1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভাড়ার নামে লুটপাট

সমীর কুমার দে, ঢাকা২৪ জুলাই ২০১৪

প্রতি বছর ঈদের সময় ঘরে ফেরা মানুষদের নানামুখী দুর্ভোগে পড়তে হয়৷ ট্রেন ও বাসে টিকিট না পাওয়ার সমস্যা তো আছেই৷ অনেক সময় টিকিট চলে যায় কালোবাজারিদের কাছে৷ যাদের ভাগ্যে এই টিকিট মেলে, তাদের গুনতে হয় অতিরিক্ত অর্থ৷

https://p.dw.com/p/1ChCj
Opferfest Eid Al-Adha in der moslemischen Welt Bangladesch
ছবি: Reuters

যাত্রীদের কাছ থেকে এই বাড়তি ভাড়া আদায় নিয়ে একটা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি' নামে একটি সংগঠন৷ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়৷ সেখানে বলা হয়েছে, ঈদে সড়ক, রেল, নৌপথের যাত্রীদের কাছে থেকে ১০ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে৷ আর আদায় করা অতিরিক্ত অর্থের একটি বিশাল অংশ রাজনীতি ও প্রশাসনের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা লুটপাট করছে৷ যাত্রীদের স্বার্থ এখানে উপেক্ষিত হলেও সরকার কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না৷ সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংগঠনের সভাপতি শরিফ রফিকুজ্জামান, মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রুমি ও নির্বাহী সদস্য কাজী আমিনুল্লাহ মাহফুজ৷

Bangladesch Eid al-Fitr Ramadan Ende Flash-Galerie
৮০ শতাংশ যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া গুনে বাড়ি ফিরছেছবি: dapd

সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী সাংবাদিক সম্মেলনের পর ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে ২৫ রমজান থেকে ঈদের পর দশ দিন পর্যন্ত সড়ক পথে ৬ হাজার কোটি টাকা, নৌপথে ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে৷ আর রেলপথে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে ট্রেনের আগাম টিকিট হাতিয়ে নিয়ে চিহ্নিত কালোবাজারিরা একই সময় প্রায় ৭৭৫ কোটি টাকারও বেশি লুট করছে৷ যাত্রীরা অসহায়ের মতো বাধ্য হয়ে টাকা দিয়ে যাচ্ছেন৷

মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, সারা দেশে যানজট ও সড়কের বেহাল দশার কারণে যাত্রীরা নৌপথের উপর এবার বেশী নির্ভরশীল৷ নৌপথে এবার ঈদে এক কোটিরও বেশি যাত্রী যাতায়াত করবে৷ কিন্তু তার মধ্যে ৮০ শতাংশ যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া গুনে বাড়ি ফিরছে৷ এছাড়া রেলপথে প্রতিদিন ৭৬টি আন্তঃনগর, ৬২ টি মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন, ৯৫টি লোকাল ট্রেনে প্রতিদিন গড়ে ২ লাখ যাত্রী বহন করা হয়৷ এর মধ্যে ৪৮ শতাংশ যাত্রী কালোবাজারির কাছ থেকে চড়া দামে টিকিট সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছে৷ সবার যোগসাজসে এই টিকিট কালোবাজারিদের কাছে যায়৷

কীসের ভিত্তিতে তাদের এই হিসেব এমন প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ১৫ রমজানের পর থেকে তাদের সংগঠনের সদস্যরা মাঠে থাকেন৷ বাস টার্মিনাল, ট্রেন স্টেশন ও সদরঘাটে নৌ টার্মিনাল থেকে তাঁরা তথ্য সংগ্রহ করেন৷ প্রতিদিন পাওয়া কিছু কিছু তথ্য যোগ করার পর গড় করেই এই পরিসংখ্যান বের করা হয়েছে৷ এটা কিছুটা এদিক-সেদিক হতে পারে বলে স্বীকার করেন তিনি৷ কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের ভাড়া পরিবহন ভেদে ৮০০ থেকে ১৫০০, ১ হাজার থেকে ১৬০০, ১২০০ থেকে দুই হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে৷ কয়েকটি পরিবহনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরা অনেক বেশি ভাড়া আদায় করছে৷

এবার লঞ্চে সবচেয়ে বেশী নৈরাজ্য হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে বরিশাল যেতে ১,২০০ টাকার কেবিন নেয়া হচ্ছে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত৷ আর ট্রেনের ৮০০ টাকার টিকিট নেয়া হচ্ছে দেড় হাজার টাকা৷ কালোবাজারিরা আরো বেশী নিচ্ছে৷ এ থেকে উত্তরণের কয়েকটি সুপারিশ করে তিনি বলেন, গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়ানো, মনিটরিং টিমে যাত্রীদের প্রতিনিধি রাখা, শাস্তির ব্যবস্থা, টিকিটের গায়ে দূরত্ব ও ভাড়ার অঙ্ক লিখে দিলে হয়রানি অনেকটা কমতে পারে৷ তিনি বলেন, গত বছরও তারা রিপোর্ট তৈরি করে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছিলেন৷ এবারও জমা দেয়া হবে৷ তবে গত বছর তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর মন্ত্রণালয় থেকে আলোচনার জন্য ডাকাই হয়নি৷ তিনি বলেন, আলোচনা করলে অনেক সমস্যারই সমাধান সম্ভব৷

রাস্তার বেহাল দশার ব্যাপারে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, তড়িঘড়ি করে রাস্তা সংস্কারের যে উদ্যোগ নেয়া হয় তাতে কাজের কাজ কিছুই হয় না৷ শুধু অর্থের অপচয় হয়৷ রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়৷ তিনি বলেন, ৬ মাস আগে থেকে উদ্যোগ নিলে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হতো না৷ তিনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেন, এই ঈদের পর থেকেই রাস্তার সংস্কার শুরু করা হলে আগামী কোরবানি ঈদে নির্বিঘ্নে যাত্রীরা দেশের বাড়িতে ঈদ করতে যেতে পারবেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য