ইরানের সঙ্গে আলোচনা
৭ জুলাই ২০১৫রুশ দৈনিক ‘কমার্সান্ট' মঙ্গলবার লেখে: ‘‘আলাপ-আলোচনায় বিশেষ আশাবাদিতা দেখা যাচ্ছে না৷ আলাপ-আলোচনা ৯ই জুলাই অবধিও চলতে পারে৷ প্রায় সাত-আটটি বিষয় এখনও অমীমাংসিত৷ প্রস্তুত করা খসড়াগুলো বারংবার সংশোধন করা হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে রাশিয়ার মূল স্বার্থ হলো, ইরানকে অস্ত্রসরবরাহের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে কিনা৷ কিন্তু সেটাও এখনো নিশ্চিত নয়৷''
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সোমবার ভিয়েনায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহম্মদ জাভাদ জরিফের সঙ্গে একটি বৈঠকের পর বলেন, আলাপ-আলোচনা ‘‘যে কোনো দিকে'', অর্থাৎ ভালো কিংবা মন্দের দিকে যেতে পারে৷ কেরি বলেন: ‘‘সবচেয়ে কঠিন বিষয়গুলির মধ্যে একাধিক ক্ষেত্রে আমাদের যতদূর এগোনোর কথা ছিল, আমরা ততদূর এগোতে পারিনি৷'' সোমবারের ‘ওয়াশিংটন পোস্ট' যোগ করছে: ‘‘এতদূর এগোনোর পর ব্যর্থ হওয়ার কোনো প্রশ্ন ওঠে না – সাধারণভাবে সকলের এই ধারণা হলেও, কূটনীতিকরা কিন্তু বার বার সতর্ক করে দিয়েছেন যে, তারা অসফল হতে পারেন৷''
মন্দের ভালো
ইরান আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ-র পরিদর্শকদের কতটা পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেবে, সেটাকে একটা বড় বাধা বলে গণ্য করছিলেন কূটনীতিকরা৷ গত শুক্রবার পর্যন্ত ইরান আইএইএ-র পেশ করা বারোটি প্রশ্নের মধ্যে মাত্র দু'টিতে সহযোগিতার মনোভাব প্রদর্শন করেছে – লিখছিল জার্মানির স্যুডডয়চে সাইটুং৷ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেই ‘‘সব ধরনের অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন''; অপরদিকে পশ্চিমি প্রতিনিধিদের দাবি হলো, আইএইএ-কে ‘‘সর্বদা তথা সর্বত্র'' পরিদর্শনের অধিকার দিতে হবে৷
একসপ্তাহ আগেও নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর টমাস এল ফ্রিডম্যান একটি ‘‘ভালো গোছের খারাপ চুক্তি'' প্রত্যাশা করছিলেন৷ তাঁর মতে খসড়া চুক্তিতে দেখা যাচ্ছে, খামেনেই ইরানের বুনিয়াদি পারমাণবিক কাঠামো বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছেন – যদিও কিছুটা কাটছাঁট সহ৷ অপরদিকে খামেনেই বারংবার জানিয়েছেন যে, ইরান তার সামরিক স্থাপনাগুলি পরিদর্শনের অনুমতি দেবে না৷
ফ্রিডম্যানের চোখের সামনে ভাসছে অদ্ভুত দৃশ্যটি: গোলটেবিলে আলাপ-আলোচনা চলেছে; একদিকে ইরান, অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ব্রিটেন৷ ওদিকে ইরানের হাতের তাস খারাপ হলেও, ইরান দারুণ খেলছে৷ কাজেই ফ্রিডম্যানের ব্যঙ্গপূর্ণ মন্তব্য: ‘‘আমার বাড়ি বিক্রির জন্য আমি খামেনেইকেই ভাড়া করবো৷''
টুইটারে
জুলিয়ান মায়ার টুইট করেছেন: ‘‘প্রতিনিধিরা ইরান চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য ‘ঘড়ি বন্ধ করে রাখতে পারেন''৷
রাজেশ রাজাগোপালন-এর টুইট: ‘‘এর অর্থ সম্ভবত এই যে, কেরি এত কিছু ছাড় দিয়েছেন যে, তেহরানকে নতুন দাবি তুলতে হচ্ছে৷ ইরান চায় অস্ত্র সরবরাহের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হোক৷''
জেরেমি ডায়মন্ড-এর টুইট: ‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি ইরানের সঙ্গে একটি বাজে চুক্তি করছে?''
সংকলন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ