ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি
৭ জুলাই ২০১৫প্রশ্নটা পরমাণু কর্মসূচিকে নিয়ে৷ ইরানের সঙ্গে বিশ্বের ৬ প্রধান শক্তি যদি আপোশ মীমাংসায় আসতে পারে, সেটা হবে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা৷ আশার কথা, সব পক্ষই ধৈর্য ধরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে৷ তাদের স্থির করা মেয়াদ বার বার পেরিয়ে গেলেও সংলাপ থেমে থাকছে না৷ সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আলোচনা চালিয়ে গেছেন৷ রবিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহম্মদ জাভাদ জরিফকে পরোক্ষভাবে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, আলোচনার গতি যে কোনো দিকে যেতে পারে৷ অর্থাৎ যে কোনো মূল্যে চুক্তি হাসিল করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই – এমনটাই ইঙ্গিত করেছেন কেরি৷
গত এপ্রিল মাসে এক চুক্তির কাঠামো স্থির হবার পর প্রথমে স্থির হয়েছিল, ৩০শে জুনের মধ্যে ফয়সালা করতে হবে৷ তারপর মেয়াদ বাড়িয়ে স্থির হলো ৭ই জুলাই চূড়ান্ত বোঝাপড়া হবে৷ তবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, মঙ্গলবার মোটেই কোনো ‘ডেডলাইন' নয়৷ তাঁর মতে, এক্ষেত্রে সময়টা মূল বিষয় নয়, সঠিক বোঝাপড়াই আসল লক্ষ্য৷ অর্থাৎ ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না – এ বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে চায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য ও জার্মানি৷এর বদলে ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে৷ মৌলিক বিষয়গুলিতে ইরান ও ৬টি দেশের মধ্যে মোটামুটি ঐকমত্যের খবর পাওয়া গেলেও অনেক খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে বিরোধ এখনো মিটছে না৷ যেমন ইরান ভবিষ্যতে অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রেও জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা মেনে নিতে নারাজ৷ মার্কিন প্রশাসন চায়, পারস্পরিক আস্থা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধাপে ধাপে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক৷ অন্যদিকে ইরান সব প্রশ্নে এখনই স্পষ্ট বোঝাপড়া চায়৷
ভিয়েনায় আলোচনার পাশাপাশি কিছু পদক্ষেপও লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান ইউকিয়া আমানো গত সপ্তাহে তেহরান সফরে গিয়েছিলেন৷ সোমবার আইএইএ-র এক বিশেষজ্ঞ দল ইরানে পৌঁছেছে৷
এদিকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে চূড়ান্ত বোঝাপড়ার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরির উপর চাপ বাড়ছে৷ কারণ নতুন একটি আইন অনুযায়ী, ৯ই জুলাইয়ের পর চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে মার্কিন কংগ্রেস সেটি যাচাই করতে ৬০ দিন সময় পাবে৷ তার আগে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে সেই মেয়াদ হবে ৩০ দিন৷ উল্লেখ্য, কংগ্রেসে বিরোধী রিপাবলিকান দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে৷
ইরানের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত বোঝাপড়া হলে মার্কিন-ইরান সম্পর্কও স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে৷ ইসরায়েল ও পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের অনেক দেশই এই বাস্তব মেনে নিতে এখনো প্রস্তুত নয়৷ ফলে ইরানের সঙ্গে বোঝাপড়ার পথে একাধিক বাধা কাজ করছে৷
এসবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)