1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এলএনজি পেতে কাতার এনার্জির সঙ্গে চুক্তি

২ জুন ২০২৩

কাতার থেকে বছরে এক দশমিক আট মিলিয়ন মেট্রিক টন (এমএমটি) করে ১৫ বছর পর্যন্ত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সই হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/4S6eS
কাতারের একটি এলপিজি ট্যাঙ্কার (ফাইল ছবি)
কাতারের একটি এলপিজি ট্যাঙ্কার (ফাইল ছবি)ছবি: picture-alliance/AP Photo/T. Muranski

চুক্তি অনুসারে, বাংলাদেশ প্রতি বছর অতিরিক্ত এক দশমিক আট এমএমটি এলএনজি পাবে৷ গ্যাস সরবরাহ ২০২৬ সালে শুরু হবে৷

বৃহস্পতিবার দোহায় কাতার এনার্জির সদরদপ্তরে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি বিক্রয় ও ক্রয় চুক্তিটি সই হয়৷ এতে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) পক্ষে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার এবং কাতার এনার্জির এলএনজি ট্রেডিং শাখার পক্ষে কাতার এনার্জির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ আহমেদ আল-হুসাইনি চুক্তিতে সই করেন৷

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং কাতারের জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও কাতার এনার্জির প্রেসিডেন্ট ও সিইও সাদ শেরিদা আল-কাবি চুক্তি সই অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন৷

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ কাতারকে ধন্যবাদ জানান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি কাতারের এই সহায়তা আমাদের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে৷ রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বিশ্ব জ্বালানি সংকটের সম্মুখীন৷ আমরা জ্বালানি চাহিদা পূরণের মাধ্যমে আসন্ন চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে পারব বলে আশা করি৷’’

তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান৷ নসরুল হামিদ কাতারের জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, কাতার এনার্জির প্রেসিডেন্ট ও সিইও সাদ শেরিদা আল-কাবিকে অতিরিক্ত এক দশমিক আট এমটিপিএ এলএনজি এসপিএ সই অব্যাহত সহায়তার জন্য তাঁর বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন৷

তিনি আরও বলেন, ‘‘এটি প্রকৃতপক্ষে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, মূল্যবোধ, অভিন্ন ধর্মীয় ভিত্তি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ভিত্তিতে দীর্ঘদিনের দ্বিপক্ষীয় বন্ধনে যুক্ত দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে জোরালো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরেকটি মাইলফলক৷’’

বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের বর্তমান প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানির চাহিদাও দ্রুত বাড়ছে৷ বর্তমান বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫,২৮৪ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে৷’’

সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে৷ সারা দেশে বিদ্যুৎ কাভারেজ ১০০ শতাংশে পৌঁছেছে৷ বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে৷ তুলনামূলকভাবে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির উৎস হিসেবে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে এলএনজি একটি অগ্রাধিকার৷ এলএনজি আমদানি সারা দেশে স্থাপিত জাতীয় গ্যাস গ্রিড নেটওয়ার্ক পূরণে সহায়তা করবে৷

কাতারের জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, কাতার এনার্জির প্রেসিডেন্ট ও সিইও সাদ শেরিদা আল-কাবি৷
কাতারের জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, কাতার এনার্জির প্রেসিডেন্ট ও সিইও সাদ শেরিদা আল-কাবি৷ছবি: Ivan Pisarenko/AFP/Getty Images

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বক্তব্যে কাতারের জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, কাতার এনার্জির প্রেসিডেন্ট ও সিইও সাদ শেরিদা আল-কাবি বলেন, ‘‘আজকে আমরা বাংলাদেশ ও পেট্রোবাংলাকে সবচেয়ে বড় এলএনজি সরবরাহকারী হিসেবে আমরা গর্বিত৷ কাতার থেকে বাংলাদেশে প্রতি বছর তিন দশমিক পাঁচ মিলিয়ন টনের বেশি এলএনজি পাবে৷ এই সরবরাহ বাংলাদেশের মতো মূল্যবান গ্রাহকদের জ্বালানি নিরাপত্তা রক্ষায় এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য তাদের প্রয়োজনীয় নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহে আমাদের অবিচল আত্মনিবেদনকে জোরদার করে৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি বিজ্ঞ নেতৃত্ব এবং জ্বালানি খাতে তার অব্যাহত দিকনির্দেশনার জন্য মহামান্য আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানির প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই৷’’

এক প্রশ্নের জবাবে আল-কাবি বলেন, ‘‘কাতার কখনো চুক্তি ভঙ্গ করেনি৷ বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা যে চুক্তিই করেছি, তা কখনো ভাঙব না৷’’ তিনি আরও বলেন, এই নতুন এসপিএ'র মাধ্যমে কাতার এনার্জি দক্ষিণ এশিয়ার এলএনজি বাজারে তার অংশীদারদের জন্য পছন্দের এলএনজি সরবরাহকারী হিসেবে তার অবস্থান পুনঃনিশ্চিত করেছে৷ কাতার বর্তমানে বাংলাদেশে বছরে সাড়ে তিন মিলিয়ন টনের বেশি এলএনজি সরবরাহ করে৷

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে ১.৮-২.৫ এমটিপিএ এলএনজি সরবরাহে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি ১৫ বছরমেয়াদি এলএনজি এসপিএ চুক্তি রয়েছে যা ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ এ স্বাক্ষরিত হয়৷ ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ তারিখে ডেলিভারি শুরুর পর থেকে ৩১ মে, ২০২২ পর্যন্ত পেট্রোবাংলা ১৯১টি এলএনজি কার্গোর মাধ্যমে সফলভাবে ১১ দশমিক ৭৪৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন এলএনজি পেয়েছে৷

জেকে/এসিবি ( দ্য ডেইলি স্টার)