তেল রপ্তানি বন্ধের হুমকি
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১২বিশ্বের পারমাণবিক কর্মকাণ্ডের উপর নজরদারি সংস্থা আইএইএ বিশেষজ্ঞ দল এক মাসের মধ্যেই দ্বিতীয় দফায় ইরান সফর শুরু করেছে সোমবার৷ এবারের সফরে ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের সাথে সাক্ষাৎ এবং দেশটির একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনা পরিদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিনিধি দলটির৷ জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রতিনিধি দলের প্রধান হ্যারম্যান নাকার্টস তেহরানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করার আগে ভিয়েনায় বলেন, ইরানের সাথে আলোচনায় অগ্রগতির ব্যাপারে তিনি আশাবাদী৷ তবে তাঁর এমন সতর্কতামূলক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সাফল্যের ব্যাপারে খুব একটা আশা করা যায় না বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা৷
সোমবার ইরানের রাষ্ট্রীয় বেতারে বলা হয়েছে, আইএইএ পরিদর্শকরা ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের সাথে আলোচনা করতে চান৷ এছাড়া রাজধানী তেহরানের বাইরে প্রধান গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি ও অস্ত্র উন্নয়ন কেন্দ্র পার্চিন সামরিক স্থাপনা পরিদর্শন করতে চান প্রতিনিধিরা৷ পশ্চিমা গোষ্ঠীর সন্দেহ, এই পার্চিন সামরিক ঘাঁটিতে গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে ইরান৷ কিন্তু ইরান সরকার এ সন্দেহ ও অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে৷
আইএইএ পরিদর্শকরা সর্বশেষ ২০০৫ সালে এই পার্চিন সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শন করেছিলেন৷ তবে সেসময় পার্চিনের চারটি সন্দেহজনক এলাকার মধ্যে মাত্র একটি ঘুরে দেখেছিলেন তাঁরা৷ তখন সেখানে তাঁরা সন্দেহজনক কোন কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করেননি৷ কিন্তু গত বছর এক প্রতিবেদনে পার্চিনের কথা উল্লেখ করে আইএইএ৷ অবশ্য ইতিমধ্যে ইরান জানিয়েছে, তারা এখন নিজেরাই পরমাণু স্থাপনার জন্য জ্বালানি দণ্ড উৎপাদন করতে পারছে এবং তারা ২০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে৷ যদিও অস্ত্র তৈরির জন্য ৯০ শতাংশেরও বেশি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম দরকার৷
এদিকে, ইরানকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে ফেরাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ পশ্চিমা গোষ্ঠী যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তার কড়া জবাব দেওয়া শুরু করেছে তেহরান৷ ইরানের তেল মন্ত্রী এবং রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানির প্রধান আহমাদ কালেবানি রবিবার জানিয়েছেন যে, ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে তারা ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যে তেল রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে৷ একইসাথে কালেবানি আরো হুমকি দিয়েছে যে, ইইউ এমন ‘শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড' চালিয়ে গেলে স্পেন, গ্রিস, ইটালি, পর্তুগাল, জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডস-এও তেল রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া হবে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন