করবৃদ্ধি: অশান্ত কেনিয়া, পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষ
করবৃদ্ধি এবং মূল্যবৃ্দ্ধি নিয়ে বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিনে একাধিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে কেনিয়ায়। এর ফলে বিক্ষোভকারীদের আটকাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। বিস্তারিত দেখুন ছবিঘরে..
প্রতিবাদে উত্তাল
সরকারবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল কেনিয়া। করবৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধেই মূলত প্রতিবাদ জানান বিক্ষোভাকারীরা। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আজিমিও লা উমোজা-ওয়ান কেনিয়া জোটের বিরোধী নেতা রাইলা ওডিঙ্গার এক সমর্থক পুলিশের দিকে লক্ষ্য করে একটি বোমা ছুঁড়ছেন। আজিমিও লা উমোজার অর্থ একতার ঘোষণা।
কেন বিক্ষোভ
কেনিয়ার শহরগুলিতে করের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া এবং জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চরম মাত্রা নিয়েছে গত তিন দিন ধরে। নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন লোক গুলিবিদ্ধ হয় বলে জানা গেছে।
বুলেটও মিলেছে
রাইল ওডিঙ্গার সমর্থকদের হাতে বেশ কিছু বুলেট ছিল। পরিস্থিতি কতটা মারাত্মক, বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এই ছবিতেই তা স্পষ্ট।
যেখানে সহিংসতা
কিবেরা এবং মাথারে এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কিসুমুতে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কেনিয়ার একাধিক শহরে সংঘর্ষের খবর এসেছে।
পাথর ছোড়া
পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে দেখা গিয়েছে এক বিক্ষোভকারীকে। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
তাণ্ডবের অভিযোগ
পুড়িয়ে দেয়া একটি গাড়ির উপর দাঁড়িয়ে এক বিক্ষোভকারী। বুধবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন প্রবীণ বিরোধী নেতাসহ অন্তত ৩০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বেশ কয়েকজনকে গুলি করা হয়। কিন্তু হতাহতের সংখ্যা নিয়ে কোনো পরিসংখ্যান দেয়নি সরকার।
বিরোধী নেতার দাবি
এনটিভি কেনিয়া টেলিভিশনকে ওডিঙ্গা বলেন, তিনি ফ্লু থেকে সবে সেরে উঠেছেন। এই সব প্রতিবাদ সাধারণ মানুষেরা করেছেন। তার সমর্থকেরা এসব করছেন না। গত আগস্টের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর কাছে হেরে যান ওডিঙ্গা। পরপর পাঁচটি নির্বাচনী পরাজয় ঘটেছে তার। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং ক্ষমতা দখলের অভিযোগ আনেন তিনি।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত মাসজুড়ে
জুলাই মাসের শুরুতে আগের দুই দফা বিক্ষোভে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। নেতারা জাতি-ভিত্তিক হামলা যাতে না ঘটে, তা নিয়েও সতর্ক করেছেন।
বিরোধীদের ধরপাকড়
বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে এক বিরোধী নেতা পল ওঙ্গিলিকে নাইরোবির একটি আদালতে তোলা হয়। তার বিরুদ্ধে "জনগণের জন্য ক্ষতিকর নাশকতামূলক কার্যকলাপ" সংক্রান্ত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। ওঙ্গিলি যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন। গ্রেপ্তারির পরে সহিংসতার একাধিক ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।
গ্রেপ্তারির ফলে সহিংসতা বৃদ্ধি
নাইরোবির এমবাকাসি পূর্ব নির্বাচনী এলাকার এমপি বাবু ওউইনোকে অভিযোগ ছাড়াই গ্রেপ্তার এবং পরবর্তীতে আটকে রাখার ফলে বিক্ষোভ আরো বেড়েছে বলে উল্লেখ করেছে একাধিক সংবাদসংস্থা।
পুলিশের পাল্টা
বিক্ষোভকারীদের রুখতে একাধিকবার কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে বাধ্য হয়েছে পুলিশ। এই বিষয়ে কেভিন ওমন্ডি নামে কিবেরার এক বাসিন্দা বলে, পুলিশ তার কম্পাউন্ডে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। তার কথায়, “এই প্রথম আমরা পুলিশকে কিবেরার ভিতরে ঢুকতে দেখলাম। আমাদের সন্তানদের লুকানোর জায়গা নেই। আমরা পুলিশের কাছে অনুরোধ করছি। কিন্তু তারা শুনছে না।”
সরকারের ভূমিকা
সরকার এখনো এই সহিংস বিক্ষোভ নিয়ো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি জারি করেনি বা মৃত বা আহতের সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারেনি।
জনজীবনে আতঙ্ক
সপ্তাহের শুরুতে শিশুদের স্কুলে না পাঠানোর আদেশ দিলেও পরে সেটি প্রত্যাহার করে নেয় সরকার। বেশিরভাগ অভিভাবক বৃহস্পতিবার, শুক্রবারে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চাননি। গত সপ্তাহে, নাইরোবির পশ্চিমে একটি স্কুলে একটি ক্লাসরুমে পুলিশে ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের ক্যানিস্টার এসে পড়ে। কয়েকটি শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিলো তখন।