কোন দিকে যাচ্ছে বেলারুশ?
১৯ আগস্ট ২০২০বিক্ষোভের মুখে শুরুর অনড় অবস্থান থেকে সরে অবশ্য নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো৷ তবু দেশটিতে শান্তি ফিরবে কিনা সে বিষয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে৷
বেলারুশের পশ্চিমে ন্যাটোভুক্ত দেশ পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া এবং লাটভিয়া, দক্ষিণে ইউক্রেন আর পূর্বদিকে রাশিয়া৷তবে প্যান-ইউরোপিয়ান থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের বিশ্লেষক গুস্তাভ গ্রেসেল মনে করেন, বেলারুশ সুইজারল্যান্ড, সুইডেন বা ফিনল্যান্ডের মতো ‘নিরপেক্ষ’ দেশ নয়৷ বরং ছয় জাতির নিরাপত্তা জোট কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গ্যানাইজেশন (সিএসটিও)-র সদস্য বলে দেশটির ওপর রাশিয়ার প্রভাবই বেশি৷
গত সপ্তাহে ক্রেমলিনের সঙ্গে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন লুকাশেঙ্কো৷ আলোচনা শেষে বলেছেন, সিএসটিও চুক্তি অনুযায়ী বেলারুশ এবং তার মিত্রদের পাশে থাকবে রাশিয়া৷
ন্যাটোর দিকে অভিযোগের আঙুল
ক্রেমলিনের সঙ্গে আলোচনার আগে ন্যাটোর প্রতি মনোভাবটাও স্পষ্ট করেছিলেন লুকাশেঙ্কো৷ দৃশ্যত জনপ্রিয়তা হারিয়ে বসা প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ন্যাটো বেলারুশের পশ্চিম সীমান্তে সৈন্য বাড়াচ্ছে৷ সেই অভিযোগ অস্বীকার করে ন্যাটো মহাসচিব ইয়েন্স স্টলেনবার্গ বলেছেন, ‘‘আমরা রক্ষণাত্মক অবস্থান থেকে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি৷’’ তবে তিনি এ-ও বলেন, মিত্র দেশগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ন্যাটো প্রস্তুত৷
তাতে দমে না গিয়ে লিথুয়ানিয়া এবং পোল্যান্ড সংলগ্ন সীমান্তে সেনা মহড়ার নির্দেশ দিয়েছেন লুকাশেঙ্কো৷ কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করছেন, এর মাধ্যমে রাশিয়াকে সামরিক হস্তক্ষেপে উৎসাহিত করার ইঙ্গিত থাকতে পারে৷ তবে গুস্তাভ গ্রেসেল মনে করেন, ‘‘সেরকম কিছু করার কোনো ইচ্ছে নেই পুটিনের৷ বেলারুশ যতক্ষণ সিএসটিও চুক্তি মেনে চলবে ততক্ষণ রাশিয়া সামরিক হস্তক্ষেপের দিকে যাবে বলে মনে হয় না৷’’
রাশিয়া, পশ্চিমা দেশগুলো আর জনগণ কী চায়?
গ্রেসেল মনে করেন, লুকাশেঙ্কো সম্প্রতি ৩২ জন রুশ নাগরিককে বিক্ষোভে উসকানি দেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করলেও বাস্তবিক পক্ষে রাশিয়ার দিক থেকে সরে আসার মতো কিছু করেননি৷ তবে ক্রেমলিন গণরায়ের প্রতিই আস্থা রাখতে ইচ্ছুক৷ সেক্ষেত্রে লুকাশেঙ্কোর জায়গায় রুশপন্থি অন্য কেউ ক্ষমতায় এলে শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ তাকে সমর্থনই জানাবে৷ ইইউ-ও চায় লুকাশেঙ্কোর বিদায়৷ তবে তাতে বেলারুশ রাশিয়ার বলয় থেকে বেরিয়ে আসবে এমনটি ধরে নেয়া কঠিন৷ কারণ, বিক্ষোভরত বিরোধীরা এখনো ইইউ-র দিকে ঝুঁকে যাওয়ার কোনো ইঙ্গিত দেননি৷ বরং বিরোধী নেতা মারিয়া কোলেসনিকভ বলেছেন ইইউ লুকাশেঙ্কো প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ওপর এক্ষুনি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে তা করলে খুব তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে৷
বার্ন্ড রাইগার্ট/এসিবি