কলকাতায় চাকরিপ্রার্থী, সরকারি কর্মী-সহ অন্যদের বিক্ষোভও চলছে

এলএসএসটি-র বিক্ষোভ চলছে বহুদিন ধরে। বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটা নাগাদ স্বরূপ আর করবী এসে দেখলেন, তাদের প্রতিদিনের বিক্ষোভ দেখানোর জায়গায় যে মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল তা খোলার কাজ তখনো শেষ হয়নি। পাশের ইঞ্জিনিয়ার্স ক্লাবের তাঁবু, যেখানে তারা তাদের প্রতিবাদ মঞ্চের প্লাকার্ড, ফেস্টুন রাখেন সেখান থেকে সেগুলো বের করে নিয়ে বিক্ষোভস্থলের দিকে এগোলেন তারা।

গত ২৮ অগাস্ট বিজেপির ডাকা বনধ এর জন্য অনেকেই শহরে প্রবেশ করতে পারেননি। একই দিনে গান্ধিমূর্তির নিচে ছিল তৃণমূলের অনুষ্ঠান। এই গান্ধিমূর্তির নিচেই অবস্থান করে আসছেন এসএলএসটির চাকরিপ্রার্থীরা। তৃণমূলের অনুষ্ঠানের জন্য তাদের মেল করে কয়েকদিন ওই জায়গায় অবস্থান করতে বারণ করা হয়েছিল।

স্বরূপ আর করবী পড়ে থাকা বাঁশ আর তৃণমূলের পতাকা সরিয়ে বিক্ষোভে বসলেন। জানালেন, প্রত্যেকেরই জীবিকার তাগিদ রয়েছে। বেঁচে থাকার রসদ খুঁজতে গিয়ে প্রতিদিন আর এই বিক্ষোভে সকলে আসতে পারেন না। পালা করে আসেন। তাদের বিক্ষোভ থামছে না।

৫৮১ দিন আগে ধর্মতলার শহিদ মিনারের নীচে অবস্থান শুরু করেছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তাদের মঞ্চের সামনেও আরজি করের ঘটনার বিচার চেয়ে ব্যানার ঝোলানো রয়েছে। তারাও বিক্ষোভ থেকে সরে আসেননি।      

রাজ্য সরকারি কর্মীদের ৩৩টি সংগঠন মিলে শুরু করেছিল ডিএ আন্দোলন। যারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তারা জানালেন, ২৭ তারিখের নবান্ন ঘেরাও অভিযানে তারা সামিল হয়েছিলেন। আগের মতো প্রতিদিন বিপুল সংখ্যায় মানুষ আসেননি ঠিকই, কিন্তু যে যখন সময় পান, তখন আসেন।

স্কুল শিক্ষক অলিম্পিয়া বড়ুয়া জানালেন, এত কাজের মধ্যেও এই আন্দোলন জিইয়ে রাখতে হচ্ছে। এই মঞ্চের সকল আন্দোলনকারীই সরকারি চাকরি করেন। চাকরি বাঁচিয়ে রেখে প্রতিদিন আন্দোলন মঞ্চে আসা সম্ভব নয়, তাই পালা করে আসেন তারা।

শহিদ মিনারের পাশেই  মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে অবস্থান চালিয়ে আসছেন অনেকগুলি মঞ্চ। এখন অবশিষ্ট রয়েছে কয়েকটি। বিশেষ বিশেষ দিনে ভিড় হয়। ফলে প্রতিবাদ চলছে।

ডাব্লিউবিজিডিআরবি-র গ্রুপ-ডির ঐক্যমঞ্চের ছবি। তারাও আন্দোলন চালাচ্ছেন। বিক্ষোভকারীরা পালা করে আসেন। বিক্ষোভ দেখান।

ডাব্লিউবিসিএসএসসি-র আন্দোলন ৭২৬দিন অতিক্রান্ত। তারা প্রতিদিন এখনও বসেন এইখানে। 

গত দু-বছরে আন্দোলন, প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছে কলকাতা। ধর্মতলার এই চত্বরকে কেউ কেউ ‘ধর্নাতলা’ নামে ডাকছেন।

ধর্নামঞ্চে অবস্থানকারী এমনই এক আন্দোলনকারী অভিজিৎ(বাম দিকে) জানিয়েছেন, তিনি রোজই আসছেন। আসবেনও।