ইরানের প্রতি হুমকি
৯ মার্চ ২০১২ইরানের দিকে বিরাট এক হুমকি ছুঁড়ে দিলো পেন্টাগন৷ মার্কিন বিমান বাহিনীর উপ-প্রধান হার্বাট কার্লাইল বৃহস্পতিবার বলেছেন, মাটির নীচে দু'শো ফুট গভীর পর্যন্ত ক্ষত তৈরি করতে পারার মতো সর্বাধুনিক বোমা তাদের কাছে মজুদ রয়েছে৷ তাই, সোজা কথায়, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাজ বন্ধ না করলে প্রয়োজনে এই বোমা মারতেও দ্বিধা করবে না পেন্টাগন৷
গত বছর থেকে আধুনিক এই বোমা যোগ হয়েছে মার্কিন সেনা দপ্তরে৷ ভয়ানক এ বোমাটিকে আরো বেশি উন্নত ও আরো বেশি বিধ্বংসী করার জন্য বর্তমানে ব্যাপক গবেষণা চলছে বলেও জানিয়েছেন হার্বাট কার্লাইল৷
ইরানে পরমানু অস্ত্র নির্মাণ কাজ চলছে বলে দীর্ঘ দিন ধরেই সন্দেহ করে আসছে অ্যামেরিকা ও তার মিত্র দেশগুলো৷ সেই সন্দেহের প্রেক্ষিতেই, মানব বিধ্বংসী পরমাণু অস্ত্র নির্মাণ থেকে সরে আসার জন্য ইরানকে আহ্বান করা হয়৷ কিন্তু আহ্বান ও আলোচনা - কোনোটাতেই কোনো ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে, ইরানের প্রতি আরো বেশি কঠোর হয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব৷ দেশটির উপর জারি করা হয়েছে একের পর এক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা৷
এতো নিষেধাজ্ঞার পরেও তেহরান যখন পশ্চিমা বিশ্বের কথায় কোনো কানই দিচ্ছে না, তখন কিছু দিন আগে ইসারায়েল জানায়, পরমাণু কর্মসূচী থেকে ইরানকে নিরস্ত করতে যে কোনো সময় দেশটিতে হামলা করতে প্রস্তুত তারা৷
ইসরায়েলের যখন ছিলো এমন যুদ্ধংদেহী মনোভাব, তখন সেখানে খানিকটা শান্তির বাণী শুনিয়েছিলেন বারাক ওবাম৷ ওবামা বলেছিলেন, এখনো আলোচনার সুযোগ আছে৷ অর্থাৎ বুঝিয়ে-শুনিয়ে ইরানকে সামলানো যেতে পারে বলে একটা আশা তখনো ওবামার ছিলো৷
হামলা বা আক্রমণ বা যুদ্ধ, যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন, মোট কথা রক্তারক্তি আর শক্তিক্ষয়ের পথটিকে এড়িয়ে এখনো গণতান্ত্রিক আলাচনার কথাই অবশ্য বলছেন মার্কিন প্রেসিপেন্ট৷ কিন্তু ওবামার ‘নরম' কথার উল্টোপিঠে পেন্টাগন জানিয়ে দিলো, তারা প্রস্তুত৷ পাহাড়ের তলদেশে বা মাটির গহিনে - যেখানেই ইরানের পরমাণু অস্ত্র নির্মাণ চলুক না কেন, একটা মাত্র বোমা মেরেই সব কিছু তছনছ করে দেয়া অ্যামেরিকার জন্য এখন নাকি মামুলি ব্যাপার৷
অ্যামেরিকান ন্যাশনাল জার্নালকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব লিওন প্যানেটা বলেছেন, ‘‘ইরানের পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে সারা দুনিয়াই আজ উদ্বিগ্ন৷ কিন্তু দেশটি পরমাণু অস্ত্রের অভিযোগকে এখনো পর্যন্ত নাকচ করে আসছে৷''
প্যানেটা আরো বলেন, ‘‘আলোচনায় কাজ হচ্ছে না দেখে এখন শক্তি প্রয়োগের কথা ভাবছে ইসরায়েল৷ যদি ব্যাপারটা তাই হয়, তবে এর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বিশ্বে৷ কিন্তু যদি অ্যামেরিকা শেষ পর্যন্ত এই বিধ্বংসী বোমাটি মারে তাহলে এটির প্রভাব হবে ভয়াবহ৷''
পেন্টাগনের এ হুমকির পর এখনো পর্যন্ত ইরানের পক্ষ থেকে কোনো জওয়াব পাওয়া যায় নি৷ তাই এখনো বোঝা যাচ্ছে না, ঘটনাটা আসলে কোন দিকে গড়াচ্ছে৷
প্রতিবদেন: আফরোজা সোমা
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ