1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেনিয়ায় নদী সংস্কারে বেসরকারি উদ্যোগ

২১ অক্টোবর ২০২০

ঘনবসতিপূর্ণ শহরে পরিবেশ বিপর্যয়ের মাত্রা আরও প্রকট হয়ে উঠতে পারে৷ কেনিয়ার নাইরোবি নদীর দূষণ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আরও মারাত্মক হয়ে উঠছে৷

https://p.dw.com/p/3kDRq
ছবি: DW/Thomas Hasel

নাইরোবি নদী থেকে আবর্জনা দূর করার কাজ যেন কখনোই শেষ হবার নয়৷ কেনিয়ার মাসাই উপজাতির ভাষায় নাইরোবি শব্দটির অর্থ শীতল ও তাজা পানি৷ নদীর বর্তমান নোংরা অবস্থায় অবশ্য সেই পানি আর দেখা যায় না৷ আশেপাশের বস্তি এলাকার উৎসাহী মানুষ ঘরের দোড়গোড়ায় এমন পরিবেশ বিপর্যয় আর সহ্য করতে পারছেন না৷ কোম্ব গ্রিন সলিউশন্স সংগঠনের লিডিয়া ওয়াম্বোই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘‘বয়স যখন কম ছিল, তখন নদী এত নোংরা ছিল না৷ তাই আমরা নদী পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিলাম৷ আগে নদীতে সাঁতার কাটতাম৷ পানি বদলে যাওয়ায় এখন আর সেটা সম্ভব নয়৷ নদীর আগের অবস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই৷’’

লিডিয়া ওয়াম্বোই-সহ নাইরোবির পূর্বাংশে কোরোগোচো বস্তির প্রায় ৭০ জন বাসিন্দা ‘কোম্ব গ্রিন সলিউশনস’ নামের সংগঠন গড়ে পরিবেশ সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন৷ নদীর দূষণ যে ইতোমধ্যে মানুষের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠেছে, অনেকের কাছেই তা স্পষ্ট৷ নার্স হিসেবে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে ফেলিস্টুস লিবুলেলে বলেন, ‘‘নাইরোবি নদীর পানি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে৷ বাচ্চারা সেখানে খেলা করে এবং অন্য কোথাও সাঁতার কাটার সুযোগ না থাকায় তারা নদীতে নামে৷ কিন্তু সেখানে অস্বাস্থ্যকর পদার্থ রয়েছে৷ ফলে বাচ্চাদের আন্ত্রিক ও চর্ম রোগ হয়৷’’

বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন ও কেনিয়ায় ঘনঘন খরার কারণে মানুষ নদীর পানির উপর আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে৷ স্নান, জামাকাপড় কাচা থেকে শুরু করে খেতের জন্যও নদীর পানি ব্যবহার করা হয়৷

নদী বাঁচাতে এগিয়ে এলেন বস্তিবাসীরা

কেনিয়ার প্রশাসন পরিবেশ নদীতে পরিবেশ সংকটের মুখে অত্যন্ত ধীর গতিতে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে৷ ফলে অনেক মানুষ নিজেদের উদ্যোগ সত্ত্বেও একা বোধ করছেন৷

কোম্ব গ্রিন সলিউশনস সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ফ্রেডরিক ওকিন্ডারও এমনটা মনে হয়েছিল৷ এক সরকারি কর্মকর্তার বিরল সফর কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন তিনি৷ ফ্রেডরিক বলেন, ‘‘আমরা স্বীকৃতির আশায় নদী পরিশোধন করছি না৷ নিজেরা চাই বলেই সেই কাজ করছি৷ গভর্নর আমাদের কাজের স্বীকৃতি দিতে শুরু করার আগেই কাজ শুরু করেছি৷ দেখছেন, আমরা কী পরিমাণ জঞ্জাল উদ্ধার করেছি৷ কখনো সেটা করতে যন্ত্রের জন্য আবেদন করি, কিন্তু কখনোই সে সব আনা হয় না৷ আমরা আমাদের উদ্বেগ জানাতে চেয়েছিলাম৷’’

নাইরোবি পরিবেশ কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি লরেন্স মোয়াংগি সব কথা শুনে বলেন, ‘‘আমি বুঝছি, তোমাদের চাহিদা অনুযায়ী যন্ত্রপাতি আনা সত্যি এক চ্যালেঞ্জ৷ তবে পরিবেশ দফতরের প্রধান হিসেবে আমি সর্বশক্তি কাজে লাগিয়ে আমি চেষ্টা করবো, যাতে তোমরা তরুণরা সেটা পাও৷’’

কোম্ব গ্রিন সলিউশনস সংগঠনের অ্যাক্টিভিস্টরা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করছেন৷ নদীতে দূষণের প্রধান কারণগুলি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে৷ আশেপাশের বস্তি এলাকায় কোনোরকম আবর্জনা ব্যবস্থাপনা নেই৷ ফ্রেডরিক ওকিন্ডা বলেন, ‘‘জঞ্জাল সংগ্রহের কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নেই৷ তাই সাধারণ মানুষ নিজেরাই সেগুলি সংগ্রহ করে৷ রাতে আমরা না থাকলে সেগুলি নদীতে ফেলে দেয়৷’’

তাছাড়া নাইরোবি শহরের ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের মাত্র প্রায় অর্ধেক বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন প্রণালীর সঙ্গে যুক্ত থাকায় বর্জ্য পানিও অপরিশোধিত অবস্থায় নদীতে গিয়ে পড়ে৷

টোমাস হাসেল/এসবি