দক্ষিণপন্থিদের পালে হাওয়া...
৩০ জানুয়ারি ২০১৬দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন শেষ হচ্ছে ও তার অব্যবহিত পরে ইউরোপ তথা জার্মানি এই ধরনের উদ্বাস্তু বা শরণার্থীর স্রোত দেখেছিল বটে৷ রিফিউজিদের প্রশ্নে ইউরোপ আজ দ্বিধাবিভক্ত: একদিকে জার্মানি বা সুইডেনের মতো দেশ, যারা উদ্বাস্তুদের নিচ্ছে; অপরদিকে হাঙ্গেরি বা পোল্যান্ডের মতো দেশ, যারা উদ্বাস্তুদের নিতে গররাজি – ব্রিটেনকেও যে দলে ফেলা যায়৷
কিন্তু গত কয়েক মাসে উদ্বাস্তু সংকট যত চরমে উঠেছে, ততই ইউরোপীয় রাজনীতির ধারা যেন ডানদিকে ঘুরেছে৷ জার্মানিতে দক্ষিণপন্থি মনোভাবের মানুষজন বলছেন, আঙ্গেলা ম্যার্কেল যদি তাঁর উদ্বাস্তুরা স্বাগতম নীতি না বদলান, তাহলে তাঁর চ্যান্সেলরশিপের এখানেই অন্ত ঘটতে পারে৷ আগামী প্রাদেশিক নির্বাচনগুলিতে ‘জার্মানির জন্য বিকল্প' নামধারী এএফডি দল, যারা অতিমাত্রায় উদ্বাস্তু ও বহিরাগত বিরোধী, তারা বিপুল ভোট সংগ্রহ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে – বিশেষ করে থার্টি ফার্স্ট নাইটে কোলনে যা ঘটেছে, তার পরে৷ ফ্রান্সেও আগামী বছরের রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচনে চরম দক্ষিণপন্থিদের ভালো ফলাফল করার সম্ভাবনা বাড়ছে৷
মার্কিন মুলুকে
সেখানেও রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে এগিয়ে, তিনি হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ তাঁর প্রচার অভিযান চলেছে মূলত বহিরাগত ও মুসলিম বিদ্বেষের উপর নির্ভর করে৷ এককালে যাকে ঝড়তি-পড়তি ক্যান্ডিডেটদের মধ্যে ধরা হচ্ছিল, এখন তিনি আগামী নভেম্বরে বাস্তবিক হোয়াইট হাউস জয় করবেন কিনা, তা ভবিষ্যদ্বাণী করার, অথবা না করার ক্ষমতা কারো নেই৷
মার্কিন মুলুকে ট্রাম্পের জয়যাত্রা ইউরোপের চরম দক্ষিণপন্থিদের উদ্বুদ্ধ করেছে ও করছে৷ যার ফলে আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ‘‘স্বাগতম'' সংস্কৃতি আজ ধুঁকছে৷ ইউরোপ তথা জার্মানির মানুষ চাইছে হয় নীতিবদল, নয়ত পালাবদলের পালা৷ অথচ সেই মানুষরাই ভুলে যাচ্ছে, যে সব কারণ থেকে এই উদ্বাস্তুর স্রোত ও তথাকথিত উদ্বাস্তু সংকটের সৃষ্টি, তার অনেকটাই ২০০১ সালে আফগানিস্তান অথবা ২০০৩ সালে ইরাক অভিযানের দরুণ৷ পশ্চিমের পক্ষে সেই দায়িত্ব ভুলে যাওয়া বা এড়িয়ে যাওয়া উচিত হবে না৷
বন্ধু, আপনি কি গ্রেহেম লুকাসের সঙ্গে একমত? জানান নীচের ঘরে৷