উৎসবেও বিক্ষোভকারীদের দিন কাটে রাস্তায়
দিন আসে, দিন যায়। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাদের জীবনে উৎসবের স্থান সীমীত। বিক্ষোভস্থলে বসেই পুজোর দিন কেটে যায়।
বিক্ষোভের মাধ্যমেই পুজো কাটে
প্রায় তিন বছর ধরে তারা রাস্তায়। শিক্ষক হওয়ার পরীক্ষায় পাস করার পরেও তারা কেউ চাকরি পাননি। অভিযোগ, দুর্নীতি করে অন্যরা কম নম্বর পেয়েও চাকরি পেয়ে গেছে। তারা এখন 'কেয়ার অফ রাস্তা'। বিক্ষোভ দেখিয়েই দিন কাটছে। এবারের দুর্গাপুজোও তাদের কেটে গেল বিক্ষোভ দেখিয়েই।
পুজোর দিনেও
পুজোর দিনেও বসে তারা পোস্টার লিখেছেন। লিখেছেন, কত দিন ধরে তারা এখানে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। দশমীর দিন বসে বসে পোস্টারে সেটাই লিখছিলেন এক বিক্ষোভকারী, তাদের বিক্ষোভ ৯৫৪ দিনে পড়লো।
বিক্ষোভস্থলে দুর্গার ছবি
এবার বিক্ষোভস্থলে দুর্গার ছবি নিয়ে এসেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। সেখানেই তারা প্রণাম জানিয়েছেন। আর বিষণ্ণ মনে বিক্ষোভ দেখিয়ে গেছেন এই আশা নিয়ে যে, কোনো একদিন তারাও ন্যায় পাবেন। চাকরি পাবেন।
শিউলি ফুলের অঞ্জলি
বিক্ষোভকারীরাই নিয়ে এসেছিলেন শিউলি ফুল। সেই ফুল হাতে নিয়েই দুর্গার ছবির সামনে দাঁড়িয়ে পড়লেন। সেই ফুল রাখলেন ছবির সামনে। সেই সঙ্গে ন্যায় পাওয়ার প্রার্থনাও করলেন।
মালা বানাচ্ছেন কেউ
কিছু বিক্ষোভকারী মালা তৈরি করেছিলেন। সেই মালা বিজয়া দশমীর দিন তারা পরিয়ে দিলেন মূর্তিতে। এভাবেই পূজোর দিনগুলো কাটলো তাদের।
ডিএ-র দাবিতেও আন্দোলন চলছে
শুধু চাকরিপ্রার্থীরাই নয়, ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করছেন সরকারি কর্মীরা। তারাও পুজোর দিনগুলি কাটিয়েছেন রাস্তায় বিক্ষোভ দেখিয়ে। উৎসব তাদের কাছে আর রঙিন নয়। তাদের বক্তব্য, আন্দোলনের পথ কঠিন। সেই পথে থাকতে গেলে ধৈর্য দরকার।
কেন উৎসবেও আন্দোলনে?
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, আন্দোলন একবার শুরু করলে তা আর মাঝপথে ছেড়ে দেয়া যায় না। তখন উৎসবের দিনেও বিক্ষোভ বন্ধ রাখা যায় না। রাস্তায় একবার নেমে পড়লে সেখানে থাকতে হয়। সেজন্যই দুর্গাপুজোয় যখন সকলে মেতে উঠেছে, তখন তারা বিক্ষোভ দেখিয়ে গিয়েছেন নিজেদের মতো করে।
তিন বছর ধরে এভাবেই
স্কুল সার্ভিস কমিশনে চাকরির পরীক্ষাতে পাস করেও নিয়োগ পাননি মারুফা বানু। ডিডাব্লিউকে তিনি বলেছেন, ''তিন বছর ধরে উৎসেবর মরশুম এভাবেই কাটছে। আমরা না ঘুরতে যেতে পারি। না আমরা নতুন পোশাক কিনি। আমাদের জীবনে উৎসবের কোনো রং নেই।''
'আনন্দ আসবে কী করে'
বিক্ষোভকারী দীপ্তি হালদারের বক্তব্য, ''পুজোর পাঁচ দিন নিরানন্দে কেটেছে। পরিবারের সঙ্গে ভালো করে পুজো দেখতে পারিনি। চাকরি থাকলে তবে তো আনন্দ করার কথা আসে। দুর্গাপুজোয় এটাই প্রার্থনা করি, আমাদের আর্থিক অবস্থা যেন ঠিক হয়। চাকরি যেন হয়।''
ইচ্ছেই নেই'
টেট পাস প্রার্থী, পিয়ালী প্রামাণিক জানিয়েছেন, ''আমাদের ইচ্ছেটাই চলে গেছে। আমাদের একটাই প্রার্থনা, একটাই প্রশ্ন, একটাই দাবি, আমাদের চাকরিতে নিয়োগ কবে হবে?''
এইভাবে কতদিন?
কতদিন এইভাবে বিক্ষোভ দেখাতে হবে, সেই প্রশ্নের কোনো জবাব নেই আন্দোলনকারীদের কাছে। আর কত বছর এইভাবে উৎসবের দিন ফুটপাথে বসে কাটাতে হবে, তাও তারা জানেন না।