করোনা: ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৯৭ জন
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০করোনায় মৃত্যু বেড়েই চলেছে। আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য কমলেও মৃত্যু বাড়ছে৷ গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৭ জন মারা গিয়েছেন। সব মিলিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০৮৷ অতীতে সার্স ভাইরাসে মারা গিয়েছিলেন ৭৭৪ জন৷ সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়ে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে করোনা৷ এই প্রথম চীনের বাইরে দুই জনের মারা যাওয়ার খবর এসেছে৷ একজন জাপানের এবং অন্যজন অ্যামেরিকার৷ গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৩৯৯ জন৷ সব মিলিয়ে ৪০ হাজার লোক করোনায় আক্রান্ত হলেন৷ তবে আগের থেকে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য হলেও কমেছে৷
এই অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা ভাইরাস নিয়ে তদন্ত করার জন্য প্রথমবার বিশেষজ্ঞ দল চীন পাঠিয়েছে৷ বেশ কয়েকটি দেশের বিশেষজ্ঞরা এই দলে আছেন৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে সাবধান করে বলা হয়েছে, ''বিশ্বের অন্য জায়গায় ভবিষ্যতে করোনা দ্রুত ছড়াতে পারে৷ চীনের বাইরে করোনা এখনও চিন্তার কারণ হয়নি৷ কিন্তু প্রতিটি দেশ সতর্ক থেকে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে তা অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে৷'' তাই করোনা নিয়ে বিন্দুমাত্র শৈথিল্য মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে৷
ইউরোপের কাছে চিন্তার বিষয় হল, যুক্তরাজ্য ও স্পেনে আরও একজন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে যুক্তরাজ্যে চারজন ও স্পেনে দুই জন করোনায় আক্রান্ত হলেন৷ দুই জনই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন একজন যুক্তরাজ্যের নাগরিকের সংস্পর্শে এসে৷ তিনি আবার সিঙ্গাপুরে গিয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন৷ এ ছাড়া উহান থেকে বিমানে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের উড়িয়ে এনেছে যুক্তরাজ্য৷ এর মধ্যে কুড়ি জন জার্মান৷ তাঁদের বার্লিনে নিয়ে আসা হয়েছে। আগামী ১৪ দিন তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে৷ ফ্রান্সের ২৫ জন এবং নেদারল্যান্ড, রোমানিয়া, অস্ট্রিয়ার ১৭জনকেও তাদের দেশে পাঠানো হয়েছে৷ বাকি শতাধিক যুক্তরাজ্যের নাগরিককে লন্ডনে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে৷
চীনের অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে, করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য তারা এক হাজার কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে যাতে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যথেষ্ট অর্থ থাকে, তার জন্য এই বিপুল অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থব্যয় করা হচ্ছে৷ নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র বলেছেন, তাঁরা করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আগামী ৬০ দিন দৈনিক ১ লক্ষ ডলার খরচ করবেন৷
তবে চীনে করোনার খবর নিয়মিত গণমাধ্যমে দিচ্ছিলেন চেন কুইশি ও ফাং বিন৷ এর মধ্য়ে চেন গত প্রায় ২১ ঘন্টা ধরে নীরব৷ ফাং ও নীরব ছিলেন, কিন্তু পরে জানা যায়, প্রশাসন তাঁকে একটি ভিডিও নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন৷ পরে তিনি আবার ভিডিও পোস্ট করা শুরু করেছেন৷ কিন্তু চেন করেননি৷ তাই তিনি নীরব কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে৷
করোনার জন্য অর্থনীতির বিপুল ক্ষতি হচ্ছে৷ সঙ্কটে পড়েছে গাড়ি শিল্প৷ কারণ, গাড়ির যন্ত্রাংশর বড় অংশ তৈরি হয় চীনে৷ সে সব কারখানা বন্ধ৷ বাইরের দেশের ব্যবসায়ীদের চীনে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলেও খুব বেশি লোকচীনেযাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করছেন না৷ করোনার ভয়ে চীনের থেকে জিনিস আমদানি করতে বহু দেশই রাজি নয়৷
জি এইচ/এসজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, নিউজ ১৮)