেন৷ তার আগ্রাসী উষ্মার মুখে পড়েছেন নির্বাচক, কোচ, অধিনায়ক এবং অন্যান্য নিকট সহযোগীরা৷ এসব তিনি বলেছেন হারের কারণ হিসেবে৷ চরম অসহায়ত্বের সুর বেজেছে তার কথায়৷ মুদ্রা নিক্ষেপ থেকে নির্বাচন, খেলোয়াড়-বিন্যাশ সব কিছুতেই খণ্ড খণ্ড স্বেচ্ছাচারিতার ছবি উঠে এসেছে সভাপতির কথায়, যেগুলোর উপর তার নিয়ন্ত্রন নেই৷ অর্থাৎ, তাকে গ্রাহ্যের মধ্যে নেয়া হয় না৷ তিনি নিজের কথা বলেছেন, তবে আমরা ধরেই নিতে পরি, সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের কথাই বলেছেন৷ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সমূহে এই যে উপর মহলে মতানৈক্য, এই আবহাওয়ায় আমরা একটি সুসংহত দল আশা করবো কী করে? মাঠের খেলোয়াড়দের শাপান্ত করে লাভ নেই৷ অসুখ অন্য জায়গায়৷ বোর্ড সভাপতি সেটা ভালো বোঝেন, আর বোঝেন বলেই বলেছেন, দৃঢ় স্বরেই বলেছেন, এভাবে চলতে দেয়া যায় না, বদলাতে হবে৷ খোল নলচে পাল্টে একটি সুনিয়ন্ত্রিত পরিচালনা ব্যবস্থায় আনতেই হবে নিজেদেরকে৷ এই বিষাদ আক্রান্ত সময়ে বোর্ড পরিচালকরাও অনেকেই নিজ নিজ ছাতা ধরেছেন৷ কেউ প্রশ্নের আঙুল তুলেছেন বিদেশি প্রশিক্ষকদের দিকে, কেউ ক্রিকেটারদের কমিটমেন্টের দিকে৷ মোদ্দা কথা, আমরা বুঝতে পারছি মাথাটার কলকব্জা সমানুপাতিক নয়, একটু মেরামতের অপেক্ষা রাখে৷ বোর্ড সভাপতি নড়েচড়ে বসার ইঙ্গিত দিয়েছন৷ সদাশয়ের মুখে ফুলচন্দন পড়ুক৷ তিনি কামিয়াব হোন এই মেরামতির কাজে৷ সাফল্যের দাবিদার তাকে করুক সময়ে আর ব্যর্থতার দায় সবাই ভাগ করে নিন দুঃসময়ে৷ আমাদের ক্রিকেট-প্রেমের পালে অব্যাহত থাক দখিন হাওয়া৷
একটি প্রসঙ্গ টেনে শেষ করছি৷ প্রতিটি টেস্ট সিরিজ হারের পর আমাদেরকে আশার আলো দেখিয়ে ক্ষমতা বিকেন্দ্রিকরণের কথা বলা হয়৷ দীর্ঘসূত্রী ক্রিকেটকে উন্নত করার জন্য আঞ্চলিক বা বিভাগীয় সংস্থাসমূহকে একেকটি মিনি বোর্ডের আদল দেয়ার কথা বলা হয়৷ বলা হয় সেই সব সার্বভৌম সংস্থার কল্যাণে ক্রিকেট উন্নতির প্রতিযোগী আবহ তৈরি হবে৷ মান বাড়বে খেলার, খেলোয়াড়ের, আম্পায়ার, নির্বাচক, কোচ, কিউরেটর, সবাই ঐ সব আঞ্চলিক সংস্থার চর্চাগত ফসল হিসেবে নিজেদেরকে অভিজ্ঞ করে কেন্দ্রে আসবে৷ খেলোয়াড়দের দলের প্রতি ‘সেন্স অব বিলঙ্গিং’ তৈরি হবে উন্নত প্রণোদনায়৷ এবারও সে-সব কথা হবে৷ বোর্ডের নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, এসব কথা আরো বেশি হবে৷ এমনতর প্রকল্প অনেক পড়ে আছে বোর্ডের মহাফেজখানায়৷ শেষমেশ অলিখিত ক্ষমতা চিরস্থায়ীকরণ প্রকল্পের আওতায় আঞ্চলিক সংগঠনের ফাইল লালফিতামুক্ত হয় না৷ আমরা আশায় থাকি, হবে৷ একটা সময় ছিল আমাদের ক্রমান্নতির প্রধান বাধা ছিল অর্থের জোগান৷ আল্লাহ'র কৃপায় আর ক্রিকেটারদের সাধনায় সে অসুবিধা গেছে৷ এখন সে জায়গায় ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থের বাইরে আসায় সদিচ্ছার অভাব দখল নিয়েছে৷ মাননীয় বোর্ড সভাপতির ভাষ্যে ও আচরণে সেই সদিচ্ছার আগমনী ধ্বনিত হচ্ছে৷ তিনি মেরামতে নামছেন৷ সফল হোক তার মেরামত কর্মসূচি৷