কবে মুক্তি মিলবে খালেদা জিয়ার?
৩১ জুলাই ২০১৮জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জমিনের মেয়াদ ৮ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়েছেন হাইকোর্ট৷ এই মামলায়ই পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হওয়ায় ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে পাঠানো হয় তাঁকে৷ মামলায় খালাস চেয়ে করা আপিলের শুনানি চলছে৷
এদিকে ‘ভুয়া জন্মদিন পালন' ও মুক্তিযুদ্ধকে ‘কলঙ্কিত' করার অভিযোগে ঢাকায় দায়ের করা মানহানির দুই মামলায় মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত৷ মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েস জামিনের আদেশ দেন৷
খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘‘ম্যাডাম মঙ্গলবার যে দু'টি মামলায় জামিন পেয়েছেন তাতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হাজির করা ছিল না৷ আর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার জামিনের মেয়াদ বেড়েছে আপিল শুনানির সময় বাড়ার কারণে৷ কিন্তু খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরো অন্ততঃ পাঁচটি মামলায় ওয়ারেন্ট আছে৷ এরমধ্যে তিনটি মামলা কুমিল্লায়, নড়াইলে একটি এবং ঢাকায় একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে৷ আর মামলা আছে অনেক৷ কোনটায় কখন কী হয় বলা যায় না৷ কুমিল্লার দু'টি মামলার জামিন শুনানি এখন হাইকোর্টে চলছে৷
বাস পোড়ানোর ঘটনায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি একটি এবং ৩ ফেব্রুয়ারি দুইটি মামলা দায়ের করা হয়৷ এই তিনটি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে৷ মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন নড়াইলের আদালত৷
নড়াইলের নড়াগাতী থানাধীন চাপাইল গ্রামের রায়হান ফরুকী বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর নড়াইল আদালতে এ মামলা করেন৷
এছাড়া ঢাকায় আরেকটি মানহানির মামলায়ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে৷
অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘‘মামলারতো আর অভাব নাই৷ কুমিল্লার দু'টি মামলার রুলের শুনানি চলছে৷ আগস্টের ১৫ তারিখের পর বোঝা যাবে আসলে ঘটনা কোন দিকে যাবে৷ ওই সময়ের পর রুল নিষ্পত্তি হওয়ার কথা৷''
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর কারাদণ্ড হয়েছে৷ কিন্তু খালেদা জিয়ার নামে আরো ৩৪টি মামলা আছে৷ এরমধ্যে ১৯টি মামলা বিচারাধীন, তদন্ত চলছে ১২টি মামলার এবং আদালতের নির্দেশে ৩টি মামলার কার্যক্রম স্থগিত আছে৷ বিচারাধীন ১৯টি মামলার মধ্যে ১৪টির বিচার কার্যক্রম রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশি বাজারের বিশেষ আদালতে পাঠানো হয়েছে৷
খালেদা জিয়ার আরেকজন আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘আমরা প্রতিমূহূর্তেই আশা করি ম্যাডাম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন,আইনি লড়াইও চালাচ্ছি৷ কিন্তু সরকার যেভাবে আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করছে তাতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে সরকার না চাইলে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন না৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘সরকার মামলাগুলো ঝুলিয়ে রাখবে৷ জামিন হতেও সময় লাগবে৷ তাই জামিন পেতে পেতে ম্যাডাম কবে মুক্তি পাবেন তা বলা সম্ভব নয়৷''